পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট নিজের মধ্যে অনেক রহস্য লুকিয়ে রেখেছে। শত শত পর্বতারোহী এই পর্বতশৃঙ্গ জয় করলেও এর মধ্যে অনেকেই খুব ভাল অভিজ্ঞতা ছিল, আবার কারও খুব ভয়ঙ্কর ছিল।
সেই সঙ্গে রাতের এভারেস্ট থেকে ক্রমাগত অত্যন্ত ভয়ঙ্কর শব্দ হওয়ার কথাও সামনে আসছিল। যার রহস্যের সমাধান করতেই বিজ্ঞানীরা এই সর্বোচ্চ শৃঙ্গে অভিযানের সিদ্ধান্ত করেছিলেন।
আসলে পর্বতারোহীরা ক্রমাগত দাবি করে আসছিলেন, যে এভারেস্টে সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে ভয়ঙ্কর শব্দ আসতে শুরু করে। এই কণ্ঠস্বর বিভিন্ন ধরনের।
এই আওয়াজ রাতের অন্ধকারে ভীতি তৈরী করে। এই আওয়াজে ভয় পেয়েছেন দুঁদে পর্বতারোহীরাও। কখনও কখনও আওয়াজ এত বিপজ্জনক যে পর্বতারোহীরা রাতে ঘুমাতেও পারেন না।
ডেভ হ্যানের মতে, (যিনি ১৫ বার এভারেস্টে উঠেছেন), এই শব্দটি এভারেস্ট থেকে অনেক দূরে শোনা যায়। এটা একটা অদ্ভুত ধরনের আওয়াজ। কখনও কখনও নতুন পর্বতারোহীরা এই আওয়াজ শুনে ভয় পায়, কারণ তারা এই ধরনের শব্দ শুনতে অভ্যস্ত নয়। তবে এবার এই রহস্যের উন্মোচন করলেন বিজ্ঞানীরা।
এভারেস্টে সব সময় জোড়ে বাতাস বইতে থাকে, যার কারণে দিনে স্বাভাবিক শব্দ আসে, কিন্তু রাতে অদ্ভুত শব্দ বের হয়। বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধানে পেয়েছেন যে এই শব্দের পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হল তাপমাত্রার দ্রুত কমে যাওয়া।
তাদের মতে, সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে উপস্থিত হিমবাহগুলো ভাঙতে শুরু করে। তাদের ভিতরে কিছু অভ্যন্তরীণ ফাটলের শব্দে এই ধরনের বিকট শব্দ শোনা যায় বলে অনুমান।
গ্ল্যাসিওলজিস্ট ইভজেনি পোডলস্কির নেতৃত্বে একটি দল ২০১৮ সালে এটি বিস্তারিতভাবে অধ্যয়ন করেছিল। তিনি সেখানে ভূমিকম্পের কার্যক্রম রেকর্ড করেন। এর পরে, এতে শোনা কণ্ঠগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছিল।
তদন্তে স্পষ্ট হয়ে গেছে, তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণেই এসব শব্দ আসে। সেখানে প্রবল বাতাস বইতে থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এই কারণেই রাতের এভারেস্ট রূপ এক ভয়ঙ্কর মায়াবী রূপ নেয়, যারা এই দৃশ্য চাক্ষুশ করেছেন তারাই এই রূপের নেশায় সেখানে বারবার ছুটে যেতে চান।