Rabindranath Tagore Death Anniversary: জীবনের শেষ দিনগুলো কিভাবে কাটাতে চেয়েছিলেন বিশ্বকবি

সেই দিনটা ছিল ৭ আগস্ট বাংলায় ২২ শ্রাবণ বিকেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাংলার ইতিহাসে এক চরম শোকের দিন।

বললে ভুল হবে না বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন একজন মানুষ ছিলেন, যিনি প্রকৃতির মাঝে থাকতে পছন্দ করতেন। যার সাক্ষ্য পাওয়া যায় তার সৃষ্টি থেকে। কবিতা হোক বা গল্প হোক বা চিত্রকলা, কোথাও না কোথাও প্রকৃতির সঙ্গে তার যোগসূত্র পাওয়া যায়। কিন্তু তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলিতে, বিশ্বকবিকে খুব অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল কারণ তাঁর জীবনের শেষ দিন থেকে তিন বছর আগে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু হয়েছিল। ৭ আগস্ট তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা জানার চেষ্টা করব তাঁর শেষ দিনগুলি কেমন ছিল এবং কীভাবে তিঁনি কাটাতে চেয়েছিলেন।

বহুমুখী প্রতিভা-

Latest Videos

একজন কবি, লেখক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, দার্শনিক, চিত্রকর, সমাজ সংস্কারক বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ভারত ও বাংলার বহু-প্রতিভাসম্পন্ন প্রতিভা। তিনি ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে মাকে হারিয়ে রবীন্দ্রনাথের বাবা ও পরিচারকাদের দ্বারা লালিত-পালিত হন। সেন্ট জেভিয়ার্সে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করে ব্যারিস্টার হওয়ার জন্য ইংল্যান্ডে যান এবং ডিগ্রি না নিয়েই ভারতে ফিরে আসেন।

কবিতা দিয়ে শুরু

বাংলার পাশাপাশি, রবীন্দ্রনাথ, যিনি ভারতীয় সংস্কৃতি, সঙ্গীত এবং শিল্পকে নতুন উচ্চতা প্রদান করেছিলেন, ৮ বছর বয়সে তাঁর প্রথম কবিতা লিখেছিলেন এবং ১৬ বছর বয়সে তাঁর কবিতার সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর ছোটগল্প দিয়ে শুরু হয় তার সাহিত্য যাত্রা। এছাড়াও তিনি তার জীবদ্দশায় অনেক উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, নাটক এবং হাজার হাজার গান লিখেছেন।

তাঁর লেখার খ্যাতি ইউরোপে পৌঁছেছিল

বিশ্বকবির অনেক সৃষ্টি বাংলা সাহিত্যকে নতুন উচ্চতা দিয়েছে, যার মধ্যে গীতাঞ্জলি, গোরা, ঘরে বাইরে -প্রভৃতি জনপ্রিয় ও বিখ্যাত। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি বেশিরভাগই তাঁর শ্লোক কবিতার জন্য পরিচিত, তিঁনি ইতিহাস, ভাষাতত্ত্ব এবং আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কিত বইও লিখেছেন। তাঁর কাজের খ্যাতি ইউরোপে পৌঁছেছিল এবং তিঁনি সাহিত্যের জন্য সেই যুগে নোবেল পুরস্কার পাওয়া প্রথম অ-ইউরোপীয় ছিলেন।

এছাড়াও সংগীত, ধর্ম, চিত্রকলায় আগ্রহী

সাহিত্য রচনা ছাড়াও, তিঁনি রচিত ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত-সহ ২২৩০টি গান রচনা করেছেন। তাঁর সঙ্গীতকে বলা হয় রবীন্দ্রসংগীত। বিজ্ঞান, ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা ও শিক্ষার প্রতিও তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। তাঁর শান্তিনিকেতনের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত শিক্ষা থেকে একেবারেই আলাদা বলে মনে করা হয়। চিত্রকলার প্রতি তাঁর আগ্রহ জীবনের শেষভাগে গভীর হয়।

মৃত্যুর চার বছর আগে স্বাস্থ্যের অবনতি শুরু হয়

১৯৩৭ সালের সেপ্টেম্বরে, ৭৬ বছর বয়সে, বিশ্বকবিবের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে। এরপর দুদিন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখনই তার কিডনি ও প্রোস্টেটে সমস্যা ধরা পড়ে। এগুলোর পাশাপাশি জ্বর, মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা এবং ক্ষুধামন্দার মতো সমস্যা ঘিরে ছিল। তাঁর চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল, তখন ডাক্তার নীলরতন সরকার তাঁকে পরীক্ষা করেন। এই রোগগুলি বিশ্বকবির কাছে কোনও ব্যাপার ছিল না, তিনি একটু ভাল লাগলেই লেখার কাজ শুরু করতেন।

স্বাস্থ্য খারাপ হয়েছে

বিশ্বকবি বিশ্বাস করতেন যে তিনি প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটালে তিনি আরও ভাল বোধ করবেন। তাই ১৯৪০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি শিলং-এ পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীর কাছে যান। কিন্তু সেখানে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তিনি শান্তিনিকেতনে ফিরে আসেন। ১৬ জুলাই ১৯৪১ সালে, তার ডাক্তার, প্রশান্ত চন্দ্র মোহলনোবিস, ডাঃ সত্য সভা মিত্র এবং ডাঃ অমিয় বসু তাকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তিনি প্রস্রাব করা বন্ধ করে দেন। ডাক্তার জানান তিনি ইউরেমিয়া ও অন্যান্য সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও তিনি প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।

ডাক্তার ললিত বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তাঁর করা হয়। কিন্তু তার পরেও তার অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এরপর ১৯৪১ সালের ৪ আগস্ট তার কিডনি সাড়া দিলেও ৬ আগস্ট তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। সেই দিনটা ছিল ৭ আগস্ট বাংলায় ২২ শ্রাবণ বিকেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাংলার ইতিহাসে এক চরম শোকের দিন। বিশ্বকবি একটি শান্তিপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যু চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মৃত্যুর সময় তিঁনি খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির মুক্ত ও শান্তির মাঝে থেকে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।

Share this article
click me!

Latest Videos

New Alipore-এ বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন! পুড়ে ছাই একাধিক ঝুপড়ি, আগুন নেভাতে মরিয়া দমকল
‘Mamata Banerjee আজ TMC-র মুখ্যমন্ত্রী আছেন কাল জামাতের মুখ্যমন্ত্রী হবেন’ বিস্ফোরক Sukanta Majumdar
Narendra Modi : 'কুয়েত যেন মিনি হিন্দুস্তান', কুয়েত সফরে এসে কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী?
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari