'ওয়ার্ল্ড মেনস্ট্রুয়েশন হাইজিন ডে' বা বিশ্ব রজঃ-স্বাস্থ্য দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠা প্রয়োজন বর্তমান আধুনিক সমাজে। ঋতুস্রাবের প্রতি সমাজের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি আধুনিকতার সঙ্গে বদলায়নি৷ এই একটি বিষয়ে আজও পরোক্ষভাবে কোথাও না কোথাও কুসংষ্কারাচ্ছন্ন বর্তমান উন্নত সমাজ। এখনও অধিকাংশ পরিবারের মেয়েরা ঋতুস্রাবের বিষয়ে পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে তাঁরা মোটেই স্বচ্ছন্দ নন৷ এমনকি বাবার সঙ্গেও নন৷ তবে সব ক্ষেত্রে আবার উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছে। যেখানে পুরুষেরাই মেয়েদের এই বিষয়ে সচেতন করতে এগিয়ে এসেছেন। তবে সেই সংখ্যাটা মোটের উপর খুব কম।
মনোবিদদের মতে, মেয়েদের ঋতুমতী হওয়াকে লুকানো বা লজ্জার বিষয় বলে ভাবার মূল দায় বাড়ির অন্য বয়স্ক মহিলাদের। কারণ বাড়ির এই বয়স্ক সদস্যরাই প্রথমবার পিরিয়ড শুরু হওয়ার পর মেয়েটিকে বলে বাড়ির ছেলেদের-কে বলতে না। বা এই বিষয়ে বাড়ির ছেলেদের থেকে বিষয়টি লুকিয়ে রাখা হয়, জানতে দেওয়া হয় না। এমন বেশ কিছু সচেতন বাবাও আছেন, যাঁরা কন্যার ঋতুমতী হওয়ার সময় বন্ধুর মতো পাশে থেকেছেন, মায়ের মতো বুঝিয়েছেন। যে এটি একদম স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। এতে ভয় বা লজ্জা পাওয়ার মত কোনও বিষয় নয়। এমনই একজন হলেন শোভন মুখার্জী। যিনি লকডাউন পিরিয়ডে বিভিন্ন এনজিওর সঙ্গে যুক্ত হয়ে সুন্দরবনের মত অঞ্চলে ত্রানের সঙ্গে মেয়েদের এই অতি প্রয়োজনীয় জিনিসটি পাঠিয়েছেন। এই বিষয়ে অন্যদের সচেতন করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন তিনি।
Posted by Sobhan Suvo Mukherjee on Thursday, 28 May 2020
তবে ভাবতে অবাক লাগে এই আমরাই আবার কামাক্ষ্য়ায় ধূমধামের সঙ্গে অম্বাবুচী উৎসব পালন করি। তবে বাড়ির মেয়েটির বেলায় এত লজ্জা কেন! এই বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করা মেয়েটিকে আমরা খারাপ নজরে কেন দেখি। 'মেয়েলি বিষয়' বলে প্রচুর মহিলা লজ্জায় এই সংক্রান্ত সমস্যায় চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে দ্বিধা বোধ করেন। তাই আজকের দিনটি ২৮ মে তারিখটি 'ওয়ার্ল্ড মেনস্ট্রূয়েশন হাইজিন ডে' পালন করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল। কারণ বেশিরভাগ মহিলার গড় মাসিক চক্র ২৮ দিন এবং বেশিরভাগ মহিলার ঋতুস্রাব পাঁচ দিনের জন্য হয়। সুতরাং, ২৮/৫ হিসাবে রাখা হয়েছে।
আর এই বছর বিশ্বজুড়ে মহামারীতে ভুগছে তাই এই বছর 'পিরিয়ডস ইন পেনডামিক' বলে আজকের দিনটিকে ব্যাখা করেছে ইউনিসেফ। সেই মত সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি পোস্টও করেছে। যাতে এই বিষয়ে শুধু মেয়েরাই নয় বরং ছেলেদেরও সমানভাবে জানা প্রয়োজন।