গন্ধর্ব বিবাহ: টিভি অভিনেত্রী টিনা দত্তের বিয়ের খবর গন্ধর্ব বিবাহ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এটি প্রাচীন প্রেম বিবাহ, যেখানে কোনও রীতিনীতি ছাড়াই প্রেমিক যুগল একে অপরকে স্বীকার করে নেয়। কিন্তু আজও কি এটি বৈধ?
টিভি অভিনেত্রী টিনা দত্তের বিয়েকে নিয়ে একসময় অনেক খবর এসেছিল। বলা হয়েছিল তিনি গন্ধর্ব বিবাহ করেছেন! আসলে এ কেমন ধরনের বিয়ে? গন্ধর্ব বিবাহ প্রাচীন হিন্দু সংস্কৃতি এবং ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত বিবাহের একটি প্রকার, যাকে আজকের সময়ে প্রেম বিবাহ (Love Marriage) বলা যেতে পারে। এই বিবাহ তখনই হয় যখন একজন পুরুষ এবং মহিলা পারস্পরিক প্রেম এবং আকর্ষণের ভিত্তিতে একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। তবে এতে বিবাহের জন্য কোনও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, সমাজের সম্মতি, বা ঐতিহ্যগত পদ্ধতির প্রয়োজন হয় না।
গন্ধর্ব বিবাহের ঐতিহাসিক পটভূমি
গন্ধর্ব বিবাহের উল্লেখ মহাভারত, রামায়ণ এবং মনুস্মৃতির মতো প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে পাওয়া যায়। গন্ধর্ব বিবাহ হিন্দু সমাজে স্বীকৃত ছিল, বিশেষ করে ক্ষত্রিয় সমাজে। এতে যুবক-যুবতীরা নিজের সঙ্গী নিজেরাই বেছে নিত এবং সমাজও একে স্বীকৃতি দিত, কারণ একে স্বাধীনতা এবং প্রেমের উপর ভিত্তি করে একটি বিবাহ হিসেবে দেখা হত। এই ধরনের বিবাহ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং রুক্মিণীর বিবাহে দেখা যায়, যেখানে রুক্মিণী নিজের ইচ্ছায় শ্রীকৃষ্ণকে বেছে নিয়েছিলেন।
গন্ধর্ব বিবাহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
গন্ধর্ব বিবাহ কীভাবে হয়?
গন্ধর্ব বিবাহে আনুষ্ঠানিক পদ্ধতির অনুপস্থিতির কারণে এর स्वरूप अनौपचारिक হয়। এটি কিছু সহজ পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।
পারস্পরিক সম্মতি: বর-কনে একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে।
প্রতিজ্ঞা বা সংকল্প: কখনও কখনও এই বিবাহ দুজন মানুষের মধ্যে কেবল তাদের প্রেম এবং বিশ্বাসের সংকল্প গ্রহণ করলেই সম্পন্ন বলে বিবেচিত হয়।
মালাবদল বা প্রতীকী আংটি বিনিময়: কিছু ক্ষেত্রে মালাবদল বা আংটি দিয়ে একে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
আধুনিক সময়ে গন্ধর্ব বিবাহ
আজকের সময়ে গন্ধর্ব বিবাহ প্রেম বিবাহ হিসেবে দেখা যায়, যেখানে প্রেম এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার উপর ভিত্তি করে বিবাহ সমাজে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আধুনিক সমাজে এই বিবাহ নিবন্ধন ছাড়া আইনি বৈধতা পায় না। তাই, যদি প্রেমিক যুগল একে আইনত বৈধতা দিতে চায়, তবে তারা বিশেষ বিবাহ আইন বা হিন্দু বিবাহ আইনের অধীনে এটি নিবন্ধন করতে পারে।
গন্ধর্ব বিবাহের গুরুত্ব
গন্ধর্ব বিবাহ স্বাধীনতা এবং ব্যক্তিগত পছন্দকে প্রাধান্য দেয়। এই বিবাহ প্রেমকে সমাজ এবং ঐতিহ্যের বন্ধন থেকে মুক্ত করার প্রতীক। এই বিবাহ সেই যুগের প্রতীক যখন সমাজ প্রেমকে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং মানুষকে নিজের পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছিল।