কলকাতার অদূরেই সপ্তাহান্তের ভ্রমণের সেরা ঠিকানা, হাতছানি দিচ্ছে 'ছবির দেশ' ছোট্ট গ্রাম জয়পুর

  • এই ছবির দেশে চলে যাওয়া যায়
  • বাড়ির দেওয়াল যেন আঁকার খাতার পাতা
  • চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন
  • দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসেন এখানে

Asianet News Bangla | Published : Oct 10, 2020 6:53 PM IST / Updated: Oct 11 2020, 12:05 PM IST

উত্তম দত্ত, হুগলি: গ্রাম তো নয় যেন জলছবি ! ছোট্ট গ্রাম জয়পুর । ভান্ডারহাটির মতো প্রাচীন জনপদ পেরিয়ে ডান দিকে মোড় নিলেই এই ছবির দেশে চলে যাওয়া যায় । হুগলি জেলার ধনিয়াখালি ব্লকের একটি প্রত্যন্ত এলাকা । গ্রামে ঢুকলেই যেন মন প্রশান্তিতে ভরে ওঠে।  প্রতিটা বাড়ির দেওয়াল যেন আঁকার খাতার পাতা।  গ্রামের প্রবেশ দ্বারে জয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয় । শুরু হয়েছে সেখান থেকেই। এ এক নয়নাভিরাম দৃশ্য । নিজে চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। 

এখানে এলেই চোখে পড়বে কোনও বাড়ির দেওয়ালে রাধাকৃষ্ণ বিরাজ করছেন , কোথাও আবার বাউল গান শোনাচ্ছেন।  কোথাও প্রাচ্য পাশ্চাত্যর মিলিত শিল্পকলা। কোথাও উঠে এসেছে আমাদের প্রিয় গ্রাম বাংলার ছবি। অ্যাবসট্রাক্ট , টেরাকোটা , জাং স্কপচার , মধুবনি সব কিছু এখানে মিলেমিশে একাকার । আসলে এই গ্রামেই থাকেন এমন একজন মানুষ যিনি গ্রাম বাংলার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আর্টের কাজ করে থাকেন, নাম অতনু ঘোষ। যদিও টাইটেল ব্যবহার করাটা তাঁর না পসন্দ। শুধু অতনু ইমেজ নামেই পরিচিত তিনি। 

মার্চের শেষের দিক থেকে যে লকডাউন শুরু হল, সেই সময় টাই ছিলো কাজের আদর্শ সময়। লকডাউনের দীর্ঘ সময়ে অতনু বাবু চিন্তা করেন এই সময় নিজের গ্রাম কে সাজিয়ে নিলে কেমন হয়? ছোট্ট গ্রামে শিল্পী হিসেবে সুপরিচিত অতনু। অবিবাহিত অতনু পেশায় একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক। ওরিয়েন্টাল আর্ট স্কুলে শেখা,  চিত্রকর হিরন মিত্রর শিষ্য অতনু, বাড়িতে বিনা বেতনে অসংখ্য ছাত্রকে আর্ট শেখান। এহেন অতনুর মনে হয়ে ছিল এই লকডাউনের সময়টাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়? অতনু বাবু জানান, তাঁর কাছে প্রচুর রঙ জমে গেছিলো , লকডাউনে বাইরে কোথাও কাজ নেই কাজেই রঙগুলো কিভাবে কাজে লাগাই? চিন্তা করতে করতেই তিনি ভাবেন গ্রাম টাকে সৌন্দর্য্যায়ন করলে কেমন হয়?

 প্রথমে প্রত্যেক বাড়িতে বলতেই তাঁরা তাঁদের বাইরের দেওয়ালে রঙ করতে স্বচ্ছন্দে অনুমতি দিয়ে দেন। আর টানা দু-মাস ধরে তিনি লেগে পড়েন গ্রাম-কে জলছবি দিয়ে গড়ে তুলতে। ৮ থেকে ৪৮ জন, কচিকাচা থেকে নব্য যুবক স্বতঃপবিত্র হয়ে তাঁর সঙ্গে কাজে লেগে যায়, সেই শুরু। বর্তমানে এই গ্রামটি দেখতেই দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন ছুটে আসেন। গ্রামের বাসিন্দারাও খুব খুশী অতনুবাবুর এই উদ্যোগে। গ্রামের সকলের নয়নের মনি অতনু। আগামীদিনে একটি পুকুরের ধারে লোহার রড বসিয়ে তার ওপর প্লাষ্টিকের বোতলের মধ্যে ফুলের গাছ বসিয়ে ঝুলন্ত উদ্যান করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। কিছু দেওয়ালে ম্যুরাল এর কাজ ও করবেন অতনু। ইচ্ছে থাকলে কি না করা যায়? তার আদর্শ উদাহরণ অতনু ইমেজ। তাই যাঁরা শিল্প ভালোবাসেন সপ্তাহান্তে এখানে একবারে স্বচক্ষে দেখে যেতেই পারেন এই গ্রাম।

Share this article
click me!