শাজাহান আলি, মেদিনীপুর: করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না তো? শ্বাসকষ্ট উপসর্গে বৃদ্ধের মৃত্যুর পর আতঙ্ক ছড়াল গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় কুড়ি ঘণ্টা ধরে দেহ পড়ে রইল বাড়িতে! শেষপর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে মৃতের শেষকৃত্য করলেন পরিবারের লোকেরা। অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়।
আরও পড়ুনL 'স্তম্ভিত, হতবাক ও আহত', কবি অংশুমান করের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ 'কৃত্তিবাস'-এর
মৃতের নাম অমিয় ভট্টাচার্য। বাড়ি, চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বসনছোড়া পঞ্চায়েতের ডালিমাবাড়ি গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে জ্বর ও পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রোগের কোনও চিকিৎসাই হয়নি। হাতুড়ে চিকিৎসককে দেখিয়ে কার্যত বাড়িতে ফেলে রাখা হয়েছিল অমিয়কে। সোমবার সকালে যখন আচমকাই প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, তখনই ঘটে বিপত্তি। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও, ওই বৃদ্ধকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। শেষপর্যন্ত বিকেলে বাড়িতেই মারা যান অমিয় ভট্টাচার্য।
এদিকে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মৃত্যু খবর চাউর হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা সাফ জানিয়ে দেন, করোনা পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত দেহ দাহ করা যাবে না। গ্রামবাসীরা নিজেরাই স্বাস্থ্য দপ্তরে খবরও দেন। কিন্তু প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। ফলে সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অমিয় ভট্টাচার্যের দেহ পড়ে থাকে বাড়িতে। কিন্তু এভাবে আর কতক্ষণই বা ফেলে রাখবেন! শেষপর্যন্ত পরিবারে লোকেরা দেহ নিয়ে শ্মশানে পৌঁছন, তখনও গ্রামবাসীরা সৎকার বাধা দেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে জয়, হাসপাতালে উদ্দাম নাচ রোগীদের
খবর পেয়ে গ্রামে পৌঁছয় চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ। পুলিশের মধ্যস্থতায় মৃত্যুর কুড়ি ঘণ্টা সৎকারের কাজ শুরু হয়। মৃতের পরিবারের সকলের করোনা পরীক্ষা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা নয়, টাইফয়েড ও জন্ডিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন অমিয় ভট্টাচার্য। অন্তত তেমনই দাবি করেছেন মৃতের ছেলে। কিন্তু ঘটনা হল, করোনা আতঙ্কে শুনসান চন্দ্রকোনার ডালিমাবাড়ি গ্রাম। সংক্রমণের ভয়ে এলাকায় ছেড়ে পালিয়েছেন অনেকেই।