যতদিন যাচ্ছে, করোনা আতঙ্ক ততই বাড়ছে। সংক্রমণের আশঙ্কায় এবার সামাজিক বয়কটের মুখে পড়লেন খোদ সরকারি হাসপাতালে কর্মীরাই! তাঁদের পরিবারের লোকদেরও নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে।
আরও পড়ুন: লকডাউনের জেরে বন্ধ চায়ের দোকান, উপার্জন হারিয়ে অবসাদে আত্মঘাতী যুবক
করোনা থাবা বসিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সাতজন আরপিএফ জওয়ান-সহ সংক্রমিত হয়েছিলেন ১১ জন। ৬ জওয়ান ও দাসপুরের একটি পরিবারের তিনজন সদস্য সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চিকিৎসা চলছে আরও এক আরপিএফ জওয়ান ও এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের। কিন্তু আতঙ্ক যে পিছু ছাড়ছে না!
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বাড়ছিল। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য মেদিনীপুর শহরের দুই প্রান্তে আলাদা দুটি হাসপাতাল তৈরি করেছে প্রশাসন। জেলার করোনা হাসপাতালে নিরাপত্তাকর্মী, সাফাইকর্মী ও অ্যাম্বুল্যান্স চালক হিসেবে চাকরি পেয়েছেন ষাট জন। কেউ-ই স্থায়ী কর্মী নন, ঠিকাদারের অধীনে কাজ করেন। করোনা হাসপাতালে কাজ করার জন্য তাঁদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ভুক্তভোগীদের দাবি, পরিবারের লোকেদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। পাড়ার দোকান থেকে জিনিস কেনা, এমনকী কল থেকে নেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মাতবব্বররা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে কন্টেইনমেন্ট জোন বেড়ে ৫১৬, কলকাতাতেই ৩১৮
জানা গিয়েছে, করোনা হাসপাতালে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের বেশিরভাগেরই বাড়ি মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে। পুলিশ আধিকারিকরা গ্রামে গিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সকলেই। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বাড়ি ফিরতে না পারলে কর্মবিরতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা জানিয়েছেন, পুলিশের সঙ্গে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, এর আগে মেদিনীপুর শহরে করোনা আতঙ্কে বয়কটের মুখে পড়েছিলেন চিকিৎসক-সহ নার্সিংহোমের ১২৭ জন কর্মী। ব্রেন টিউমারের সমস্যা নিয়ে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হন এক ব্যক্তি। বেশ কয়েকদিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলে। শেষপর্যন্ত রোগীকে ওড়িশায় নিয়ে চলে যান পরিবারের লোকেরা। তাঁকে ভর্তি করা সেখানকার একটি নার্সিংহোমে। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি।