গত বছর ৫ আগস্ট কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ভারত। গত বুধবার ছিল সেই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের বর্ষপূর্তি। ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বুধবার সারাদিন পাকিস্তান জুড়ে ধিক্কার দিবসের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই মতই করাচিতে একটি বিশাল মিছিল এবং সমাবেশের আয়োজন করেছিল জামাত-ই-ইসলামি। মিছিল শুরু হওয়ার পরেই ঘটে গ্রেনেড হামলা হয়। যাতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। এই হামলায় কমপক্ষে ৪০ জনের জখম হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
করাচি পুলিশ সূত্রে খবর, গুলশান-ই-ইকবাল অঞ্চলে সমাবেশের মূল ট্রাকটিকে নিশানা করা হয়েছিল। জামাত-ই-ইসলামির মুখপাত্র জানান, মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি ট্রাকের সামনে গ্রেনেড ছুড়ে পালিয়ে যায়। ওই গ্রেনেড ফাটলে কমপক্ষে ৪০ জন জামাত সমর্থক ঘায়েল হন। পাক পুলিশের একা আধিকারিক জানান, হামলা চালাতে আরডিজি-১ গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছিল।
গ্রেনেড হামলার পর রাস্তা জুড়ে আহত ব্যক্তিদের পড়ে থাকতে দেখা যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তান সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় সিন্ধুদেশ রেভোলিউশনারি আর্মি। গত কয়েক মাস ধরে সিন্ধ অঞ্চলে সক্রিয় হয়েছে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী দলটি। এর আগেও করাচিতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়েছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ সংগঠটি। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে হামলা চালানোর কথা তারা স্বীকার করে। গত জুনমাসে সিন্ধ অঞ্চলে পর পর তিনটি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল এই জঙ্গি সংগঠনটি। তাতে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। নিহত হয়েছিলেন দুই সেনা জওয়ান।
সিন্ধুদেশ রেভোলিউশনারি আর্মির দাবি, সিন্ধ অঞ্চলকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। এই সিন্ধ প্রদেশের রাজধানীই হল করাচি। ফলে বার বার করাচিতেই বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে তারা। এদের সঙ্গে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মিরও যোগাযোগ আছে বলে জানা গিয়েছে। বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি দীর্ঘ দিন ধরে স্বতন্ত্র বালুচিস্তানের দাবি নিয়ে নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছে। পাক প্রশাসন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। তবে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে।