জাগলিং এই শব্দটির সঙ্গে সকলেই পরিচিত। কিন্তু এই খেলার প্রতি আর আগ্রহ নেই নতুন প্রজন্মের। কিন্তু জাগলিংকেই হাতিয়ার করে যিনি বিশ্বের দরবারে বাংলার মাথা উঁচু করেছিলেন তিনি হুগলির উত্তর পাড়ার বাসিন্দা অভয় মিত্র। প্রয়াত হলেন জাগলিংয়ের যাদুকর। চারিদিক যখন করোনা আতঙ্ক গ্রাস করেছে। লকডাউনের জেরে গৃহবন্দি মানুষ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ঠিক তখনই নিঃশব্দে চলে গেলেন অভয় মিত্র। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
আরও পড়ুনঃ২০১৯ বিশ্বকাপের পরই অবসর নেওয়া উচিত ছিল ধোনির, বিস্ফোরক মন্তব্য শোয়েব আখতারের
ছোট বেলায় বাব কালোসোনা মিত্রকে দেখেই জাগলিংয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন অভয় মিত্র। বাবার কাছ থেকেই জাগলিংয়ের প্রাথমিক পাঠ নেন। যদিও বাবার কাছ থেকে বেশি দিন শেখা হওয়া ওঠেনি ছোট্ট অভয়ের। পরে নিজের দক্ষতার জেরেই জাগলিংকে নখদর্পণে নিয়ে আসেন অভয় মিত্র। যার মাধ্যমে পরে সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের জাগলিংয়ের জগতে অভয় মিত্র সকলের কাছে লাঠিদা নামে পরিচিত ছিলেন। বিখ্যাত চিত্র পরিচালক সত্যজিত রায় ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ সিনেমায় তাঁর জাগলিংয়ের যাদু দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন সকলে। তারপর থেকেই বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে অভয় মিত্রের নাম। ফ্রান্স ও রাশিয়া-সহ বিশ্বের বহু দেশে তিনি তাঁর দক্ষতা প্রদর্শন করে মানুষের মন জয় করার পাশাপাশি বহু পুরস্কারও পেয়েছেন সকলের প্রিয় লাঠিদা।
আরও পড়ুনঃআইপিএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ঘোষণা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের, কী বললেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট
জাগলিংই জীবন ছিল অভয় মিত্রের। তিনি বলতেন, জাগলিং হচ্ছে এমন একটি খেলা যার মাধ্য়মে শরীর ও মন দুই ভাল থাকে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের জাগলিংয়ের প্রতি অনীহা থাকায় মনে মনে আহত হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র ছিলেন না অভয় বাবু। উলটে এই খেলার দিকে নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে নিজেই জাগলিংয়ের একটি অ্যাকাডেমি খুলেছিলেন। সেখানে তৈরি করতেন ভবিষ্যতের জাগলারদের। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যজনিত রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন অভয় মিত্র। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। রিষড়া শ্নশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর। অভয় মিত্রের মৃত্যুতে শোকের ছায়া উত্তর পাড়ায়। শোকের ছায়া বাংলার ক্রীড়া জগতেও।