৩৬ বছরের গ্লানি মুছে ফেলে দেশের জার্সিতে সফলতার মুকুট পরার সুযোগ। অন্যদিকে একবারের বিশ্বকাপ জয়ী তরুণ ফুটবলার এমবাপের সামনে ইতিহাসের পূণরাবৃত্তি ঘটিয়ে জয়ের রেকর্ড অক্ষত রাখার সুযোগ। ২০২২ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে দুই সেরার লড়াই দেখবে বিশ্ব।
২০১৮ সালের ক্ষত এখনও দগদগে মেসিদের মনে। রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের সামনে পড়েছিল আর্জেন্টিনা। মুহূর্তে মেসিদের রক্ষণ ভেঙে দিয়েছিল এমবাপের গতি। শেষ ষোলো থেকেই ফিরতে হয়েছিল মেসিদের। ৪ বছর পর ফের একবার মুখোমুখি ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা। একদিকে মেসিদের সামনে ২০১৮ বদলা নেওয়ার সুযোগ, একই সঙ্গে ৩৬ বছরের গ্লানি মুছে ফেলে দেশের জার্সিতে সফলতার মুকুট পরার সুযোগ। অন্যদিকে একবারের বিশ্বকাপ জয়ী তরুণ ফুটবলার এমবাপের সামনে ইতিহাসের পূণরাবৃত্তি ঘটিয়ে জয়ের রেকর্ড অক্ষত রাখার সুযোগ। ২০২২ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে দুই সেরার লড়াই দেখবে বিশ্ব।
বিগত ১৬ বছর ধরে কার্যত ফুটবল বিশ্বে রাজত্ব করেছেন মেসি। ক্লাব ফুটবলে একের পর এক সাফল্য। বিশ্বের সেরার তালিকায় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন লিও। আজকে দেশের জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন তিনি। দেশের হয়ে ব্যর্থতার দাগ মোছার শেষ সুযোগ মেসির সামনে। বার্সেলোনার হয়ে লা লিগা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, কোপা দেল রে থেকে শুরু করে প্যারিস সঁ জরমঁ-এর লিগ ওয়ান যাবতীয় ট্রফি জেতা হয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক ফুটবলে সফলতার নজির কম। দেশের হয়ে মাত্র একটি অলিম্পিক্স সোনা ও একটি কোপা আমেরিকা ছাড়া আর কিছুই নেই। কাপ জেতার এটাই শেষ সুযোগ মেসির সামনে। তবে ইতিহাস পক্ষে নেই আর্জেন্টিনার। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে পরাজয়। ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও জার্মানির কাছে হার। ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ। ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন মেসি। প্রথম ম্যাচে নেমে গোলও করেছিলেন তিনি। তাঁরপর ২০১০ সালে ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে নামেন মেসি। খেলেছিলেন প্রধান ফুটবলার হিসেবেই। তখন আর্জেন্টিনার দায়িত্বে দিয়েগো মারাদোনা। তাঁরপর মোট পাঁচটি বিশ্বকাপে মোট ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। মোট গোলসংখ্যা ১১। অন্য আজকে মেসির উলটো দিকে দাঁড়িয়ে থাকা এমবাপে মাত্র দু'টি বিশ্বকাপেই খেলেছেন ১৩টি ম্যাচ। গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯। এমবাপের গতির সামনে এখন টিকে থাকাই আর্জেন্টিনার সামনে মূল চ্যালেঞ্জ।
১৯৭৮ এবং ১৯৮৬-এর পর আর কেটে গিয়েছে ৩৬ বছর। আর কাপ ঘরে আসেনি আর্জেন্টিনার। প্রতিবারই ব্যর্থতা নিয়ে ফিরতে হয়েছে মেসিদের। ২০১৪-এর পর ২০২২ সালে আবারও একবার কাপ ঘরে তোলার সুযোগ মেসিদের সামনে। এবার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। দু'বারের বিশ্বকাপ জয়ী দল তারা। ১৯৯৪ সালের পর থেকে পরপর সাতটি বিশ্বকাপে চমক ধরে রেখেছে ফ্রান্স। চারবার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। দু'বার জিতেওছে। ১৯৯৮ ও ২০১৮ সালে কাপ ঘরে তোলে ফরাসি দল। ২০১৮ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে নেমেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলেন এমবাপে। এবারের বিশ্বকাপেও শুরুর থেকেই ফর্মে তিনি। রবিবার কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে দুই দলের দশ নম্বর জার্সির টক্কর দেখবে বিশ্ব। নতুন ইতিহাস কার পক্ষে থাকবে? তরুণ যুবরাজের গতির সামনে কি ভাগ্যবদল করতে পারবে শেষবারের মত মাঠে নামা রাজা?
আরও পড়ুন -
আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনালে ইতিহাস গড়তে তৈরি দিদিয়ের দেশঁ, হুগো লরিস
বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য পরিকল্পনা তৈরি, জানালেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি
বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ লুকা মডরিচের, মরক্কোকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান ক্রোয়েশিয়ার