ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে যন্তর মন্তরে চলছে আন্দোলন। কুস্তিগীরদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংস্থা।
ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার আদালতে তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিয়ে এমনই জানাল দিল্লি পুলিশ। অতিরিক্ত সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব আদালতে জানিয়েছেন, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনা এক কুস্তিগীরের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এই ঘটনাটি সংবেদনশীল হওয়ায় সেই বয়ান গোপন রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী। তাঁর মতে, এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলে তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। কুস্তিগীরদের আইনজীবী এস এস হুডা তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি জানান। তিনি দাবি করেন, তদন্তাকারীরা রিপোর্ট গোপন রেখে অভিযোগকারীদের অধিকার লঙ্ঘন করছেন। আদালত জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৭ মে। বাকি অভিযোগকারীদেরও বয়ান নথিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশকে। তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট গোপন খামে রাখার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
এদিকে, দিল্লি পুলিশের কাছে বয়ান দিয়েছেন ব্রিজভূষণও। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মহিলা কুস্তিগীররা তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার যে অভিযোগ এনেছেন, তারই তদন্তে নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন ব্রিজভূষণ। পাশাপাশি ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সহ-সচিব বিনোদ তোমরও বয়ান দিয়েছেন।
বুধবার দিল্লির আদালত পুলিশকে এই ঘটনার তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে দিল্লি পুলিশকে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। ৭ জন কুস্তিগীর দিল্লি পুলিশের তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার আর্জি জানায়। সেই আবেদনে সাড়া দেয় দিল্লি পুলিশ। অভিযোগকারীরা আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্ত এবং বয়ান রেকর্ড করার নির্দেশ দেওয়ার আর্জিও জানান। সেই আর্জি মেনে নিয়েছে আদালত।
২৮ এপ্রিল ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দু'টি এফআইআর করে দিল্লি পুলিশ। তার মধ্যে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে পকসো আইনে। কারণ, এক নাবালিকা কুস্তিগীরও কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছে। এছাড়া ভারতীয় দণ্ডবিধির আরও কয়েকটি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
যন্তর মন্তরে ২৩ এপ্রিল থেকে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন কুস্তিগীররা। তাঁদের দাবি, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে শুধু এফআইআর করেই দায় সারলে হবে না, তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে। কুস্তিগীরদের আন্দোলন সমর্থন করে এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংগঠন। আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য দু'টি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির পক্ষ থেকে ২১ মে-র মধ্যে ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করার দাবি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-
ব্রিজভূষণকে গ্রেফতারের দাবি, দেশজুড়ে প্রতিবাদের ডাক মহিলাদের ৪টি সংগঠনের
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন অনুরাগ ঠাকুর, দাবি কুস্তিগীরদের
জ্যাংড়া জাগৃতি সংঘে কোরিয়ান মার্শাল আর্ট হাপকিডো-র টেকনিক্যাল সেমিনার