গ্রিনল্যান্ড বরফের চূড়ায় প্রথমবার হল বৃষ্টিপাত। দারুণ বিপদের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
একেবারে শিরে সংক্রান্তি। এমনটাই মনে করছেন আবহাওয়া ও দলবায়ু বিজ্ঞানীরা। গত ১৪ থেকে ১৬ অগাস্টের মধ্যে, গ্রিনল্যান্ডের বরফে ঢাকা চূড়ায়, ইতিহাসে প্রথমবার বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে, জানা গিয়েছে। এতদিন পর্যন্ত ৩,২১৬ মিটার উচু বরফের চূড়ায় আদ্রতা ঝরে পড়ত তুষাড়পাত হিসাবে, কোনওদিন বৃষ্টিপাত হতে দেখা যায়নি। গ্রিনল্যান্ড বরফের চূড়ায় স্থাপিত মার্কিন গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা বিষয়টি জানিয়েছেন।
ওই বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, ওই দিন তাপমাত্রা প্রায় টানা নয় ঘণ্টা তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের উপরে। এই কেন্দ্রে ১৯৮৯ সাল থেকে আমেরিকার ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের কর্মীরা সারা বছর অবস্থান করেন। তারা জানিয়েছেন, গত এক দশকেরও কম সময়ে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো গ্রীনল্যান্ডের চূড়ায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের উপরে উঠে গেল।
মার্কিন ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার জানিয়েছে, ১৯৫০ থেকে তারা গ্রিনল্যান্ডের চূড়ার আবহাওয়ার রেকর্ড রাখছে। মাঝেমধ্যে খুচখাচ বৃষ্টি হলেও, এত বৃষ্টি এর আগে কোনওদিন হয়নি। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৪ থেকে ১৬ অগাস্ট - এই তিনদিনের মধ্যে গ্রিনল্যান্ডে সাত বিলিয়ন টন বৃষ্টিপাত হয়েছে। বেশিরভাগ গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে চূড়া পর্যন্ত এলাকায়। বৃষ্টি এবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ব্যাপক পরিমাণে বরফ গলে গিয়ে বরফের দ্বীপটির দারুণ ক্ষতি হয়েছে। স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার জানিয়েছে, গত রবিবার ১৫ অগাস্ট গ্রিনল্য়ান্ডের পৃষ্ঠতলের বরফের ভর যতটা হ্রাস পেয়েছিল, তা অগাস্টের মাঝামাঝি সময়ের দৈনিক গড়ের সাত গুণ বেশি।
আরও পড়ুন - Afghanistan - তালিবানিস্তানে জারি প্রথম ফতোয়া, গোড়াতেই ছেঁটে ফেলা হল 'যত নষ্টের গোড়া'
এদিকে, গ্রিনল্যান্ডের শীর্ষে রেকর্ড ভাঙা ই বৃষ্টি জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সর্বশেষ সতর্কবার্তা, এমনটাই মনে করছেন জলবায়ু ও আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট-ডোহার্টি আর্থ অবজারভেটরির গ্লেসিওলজিস্ট ইন্দ্রাণী দাস বলেছেন, বরফের দ্বীপটির জন্য এই বৃষ্টি মোটেই স্বাস্থ্যকর লক্ষণ নয়। বরফের উপর জল পড়া খুবই খারাপ, কারণ জল পৃষ্ঠেতলের বরফের গলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ায়। মার্কিন ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের উপপ্রধান বিজ্ঞানী টুইলা মুনের মতে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ক্রমবর্ধমান বন্যা, আগুন এবং এই বৃষ্টি হচ্ছে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিতবাহী 'বিপদঘণ্টা'।