সোমবার ২০২১-২২ অর্থবর্ষেক জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। শুরুতেই তিনি স্পষ্ট করে দেন, এইবারের বাজেট একেবারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মনির্ভর ভারত গঠনের দৃষ্টিভঙ্গীকে মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। আত্মনির্ভরতার দিকে কতটা এগিয়ে দেবে এই বাজেট? কোভিড মহামারির ধাক্কায় ঝিমিয়ে পড়া ভারতীয় অর্থনীতি কি চাঙ্গা হবে এই বাজেটে? কতটা সুবিধা পেলেন করদাতারা? কৃষকরাই বা কী পেলেন? এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২১-২২ -
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানান, বাজেটে প্রথমেই জোর দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যক্ষেত্র এবং সুস্থতার দিকে। ছয় বছরের জন্য ৬৪,১৮০ কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর স্বাস্থ্য ভারত প্রকল্প নামে একটি নয়া কেন্দ্রীয় প্রকল্প চালু করা হয়েছে। যা মূলত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। উৎপাদন শিল্পেরও পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে সড়ক পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, অসম, তামিলনাড়ু, কেরলে। প্রসঙ্গত ৪ রাজ্যেই সামনেই বিধানসভা ভোট। তবে এই ৪ রাজ্যের মধ্যে বরাদ্দ সবথেকে কম পেয়েছে বাংলাই। একই সঙ্গে রেল ব্যবস্থাকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করার জন্য জাতীয় রেল পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। ফ্রেট করিডোর তৈরির ক্ষেত্রেও বেছে নেওয়া হয়েছে ভোটের রাজ্যগুলিকেই। এছাড়া মেট্রোলাইট ও মেট্রো নিও নামে দুটি নতুন কম খরচের মেট্রোরেল প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। দেশের ২৭টি মাঝারি শহর ও বড় শহরতলীতে হবে এই প্রকল্পের কাজ। তবে এই ক্ষেত্রেও বাদ পড়েছে বাংলা।
কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন মূল্যের ১,৫ গুণ ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি পণ্য ক্রয়ের কথাও বলা হয়েছে। ই-নাম অর্থাৎ অমনলইন কৃষি বাজারে আরও ১০০০টি মান্ডি যুক্ত করা হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রের পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য দেশের ৩২টি জেলার চালু হচ্ছে এক দেশ এক রেশন কার্ড। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের তথ্য রাখার জন্য একটি পোর্টাল তৈরিও হবে।
এই বছর ফিসকাল ডেফিসিট জিডিপির ৯.৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে সরকার। পরের আর্থিক বছরের মধ্যে এই ঘাটতি ৬.৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এর জন্য বাজার থেকে ১২ লক্ষ কোটি টাকা ধার করা হবে। একইসঙ্গে পেট্রোপন্য়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি পন্যের উপর কৃষি সেস বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে করে নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে সাধারণ মানুষের বাজেটে যে দিকে সবথেকে বেশি নজর থাকে, সেই আয়করের ক্ষেত্রে কিন্তু বিশেষ পরিবর্তন আনা হয়নি এই বাজেটে। শুধুমাত্র ৭৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী পেনশনভোগীদের আয়কর মকুব করা হয়েছে। জমা দিতে হবে না আয়কর রিটার্ন। তবে ৭৫ ঊর্ধ্বদের অন্য আয়ের উৎস থাকলে তার জন্য কর দিতে হবে। এই বিষয়ে অনেক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞই বলছেন, যদি এই বয়সসীমাটা পেনশনের বস অর্থাৎ ৬৫ থেকেও দেওয়া হত, তাহলে অনেক বেশি কার্যকর হত এই পদক্ষেপটি।
সব মিলিয়ে এই বাজেট নিয়ে অর্থনীতিবিদ থেকে সাধারণ মানুষ - সকলেই কম বেশি হতাশা প্রকাশ করেছেন। করোনা মহামারি ও লকডাউনের ফলে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন, অনেকেরই বেতন কমেছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ আয়করের ক্ষেত্রে কিছু অদলবদল আশা করেছিলেন, তা ঘটেনি। উপরন্ত, সরকারের আয় বাড়ানোর জন্য সাধারণ মানুষের হাতে আরও বেশি নগদ দিতে হত সরকারকে, তার দিশা দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন অনেকে। একই সঙ্গে কৃষি সেস-এর ধাক্কায় একেবারে শুরুতে যদি মূল্যবৃদ্ধি নাও ঘটে, ভবিষ্যত নিয়ে কেউ বিশেষ আশাবাদী হতে পারছেন না। কর্মসংস্থানেরও বিশেষ ব্যব্স্থা করতে পারেনি এই বাজেট, এমনটাই বলছেন বিরোধীরা। মোদী সরকারের প্রতিনিধিদের অবশ্য দাবি, এই বাজেট আত্মনির্ভরতার বাজেট।
Apr 11 2024, 11:21 PM IST
Apr 10 2024, 05:58 PM IST
Mar 11 2024, 01:50 PM IST
Oct 18 2023, 03:29 PM IST
Oct 15 2023, 05:24 PM IST
Jun 26 2023, 04:53 PM IST
Jun 22 2023, 11:13 PM IST
Jun 15 2023, 11:51 AM IST
Apr 14 2024, 04:33 PM IST
Apr 12 2024, 11:08 AM IST
Apr 10 2024, 11:24 PM IST