ভবানীপুরের বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ
শুক্রবারই তাঁর হয়ে প্রচার করেন অমিত শাহ
তাঁরই বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠল
নির্বাচন কমিশনে লিখিতঅভিযোগ দায়ের করলেন এক সমাজকর্মী
দক্ষিণ কলকাতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুর থেকে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। শুক্রবারই তাঁর হয়ে ভবানীপুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিলি করে প্রচার করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু, একই দিনে তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যাচারের অভিযোগ উঠল।
এদিন নির্বাচন কমিশনে তথ্য-প্রমাণাদি দিয়ে ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে রুদ্রনীলের বিরুদ্ধে এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সামাজিক-আইন গবেষক তথা সমাজ কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী । এর আগে ২০১৯ সালে, সরকারি বেতন নিয়ে দুটি সংস্থার ডিরেক্টটর পদে রুদ্রনীলের থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এই সমাজ কর্মী। এই বিষয়ে তিনি তথ্য জানারঅধিকার আইনে একটি আবেদন করেছিলেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুদ্র বিজেপিতে যাওয়ার পর এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য সরকার।
নির্বাচন কমিশনে তিনি জানিয়েছেন,২০১৫-১৬ থেকে ২০১৯-২০ - যে কয়েক বছরের আয়করের হিসাব দিয়েছেন রুদ্র, সেই সময়কালে তিনি তাঁর পেশা এবং কাজ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছন। ওই সময়কালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রাইট টু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কমিশনার হিসাবে প্রতি মাসে বেতন এবং ভাতা হিসাবে ৩.০৬ লক্ষ টাকা করে নিয়েছেন।
এছাড়া এক নিকটাত্মীয়ের নামে কেনা একটি অতি মূল্যবান জাগুয়ার ল্যান্ডরোভার গাড়ি নিয়মিত চড়েন রুদ্রনীল। এই গাড়িটির কথাও হলফনামায় জানাননি বিজেপির ভবানীপুরের প্রার্থী। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারে কাছ থেকে ছয়মাসে যাতায়াতের ভাতা হিসাবে তিনি ১,৬৪,০৫৮ টাকাও নিয়েছিলেন।
এছাড়া, ওয়ার্কশপ প্রোডাকশন অ্যান্ড অ্য়ালায়েড প্রাইভেট লিমিটেড এবং লালন ফিল্মস প্রাইভেট লিমিটেড নামে দুটি সংস্থায় তিনি যৌথভাবে ডিরেক্টরের পদেও রয়েছেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রুদ্র হলফনামায় জানাননি, চেপে গিয়েছেন, এমনই অভিযোগ করেছেন ওই সমাজ কর্মী। রাজ্য সরকারের কমিশনার পদে থাকাকালীনই এই দুটি সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করতেন রুদ্র এবং এই বিষয়ে যে সরকার এখন তদন্ত করছে, তাও জানাতে ভোলেননি তিনি।
আরও পড়ুন - কৃষি না শিল্প - একদশক পর নির্বাচনে ফিরে এল পুরোনো প্রশ্ন, কী বলছে সিঙ্গুর
আরও পড়ুন - বাদ 'জয় শ্রীরাম', ভরসা নিজের কাজ - শুভেন্দুর থেকেও কঠিন পরীক্ষায় এবার রাজীব, দেখুন
আরও পড়ুন - বঙ্গের কোন কোন কেন্দ্রে সহজে জিতবে বিজেপি, কোথায় লড়াই কঠিন - কী বলছে দলের গোপন বিশ্লেষণ
একই সঙ্গে হলফনামায় রুদ্রনীল ঘোষ যে আয়-ব্যায়ের হিসাব দিয়েছেন এবং আয়কর জমা দেওয়ার হিসাব দিয়েছেন, তার যথার্থতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বনাথ গোস্বামী। তাঁর মতে, এতগুলি উৎস থেকে বিজেপি প্রার্থীর আয় আরও অনেক বেশি বলে তাঁর ধারণা। সরকারি পদে থেকেও ফিল্ম ও সিরিয়ালে অভিনয়ের কাজ তিনি চালিয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি রুদ্র নিজেই বলেছিলেন, সরকারি পদের বেতন, তাঁর অভিনয় করে একদিনে রোজগার হয়। সেই কথা উল্লেখ করে রুদ্রনীলের আয়করের বিষয়ে উপযুক্ত তদন্ত সংস্থা দিয়ে বিশদে নিরীক্ষা ও তদন্ত করার আবেদন করেছেন তিনি।