২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় নয়াদিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। তৃণমূলে থাকার ফলে তাঁর দমবন্ধ হয়ে আসছিল বলে জানিয়েছিলেন।
একের পর এক ভাঙন ধরছে বঙ্গ বিজেপিতে। বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষের পর ফের এক বিজেপি বিধায়ক যোগ দিলেন তৃণমূলে। তন্ময়ের যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ হল বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের। বেশ কয়েকদিন ধরেই তিনি বেসুরো ছিলেন। তৃণমূলে ফিরে তিনি বলেন, "একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য পরিবর্তন হয়েছিল। যা না হওয়াই উচিত ছিল। একজন জনপ্রতিনিধির কাজ এলাকার উন্নয়ন, মানুষের উন্নয়ন। তা করতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে বড় শক্তি আর কেউ নন। আমি ঘরের ছেলে, ঘরে ফিরে এসেছি।"
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় নয়াদিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ দাস। তৃণমূলে থাকার ফলে তাঁর দমবন্ধ হয়ে আসছিল বলে জানিয়েছিলেন। তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকেই বেসুরো হচ্ছিলেন তিনি। ৮ ফেব্রুয়ারি বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিন লবিতে মমতার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন। এরপর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরেও গিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়েছিল। ঠিক তখন থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা। অবশেষে এত মাস পর 'ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে' সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন। আর আজ তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন তিনি।
আরও পড়ুন- কারণ ভিন্ন, একইদিনে নন্দীগ্রামে সিবিআই ও সিআইডি আধিকারিকরা
আরও পড়ুন- এখনই বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই মিলবে না, আজও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়
ঘর ওয়াপসির পরই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, "ওই দলে কাজ করার কোনও পরিবেশই নেই। প্রতিনিয়ত তা শিরোনামেও উঠে আসে। দলের মধ্যেই কোনও একতা নেই। এ ওর নামে প্রকাশ্যে বিষোদগার করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কুৎসা করছে। এরপর কি আর সেই দলের কোনও জনপ্রতিনিধি মানুষের জন্য কাজ করতে পারেন? আর এটাও তো মাথায় রাখতে হবে, দল তো স্থানীয় নেতৃত্বের উপর গড়ে ওঠে। বহিরাগত নেতৃত্ব দিয়ে দল চলে না। বিশেষ করে যাঁদের ভাষাগত পার্থক্য এতটা প্রকট, সেই ভাষা তো মানুষ বুঝতেই পারবেন না।"
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনে ২০০ বেশি আসন জেতার স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। কিন্তু, ৭৭টি আসন জেতার পরই থেমে যায় তাদের বিজয় রথ। যদিও মন খারাপ না করে ৩ থেকে ৭৭-এর যাত্রা ইতিবাচক বলেই ধরে নিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। এদিকে ফল প্রকাশের পর নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদ গ্রহণ করেননি। ফলে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৭৫-এ। এরপর মুকুল রায় ও তন্ময় ঘোষের দল ছাড়ার পর সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৭৩। আর এবার বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭২।