পাহাড়ের আকার নিয়েছিল ৫০ বছর ধরে জমা আবর্জনা, বায়োমাইনিং পদ্ধতিতে শুরু সাফাই কাজ

২০১৮ সালে শাসক দলের দায়িত্বে থাকা চন্দননগর পুরনিগম বিশেষ কারণে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চন্দননগর পুরনিগমের কমিশনার স্বপন কুন্ডুকে। দায়িত্বে এসেই তিনি প্রথমেই চেষ্টা করেন কীভাবে এই শহরকে জঞ্জাল মুক্ত করবেন।

Web Desk - ANB | Published : Dec 23, 2021 9:10 PM IST / Updated: Dec 24 2021, 04:16 AM IST

আবর্জনা (Garbage) জমছিল প্রায় ৫০ বছর (50 Years) ধরে। আর তা জমতে জমতে প্রায় পাহাড়ের মতো উঁচু হয়ে গিয়েছিল। চন্দননগর (Chandannagar) কলুপুকুর ভাগাড় ধারের এই জমা আবর্জনা ছিল স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ছিল এক দুঃস্বপ্ন। এবার বায়োমাইনিং (Biomining) পদ্ধতিতে সেই স্তূপীকৃত জঞ্জাল সাফ করার উদ্যোগ নিয়েছেন চন্দননগর পুর কমিশনার স্বপন কুন্ডু (Swapan Kundu)। 

২০১৮ সালে শাসক দলের দায়িত্বে থাকা চন্দননগর পুরনিগম বিশেষ কারণে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চন্দননগর পুরনিগমের (Chandernagore Municipal Corporation) কমিশনার স্বপন কুন্ডুকে। দায়িত্বে এসেই তিনি প্রথমেই চেষ্টা করেন কীভাবে এই শহরকে জঞ্জাল মুক্ত করবেন। যোগাযোগ করেন পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে। এরপর তার দায়িত্ব নেয় স্টেট আরবান ডেভলপমেন্ট এজেন্সি। সেক্ষেত্রে বিশেষ সহযোগিতা করে কেএমডিএ। ঠিক হয় বায়োমাইনিং পদ্ধতিতে ওই আবর্জনার পাহাড় পরিষ্কার করা হবে। 

সেই পদ্ধতিটি ঠিক কি? এই বিষয়ে স্বপন কুন্ডু বলেন, "দীর্ঘদিনের পুরোনো আবর্জনাকে পরিষ্কার করার একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এই বায়োমাইনিং। তিনটি ধাপে এই কাজ হয়। পুরোনো আবর্জনাগুলিকে প্রথমে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে পচানো হয়। তারপর সেটাকে রোদে শুকানো হয়। এরপর তা কনভেয়ার বেল্টে চাপিয়ে দিতে হয়। কনভেয়ার বেল্ট থেকে ওই আবর্জনা  তিনভাগে বের হয়। একটি জৈব, একটি প্লাস্টিক এবং আরেকটি সলিড পার্ট হিসেবে। অর্থাৎ আবর্জনাগুলি থেকে প্লাস্টিক পদার্থ এবং পাথর জাতীয় শক্ত পদার্থ গুলিকে আলাদা করা হয়। বাকিটা পড়ে থাকে জৈব হিসেবে। সেটিকে ব্যবহার করা হয় সার হিসেবে। আর প্লাস্টিক পদার্থগুলি বিক্রি করা হয় সিমেন্ট কোম্পানির কাছে। এছাড়া সলিড পার্ট যেটা পড়ে থাকে তা ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন এলাকার নিচু রাস্তা ভরাট করার কাজে।" 

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই নোংরা পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। এই ধরনের কাজে এক্সপার্ট কিছু প্রাইভেট এজেন্সি কাজ করছেন। প্ল্যান্ট সুপারভাইজার অমিত ঝা বলেন, "দিনে প্রায় ১০ ঘণ্টা শ্রমিকরা কাজ করছেন। দীর্ঘদিনের আবর্জনা বলে এই আবর্জনাগুলিকে আর ব্যাকটেরিয়া দিয়ে পচাতে হচ্ছে না। কারণ এগুলি এমনিতেই পচনশীল হয়ে গিয়েছে। খালি তা রোদে শুকোতে হচ্ছে।" বেশ কিছুটা জায়গা সাফও হয়েছে। যদিও কমিশনার জানিয়েছেন, "এখনও প্রচুর বাকি। মাত্র ৫ শতাংশের মতো কাজ হয়েছে। আশা করছি তিন বছরের মধ্যে ওই ভাগাড় পরিষ্কার করে সেখানে সেখানে উন্নয়নমূলক কিছু কাজ করতে পারব। পাশে আছেন বিধায়ক তথা পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তাঁর সহযোগিতা সব সময় পাই। এটা বলা যেতেই পারে চন্দননগরের বাসিন্দাদের বহুদিনের একটি সমস্যা মিটতে চলেছে। তাঁদের আর দুর্গন্ধ পেতে হবে না।" পুর কমিশনারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। 

Share this article
click me!