অধীরের মামলায় পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার রিপোর্ট চাইল আদালত, আহতদের চিকিৎসায় রাজ্যকে গুরুত্ব দিতে নির্দেশ

কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল অধীর চৌধুরীর মামলা। অধীর নিজেই সওয়াল করেন। ক্ষতিপুরণ, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে মামলা করেন তিনি।

 

Saborni Mitra | Published : Jul 10, 2023 12:10 PM IST

পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার ঘটনায় উত্তাল ছিল রাজ্য। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত হিংসার কারণে মৃতের সংখ্যা ৩০ ছাড়িয়ে। এই অবস্থায় ভোটের দিনে হিংসার ঘটনায় মৃতের পরিবার ও আহতদের জন্য ক্ষতিপুরণ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। সেই মামলাতেও কলকাতা হাইকোর্টের প্রাধন বিচারপতির ডিভেশন বেঞ্চ রাজনৈতিক হিংসার ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছে। পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে নিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে।

অধীরের সাওয়ালঃ

কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল অধীর চৌধুরীর মামলা। অধীর নিজেই সওয়াল করেন। অধীর বলেন, 'পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক সন্ত্রাস হয়েছে। খুন, মারধর, ব্যালট পেপার লুঠ করা হয়েছে। এই রাজ্যে গণতন্ত্রকে উপহাসে পরিণত করা হয়েছে।' অধীরের দাবি রাজ্য সরকার, রাজ্য নির্বাচন কমিশান, পুলিশ প্রশাসন চক্রান্ত করে এই নির্বাচনে বাহু শক্তির পরিচয় দিয়েছে। কথা প্রসঙ্গে অধীর রাজীব গান্ধীর প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এই দেশে পঞ্চায়েত রাজ শুরু করেছিলেন , তৃণমূল স্তরের মানুষের কাছে সুবিধে পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু এই রাজ্যে গণতান্ত্রিক অধিকার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন রাজনৈতিক হিংসা সমাজের সর্বস্তরে। আর সেই কারণেই তিনি সময় নষ্ট না করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এদিন আদালতে অধীরের আর্জি পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে কোনও নিরপেক্ষ কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর। পাশাপাশি প্রাক্তন কোনও বিচারপতিকে দিয়েও তদন্ত হতে পারে বলেও সওয়াল করেন তিনি। অধীর আরও বলেন, আদালতের নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। ইচ্ছেকৃতভাবে ৮০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। আর সেই কারণে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি সিবিআইকে দিয়ে খুনের তদন্তের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণেরও দাবি জানান।

আদালতের পর্যবেক্ষণঃ

অধীরের সওয়াল শোনার পরই প্রধান বিচারপতি তাঁর উদ্দেশ্যে বলেন, 'আপনার কথামত আমরা তিনটি বিষয় খুঁজে পেয়েছি- হত্যার তদন্ত করা, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপুরণ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা।' সওয়াল জবাবের মধ্যেই আদালত আহতদের চিকিৎসার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য সরকারকে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যের পক্ষ থেকে উপস্থিত আইনজীবীর উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'অভিযোগ করা হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে উপযুক্ত পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না। কেন?' পাশাপাশি কত কেস রেজিস্ট্রার হয়েছে সেই তথ্যও চান প্রধান বিচারপতি। এদিন আদালত বলেছে, নিহতদের শেষকৃত্যে রাজ্য সরকারকে সবরকম সহযোগিতা করতে হবে। ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফিরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি হিংসার ঘটনা নিয়ে বিএসএফএর আইজি ও রাজ্য সরকারের থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট আসার পরই ক্ষতিপুরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।

রাজ্য সরকারের আইনজীবীর বক্তব্যঃ

রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানিয়েছেন অধীরের আবেদনে প্রচুর ফাঁক রয়েছে। অনেক কিছুই পরিষ্কার করে বলা নেই। আহতদের কোথায় চিকিৎসাহ হচ্ছে তাও নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছে ক্ষতিপুরণ ছাড়া বাকি সব কিছুই আদালতের অন্যবেঞ্চে বিচারাধীন।

Read more Articles on
Share this article
click me!