কল সেন্টারের মধ্যে বিদেশী ‘ক্লায়েন্ট’-দের টার্গেট করে ফোন করে ভুল বুঝিয়ে বড়সড় অঙ্কের টাকা লুঠ করা এবং এর পাশাপাশি অসহায় তরুণ তরুণীদের চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা চালানো, দুইই সমান তালে চলতে থাকে এই ধরণের ভুয়ো অফিসগুলিতে।
ভুয়ো ইন্টারন্যাশনাল কল সেন্টার ও জব র্যাকেটের দাপটে আন্তর্জাতিক মহলে বারবার বদনাম হয় শহর কলকাতার। কল সেন্টারের মধ্যে বিদেশী ‘ক্লায়েন্ট’-দের টার্গেট করে ফোন করে ভুল বুঝিয়ে বড়সড় অঙ্কের টাকা লুঠ করা এবং এর পাশাপাশি ভারতীয় তরুণ তরুণীদের চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা চালানো, দুইই সমান তালে চলতে থাকে এই ধরণের ভুয়ো অফিসগুলিতে। বারবার এগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে থাকায় কড়া হাতে দুষ্কৃতী দমনে লেগে পড়েছে বিধাননগর এবং কলকাতা পুলিশ। সেই উদ্যোগে নেমেই এবার হাতেনাতে সাফল্য এল শুক্রবার।
বিধাননগর পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতার সল্টলেকের বি ই ব্লকের ২৭৩ নম্বর বাড়িতে একটি অফিস রুম ভাড়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে কুকর্ম চালাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। মহিলা ও পুরুষ মিলিতভাবে এই চক্র চালানো হত বলে গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল পুলিশ। সংস্থার নাম দেওয়া হয়েছিল ওয়েব কিউ এ নেট টেকনোলজিস প্রাইভেট লিমিটেড। সেই বাড়িতেই বৃহস্পতিবার হানা দিল বিধান নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার, গোপন সূত্রে বিধান নগর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ জানতে পারে যে, একটি ভুয়ো কল সেন্টার চালানো হচ্ছে সল্টলেকের বি.ই. ব্লকের ২৭৩ নম্বর বাড়িতে। এই বাড়ির নিচের অফিসটিতে বসে বেকার যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হত এবং প্রত্যেক অসহায় ছেলেমেয়েকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত। এদের সাথে যোগাযোগ করা হত ফোন কলের মাধ্যমে। শুধু তাইই নয়, এই প্রতারণা চক্রের টার্গেট ছিল বিদেশীরাও। ওয়েব পেজ ডিজাইন করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে যোগাযোগ করা হত জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ার মানুষের সাথে। এই যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহার করা হতো ইন্টারনেট কল। এই কাজের জন্য তিন থেকে চার জন অভিজ্ঞ টেলিকলার নিযুক্ত করা ছিল। এই টেলি কলাররা বিদেশী ভাষায় কথা বলে প্রথমে অন্য দেশের মানুষের বিশ্বাস অর্জন করত। এরপর তাঁদের ব্যবসা বা অন্য কোনও স্বার্থে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ওয়েব পেজ তৈরি করে দেওয়া বা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে থাকা ওয়েব পেজের উন্নতির আশ্বাস দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিত। DOT নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ও ডোমেস্টিক কল সেন্টার চালানো হত।
ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৭ জনকে। এদের মধ্যে ৩ জন মহিলা। বাজেয়াপ্ত হয়েছে বেশ কিছু নথিপত্র। গ্রেফতারির পর আজই ধৃতদের বিধান নগর কোর্টে তোলা হবে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন-
পুলিশের অফিসার ইন চার্জকে ট্রাফিকে এনে হাত নাড়ানোর কাজে লাগাবেন নওশাদ, ভাঙড়ে দাঁড়িয়ে আইএসএফ নেতার হুমকি
স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল প্রকল্পে স্বচ্ছতার উদ্যোগ, অভিভাবকদের উপস্থিতিতে পর্যবেক্ষণ চালাবে রাজ্য সরকার
সুপ্রিম কোর্টের নজরে এবার সমলিঙ্গের বিয়ে, আইনি মর্যাদা নিয়ে যুগান্তকারী রায়ের আশায় গোটা ভারত