ভবনীপুর উপনির্বাচনের আগেই হিন্দি দিবস উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তা নিয়ে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিন্দি দিবস উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছেন। তিনি হিন্দিতেই সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, হিন্দি দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসীদের তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। হিন্দি ভাষা উন্নয়নেরও তিনি জোর দিচ্ছেন তাঁদেরও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভবানীপুরে উপনির্বাচনের আগে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই টুইট ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। অনেকেই মনে করেছেন ভাবনীপুরে হিন্দিভাসীদের মন পেতেই তৃণমূল নেত্রীর এই উদ্যোগ। অনেকেই আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল সুপ্রিমোই বলেছিলেন বাংলায় বাংলাই চলবে।
দক্ষিণ কলকাতার ভাবনীপুরে কলকাতার প্রাচীণতম এলাকাগুলির মধ্যে অন্যতম। এই এলায়া হিন্দিভাষীদের বড় প্রভাব রয়েছে। বাঙালি ছাড়াও গুজরাটি, মাড়োয়ারি, পাঞ্জাবিভাষী ভোটার রয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি নন্দীগ্রামে হারের পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বেশি সচেতন। সেই কারণেই হিন্দিভাষী ভোটাদের মন পেতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কারণ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল রুদ্রনীল ঘোষকে। এবার তুলনায় শক্তিশালী অবাঙালি প্রিয়াঙ্কা টিবলেওয়ালকেই প্রার্থী করে ভোট বৈতরনী পার হয়ে চাইছে গেরুয়া শিবির।
পাহাড়ে না চড়েই হিমালয়ের ৮টি শৃঙ্গ ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগ , এই সফরে রেকর্ড বুকে নাম তোলার হাতছানি
ময়ানমারে সেনার বিরুদ্ধে সাধারণ নাগরিকদের যুদ্ধ, শরণার্থীদের দ্বিতীয় তরঙ্গ মিজোরামে
অন্যদিকে বিধানসভা ভোটের আগে একের পর এক সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট প্রচারে আসা যোগী আদিত্যনাথ, অমিত শাহ এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বহিরাগত হিসেবে আক্রমণ করেছিলেন। পাশাপাশি হিন্দিভাষী অধ্যুষিত বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে বহিরাগতদের দিয়ে ভোটে অশান্ত করার অভিযোগও তুলেছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই কারণে যদি কোনও হিন্দিভাষী ভোটারের মনে অসন্তোষ তৈরি হয় তাহলে তা যেন ভবানীপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে কোনও রকম আঁচ ফেলতে না পারে তার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন মমতা। তেমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হিন্দি দিবস উপলক্ষ্যে টুইটের পর থেকেই কিছুটা হলে উত্তপ্ত সোশ্যাল মিডিয়া। অনেক নেটিজনই মমতাকে তাঁর হিন্দি দিবসের টুইটের জন্য সমর্থন করেছেন। তবে কেউ কেউ তাঁর সমালোচনাও করেছেন। তাঁর এক সমর্থক নেটিজেন সরাসরি বলেছেন হিন্দি আগ্রাসন নিপাত যাক। অন্য একজন বলেছেন পশ্চিমবঙ্গে কোনও বিদেশি ভাষা চলবে না। তৃণমূলের সমর্থক বলে নিজেকে দাবি করে এক নেটিজেন হিন্দিভাষীদের তোষামদ করতে নিষেধ করেছেন। অন্য এক নেটিজেন তাঁকে মনে করিয়ে দিয়েছেন ভোটের আগে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা।
অন্যদিকে সিপিএম নেত্রী দীপসীতা ধরও সোশ্যাল মিডিয়ায় নাম না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি লিখিছেন, তিনি কেন হিন্দি দিবস উদযাপন করবেন? বাংলা দিবস, তামিল, মালায়লম দিবস বলে কিছু কী আছে? হিন্দি একটি সুন্দর ভাষা। প্রয়োজনে যে তিনি হিন্দি বলনে তাও জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বলছেন, হিন্দি আধিপত্যের কাছে তিনি মাথা নত করবেন না।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভাবনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এই নির্বাচনে জিততে পারলে তবেই টানা তিনবার মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন। ভবানীপুর বিধানসভা নির্বাচনে মমতার প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। প্রার্থী দিয়েছে সিপিএমও।