যতদিন যাচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি ততই ঘোরালো হচ্ছে। লকডাউনের জেরে কি শেষপর্যন্ত মেয়ের কপালে 'লগ্নভ্রষ্টা' অপবাদ জুটবে! স্বাস্থ্য বিধি মেনে নির্ধারিত দিনের অনেক আগেই বিয়ের আসর বসল বীরভূমের মল্লারপুরে। নিষেধাজ্ঞার কারণে বাতিল করতে হল বউভাতের অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: মাস্ক পরেই মালাবদল, লকডাউনে অভিনব বিয়ের আসর খড়গপুরে
পাত্রের নাম কালীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বাড়ি রামপুরহাট থানার দেখুড়িয়া গ্রামে। একমাত্র ছেলের জন্য হন্যে হয়ে পাত্রী খুঁজছিলেন পরিবারের লোকেরা। শেষপর্যন্ত মুর্শিদাবাদের কান্দির ঢলপাড়ায় প্রয়াত অভিমুন্য ও অসীমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র মেয়ের সঙ্গে বিয়ের ঠিক হয় ওই যুবকের। ৪ মে দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু করোনা আতঙ্কে সবকিছু উলটপালট করে দিল! শুক্রবার রাতে মল্লারপুরের পাহানা গ্রামে নমো নমো করে বিয়ে সারলেন কালীপ্রসাদ। বরযাত্রী গিয়েছিলেন মাত্র পাঁচজন! সদ্য বিবাহিত ওই তরুণ জানালেন, 'ভেবেছিলাম, তারাপীঠ মন্দিরে বিয়ে করে বাড়িতে অনুষ্ঠান করব। লকাডাউনের কারণে মন্দির বন্ধ, কবে খুলবে ঠিক নেই। যত দিন যাচ্ছে ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। মে মাসের ৪ তারিখে হয়তো আরও কড়াকড়ি হবে। তাই মেয়েকে লগ্নভ্রষ্টা অপবাদ থেকে মুক্তি দিতে অনাড়ম্বরভাবে বিয়েটা সেরে ফেললাম।' কালীপ্রসাদের বাবা অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'ভেবেছিলাম একমাত্র ছেলের বিয়ে ধুমধাম ভাবে দেব। সেই মতো কার্ড ছাপিয়ে বহু বাড়িতে নিমন্ত্রণও করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সব আশায় ছাই ঢেলে দিল করোনা ভাইরাস। কোনরকমে ছেলে গিয়ে বউমাকে সিঁদুরদান করে বাড়িতে নিয়ে এলো।'
আরও পড়ুন: করোনা বিধি মানতে গিয়ে বিপদে ব্যবসায়ী, দিনেদুপুরে লুঠ লক্ষাধিক টাকা
আরও পড়ুন: লকডাউনের বাজারে ত্রাণ 'আত্মসাতের চেষ্টা', অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান
বিয়েতে কন্যা সম্প্রদান করেন পাত্রীর মাসতুতো দাদা বিমল রায়। তিনি বলেন, ছোটবেলাতেই বোন বাবা-মা হারিয়েছে। বহরমপুরে ছোটপিসির বাড়িতে বড় হয়েছে ও। ঠিক ছিল, তারাপীঠ মন্দিরে বিয়ে হবে। সেটা আর হল না। আমার বাড়ি থেকে বিয়ে দিলাম।' দিন কয়েক আগে লকডাউনের মাঝেই বিয়ে আসর বসেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরেও। কন্যাকর্তা হয়ে যাবতীয় দায়িত্ব সামলান স্থানীয় কাউন্সিলর। মাস্ক পরে মালাবদল করেন পাত্র ও পাত্রী।