কৃষকদের আশা ছিল, ফলন হলেই সংসারে একটু বাড়তি আয় হবে। কিন্তু, এই অজানা রোগের হানায় বিঘার পর বিঘার জমির ফসল নষ্ট হতে চলেছে।
ঘরে তোলার একমাস আগেই জমিতে (Field) নষ্ট হয়ে গেল সোনার ফসল আমন ধান (Paddy)। এর জেরে মাথায় হাত কৃষকদের (Farmer)। মালদহের (Malda) চাঁচল-১ নম্বর ব্লকের মৌজার দ্বিফসলী মাঠগুলিতে নষ্ট হচ্ছে বিঘার পর বিঘা ধান। দিশেহারা প্রান্তিক কৃষকরা। এলাকার সিংহভাগ কৃষক ঋণ নিয়ে চাষ করেন, এদিকে ঘরে তোলার আগেই সেই ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কার্যত হতাশ কৃষকরা। কৃষি দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর মালদহের চাঁচল মহকুমার মৌজাগুলিতে বিপুল পরিমাণে ধানের চাষ হয়। মূলত বিবী এগারো,সন্ন মাসুরী, হাজার দশ প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে এবার। চাঁচল-১ ব্লকের মৌজাগুলিতে প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। মরসুম অনুযায়ী আমন ধান চাষে আগ্রহী হয়েছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে ঘরে ফসল তোলার আগেই জমিতে বিঘার পর বিঘা ধানের আগাছা নষ্ট হতে চলছে। আর যার কারণে এলাকায় তীব্র খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- বুথের মধ্যে ভোট দেওয়ার ভিডিও, নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ সায়নদেবের বিরুদ্ধে
কৃষকদের আশা ছিল, ফলন হলেই সংসারে একটু বাড়তি আয় হবে। কিন্তু, এই অজানা রোগের হানায় বিঘার পর বিঘার জমির ফসল নষ্ট হতে চলেছে। মুলাইবাড়ির এক কৃষক আখতার হসেন বলেন, "১৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়ে জমিতে চাষ করেছিলাম। কিন্তু, ধানের শিষ আর ফুটল না। জমিতেই সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আগাছা শুকিয়ে ও পাতা লালচে হয়ে জমিতে নেতিয়ে পড়েছে চারা। কোন রোগে আক্রান্ত তা বুঝে উঠতে পারছি না।" সরকার ক্ষতিপূরণে উদ্যোগী না হলে পথে বসতে হবে কৃষকদের। তাই অবিলম্বে তাঁরা ক্ষতিপূরণে দাবি জানিয়েছেন।
আরও এক কৃষক আসাদ আলি বলেন, "প্রায় তিন বছর ধরে এই অজানা রোগের হানা পড়ছে কৃষিজমিতে। এবারও আমার প্রায় আট বিঘে নষ্ট হল। ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। সামনেই মেয়ের বিয়ে। কীভাবে মেয়ের বিয়ের খরচ বহন করব তা ভেবে কূল পাচ্ছি না। কৃষি দফতরের আমাদের নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।"
আরও পড়ুন- সকাল সকাল ইভিএম কারচুপির অভিযোগ প্রিয়াঙ্কার, মিথ্যে বলে দাবি ফিরহাদের
আমন ধান নষ্ট হওয়ার কারণ নিয়ে চাঁচল-১ নম্বর ব্লকের কৃষি অধিকর্তা দীপঙ্কর দেব বলেন, "ব্যাক্টেরিয়া লিফ ব্লাইট, ধসা, মাজরা পোকা রোগও হতে পারে। এছাড়াও একই বীজ বারবার প্রয়োগের ফলেই এই রোগ দেখা দিতে পারে।" ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত দ্বিফসলী মাঠগুলিতে পরিদর্শন করা হয়েছে বলে দাবি কৃষি দফতরের। প্রতিটি মৌজার প্রায় ২৩ হাজার কৃষক শস্যবীমার আওতায় রয়েছেন। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরে তুলে ধরা হয়েছে।