রাজ্য-সহ গোটা দেশ জুড়ে বেকারত্ব সমস্যা। এর মধ্যে নিজেদের পেশা টিকিয়ে রাখতে মরিয়া বিভিন্ন সংস্থার শিক্ষক-সহ অন্যান্য বিভাগের কর্মীরা। তাদের দাবি ও উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার সরকারের নজর টানতে আন্দোলন বা প্রতিবাদে সামিল হয়েছে সংকারি সংস্থায় কর্মরত চুক্তি ভিত্তিক কর্মীরা। এইবার সেই দলে নাম উঠে এল পশ্চিমবঙ্গের ৭৮ টি সরকারি কলেজের চুক্তি ভিত্তিক কর্মীদের।
'পেটের দায়ে মরছি আজ, কারিগরি দপ্তরের নেইকো লাজ'-এমন সমস্ত স্লোগান সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের ৭৮টি পলিটেকনিক কলেজে শুরু হয়েছে লাগাতার কর্ম বিরতি। অনির্দিষ্টকালের এই লাগাতার কর্ম বিরতির আজ একাদশতম দিন। কর্মচারীদের বকেয়া বেতন এবং আর্থিক বঞ্চনার প্রতিবাদে এই কর্ম বিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীরা। পশ্চিমবঙ্গের ৭৮ টি সরকারি কলেজে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের এই সিদ্ধান্তের জেরে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর পলিটেকনিক সহ রাইপুর,গয়েশপুর, ঘাটাল, মেদিনীপুর সদর সহ অধিকাংশ পলিটেকনিক কলেজ গুলির শিক্ষাব্যবস্থা আপাতত শিকেই উঠেছে।
আরও পড়ুন- মমতার স্বপ্নের ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন কলকাতায়, অথচ ব্রাত্য় খোদ মুখ্য়মন্ত্রী
২০১৫সাল থেকে যে সমস্ত নতুন পলিটেকনিক কলেজ চালু হয়েছে সেই সমস্ত কলেজ গুলিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে এই সমস্ত চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীরা বলে দাবি আন্দোলন কারীদের। এসব কলেজের অধিকাংশগুলি চলে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের ওপর ভরসা করে।দক্ষতার সঙ্গে এই সমস্ত চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা বিভিন্ন বিভাগে নিযুক্ত। তবে তাঁদের দাবি তাঁরা আর্থিক ভাবে বঞ্চিত। কারণ চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন পরিকাঠামো বেশ কয়েক বছর যাবত ধরে একই রকম অবস্থায় রয়ে গিয়েছে। বদল হয়নি এতটুকু। রঘুনাথপুর পলিটেকনিকের আন্দোলনকারী কর্মী প্রণয় মন্ডল ও সৌরভ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "একজন স্থায়ী কর্মচারির সঙ্গে তাদের বেতনের পার্থক্য প্রায় ৫০হাজার টাকা। তাঁদের দাবি মানা না হলে এই আন্দোলন লাগাতার চলবে বলে সাফ জানিয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও বিগত ছয় মাস থেকে অধিকাংশ চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী বিনা বেতনে কাজ করে চলেছেন। বারবার কারিগরী দপ্তরের মন্ত্রী ও আমলাদের এ বিষয়ে জানানোর পরও কোনও সুরাহা হয়নি। মিলেছে শুধুই মিথ্যা আশ্বাস। তাই বাধ্য হয়ে তারা আজ কর্মবিরতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।" ফলে এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই পলিটেকনিক কলেজগুলোতে শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু হওয়া নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের কারিগরী দপ্তরের সিদ্ধান্তের ওপর। রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেন আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে পড়ুয়া-সহ চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরা।