ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে অনেকটাই পিছনে ফেলে এগিয়ে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও জেতার বিষয়ে তৃণমূলের পাশাপাশি আশাবাদী ছিল বিজেপিও। কিন্তু, কয়েক রাউন্ড গণনার পরই বিজেপির মুখের কথার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল পাওয়া যাচ্ছে না।
গণনা এখনও জারি রয়েছে। জয়ী-পরাজিতর নাম এখনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু, সকালে ভোট গণনা (vote Counting) শুরুর পর থেকেই রাজ্যের তিনটি আসনেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। কয়েক রাউন্ড ঘোষণা হওয়ার পরই কিছুটা হলেও পরিষ্কার হয়ে যায় ছবিটা। ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে (BJP Candidate Priyanka Tibrewal) অনেকটাই পিছনে ফেলে এগিয়ে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যদিও জেতার বিষয়ে তৃণমূলের পাশাপাশি আশাবাদী ছিল বিজেপিও। কিন্তু, কয়েক রাউন্ড গণনার পরই বিজেপির মুখের কথার সঙ্গে বাস্তবের অনেকটা পার্থক্য দেখা যায়। একদিকে যখন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা মমতার বাড়ির সামনে উল্লাস (TMC Celebration) করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই সকাল থেকে খাঁ খাঁ করছে বিজেপি পার্টি (BJP Party Office)।
ভবানীপুরের পাশাপাশি জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল, সপ্তম দফায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে (Jangipur and Samserganj Assembly Election) ভোট হওয়ার কথা থাকলেও দুই প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়।৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরের পাশাপাশি জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জ বিধানসভায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়। জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়াই করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন, বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাস এবং আরএসপি প্রার্থী জানে আলম মিঞা। অন্যদিকে, সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছেন। তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম, বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষ, কংগ্রেস প্রার্থী জৈদুর রহমান, এবং সিপিআইএম প্রার্থী মোদাসসর হোসেন। আজ ভবানীপুরের পাশাপাশি এই দুই কেন্দ্রেও গণনা চলছে। দুটি কেন্দ্রেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন- ভবানীপুরে চলছে গণনা, নেত্রীর জয় চেয়ে পুরুলিয়ায় ধামসা মাদল বাজিয়ে পুজো তৃণমূলের
এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছিল গোটা রাজ্যে। তবে সবথেকে হাইভোল্টেজ আসন হল ভবানীপুর। এই আসনের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেছিলেন মমতা। কিন্তু, সেখানে মাত্র কয়েকটি ভোটের ব্যবধানে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে তিনি হেরে যান। অন্যদিকে ভবানীপুর আসনের তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রুদ্রনীলকে হারিয়ে এই আসনে তিনি জিতেছিলেন। কিন্তু, তারপরই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। ফলে এই আসনে উপনির্বাচন নিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী পদ ধরে রাখার জন্য নভেম্বরের মধ্যে মমতাকে যে কোনও একটি আসন থেকে জিততে হবে। এরপর হাতের তালুর মতো চেনা ভবানীপুর থেকেই উপনির্বাচনে প্রার্থী হন মমতা। ২০১১ সাল থেকে এই আসন নিজের দখলে রেখেছেন তিনি। আর এবারও সেই আসন তাঁর দখলেই থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তাই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মমতার প্রাপ্ত ভোট দেখে তাঁর জয়ের ব্যাপারে এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যান অনুগামীরা। সেই কারণে তাঁর কালীঘাটের বাড়ির সামনে আবির খেলায় মেতে ওঠেন কর্মী-সমর্থকরা। অন্যদিকে, ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেন থেকে হেস্টিংসের বিজেপি কার্যালয়ের ছবিটা একেবারেই আলাদা। এখন পিন পড়ার নীরবতা বিরাজ করছে সেখানে। যে কজন বিজেপি কর্মীদের আনাগোনা চোখে পড়ছে তাতে সবাই যেন গা ভাসিয়ে দিয়েছে। মনে হচ্ছে তাঁরা ফলাফল জেনেই গিয়েছে। কর্মী-সমর্থকদের কোনও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপির কোনও প্রথম সারির নেতাকে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন- 'খুব ভাল ফল হবে, বিরাট মার্জিনে জিতবেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়', চ্যালেঞ্জ ফিরহাদের
রবিবার সকালে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল গণনাকেন্দ্রে রয়েছেন। মাঝেমধ্যে দৌড়াদৌড়ি করছেন। তবে সেক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা হয়নি। ইভিএমে একের পর এক রাউন্ডে গণনা শেষে মমতার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে যান তিনি। একই ছবি ধরা পড়েছে সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরেও। যদিও নির্বাচনী প্রচার থেকে গণনা পর্যন্ত নিজের জয়ের বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু, আজ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে সেই পরিস্থিতি। কোনও বিশাল পরিবর্তন না হলে ভবানীপুরের ফলাফলের তেমন কোনও পরিবর্তন হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সেই কারণেই গণনা শুরুর পরই নিস্তব্ধ হয়ে রয়েছে বিজেপি কার্যালয়।