শ্মশানে পড়ে মৃতদেহের সারি, নয়া নিয়মের গেড়োয় তারাপীঠে বন্ধ দাহ

  • নতুন নিয়মের গেড়ো
  • তারাপীঠ শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করতে হয়রানি
  • মৃত্যু শংসাপত্র নিয়ে পুলিশি হয়রানি
  • রীতিমত সমস্যায় শবযাত্রী থেকে পরিবারের সদস্যরা

নতুন নিয়মের গেড়োয় তারাপীঠ শ্মশানে মৃতদেহ দাহ করতে হয়রানির শিকার আত্মীয়রা। কথায় বলে শ্মশানে শান্তি। মানুষ মরে হয়তো শান্তি পেয়েছেন, কিন্তু তাঁর মৃত্যুর কারণে শান্তি উড়েছে পরিবারের সদস্যদের। মৃতের মৃত্যু শংসাপত্র নিয়ে পুলিশি হয়রানিতে ঘাম ছুটছে শবযাত্রী থেকে পরিবারের সদস্যদের। প্রয়োজনীয় শংসাপত্র যোগাড় করতে গিয়ে শ্মশানেই মৃতদেহ পরে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। 

তারাপীঠ শ্মশানে নিকট আত্মীয়ের মৃতদেহ দাহ করতে গিয়ে এমন অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন অনেকে। একটা সময় ছিল যখন তারাপীঠ শ্মশানে যে কেউ শংসাপত্র ছাড়াই শবদাহ করতে পারতেন। কিন্তু কোন কোনও ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক মৃতদেহও পুড়িয়ে প্রমান লোপাটের অভিযোগ উঠছিল। এরপরেই শ্মশান রক্ষা কমিটি কোন একটি শংসাপত্র নিয়ে শব দাহ করার নিয়ম চালু করে।

Latest Videos

তারাপীঠ মন্দিরের সেবাইত, শ্মশান কমিটির প্রাক্তন সদস্য পুলক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগে এখানে যে কেউ মৃতদেহ দাহ করে চলে যেত। কেউ যাতে খুন করে গোপনে মৃতদেহ দাহ করতে না পারে তার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বাড়িতেই স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে কোন চিকিৎসক কিংবা জনপ্রতিনিধির শংসাপত্র নিয়ে দাহ করা যাবে। এতদিন এভাবেই শবদাহ করা যেত। 

কিন্তু কোনরকম প্রচার ছাড়াই কোভিড পরিস্থিতিতে সেই নিয়ম বদলে পুলিশ দুটি শংসাপত্র দাবি করায় বিপাকে পড়ছেন শবযাত্রী থেকে মৃতের নিকট আত্মীয়রা। নিয়ম চালু করার আগে তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো উচিত ছিল”। প্রসঙ্গত, কোনরকম প্রচার কিংবা নোটিশ ছাড়াই নতুন নিয়ম চালু করায় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে মৃতের পরিবারের সদস্যদের। 

শনিবার বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রামপুরহাট পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ষাটোর্দ্ধ বাবলি লেট। শ্মশানের নিয়ম মেনে পরিবারের সদস্যরা এক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের থেকে মৃত শংসাপত্র নিয়ে যান। তারাপীঠ থানায় ওই শংসাপত্র জমা দিলে পুলিশ পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেয় করোনায় মারা যাননি এই মর্মে জনপ্রতিনিধির শংসাপত্র প্রয়োজন। 

একে শনিবার, তারপর সন্ধ্যা গড়িয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন মৃতের আত্মীয় থেকে পরিবারের সদস্যরা। ফের তাদের রামপুরহাট ছুটতে হয়। এই করতেই গড়িয়ে যায় কয়েক ঘণ্টা। ততক্ষনে মৃতদেহ শ্মশানে আগলে থাকতে হয়েছে পরিবারের সদস্যদের। মৃতের জামাই অরুপ লেট বলেন, “আগে জনপ্রতিনিধি কিংবা চিকিৎসকের শংসাপত্র হলেই চলত। কিন্তু এখন নতুন নিয়ম করা হয়েছে। নতুন নিয়মের কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানালে হয়রানি হতে হত না। আমরা এক সঙ্গে দুটো শংসাপত্র নিয়ে আসতাম”।

রবিবার একই অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন অন্য এক মৃতের পরিবার। এদিন সকালে রামপুরহাট থানার রামরামপুর গ্রামে বার্দ্ধক্যজনিত কারণে মারা যান ষাটোর্দ্ধ ধীরাজ মণ্ডল। পরিবারের সদস্যরা পঞ্চায়েত প্রধানের শংসাপত্র নিয়ে তারাপীঠ থানায় যান। কিন্তু তাদের জানিয়ে দেওয়া হয় চিকিৎসকের শংসাপত্র প্রয়োজন।  বাধ্য হয়ে শ্মশানে মৃতদেহ রেখে ফের তাদের ছুটতে হয় চিকিৎসকের শংসাপত্র জোগাড় করতে। 

মৃতের জামাই তাপস মণ্ডল বলেন, “অনেক মৃতদেহ তারাপীঠ শ্মশানে দাহ করেছি। এতো হয়রানি হতে হয়নি কোনদিন। এখন পুলিশ যে নিয়ম বদলেছে তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো উচিত ছিল। তাহলে আমাদের হয়রানি হতে হত না”।

শ্মশান কমিটির কর্মী সিদ্ধার্থ শঙ্কর প্রামানিক বলেন, “এখন নতুন নিয়ম হয়েছে চিকিৎসক এবং জনপ্রতিনিধিদের শংসাপত্র দুটোই লাগবে। একই সঙ্গে শংসাপত্রে লিখে দিতে হবে করোনায় মারা যায়নি। তবেই মৃতদেহ দাহ করা যাবে”।

তারাপীঠ থানার ওসি তরুণ চট্টরাজ বলেন, “করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ দাহ করা যাবে না আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এছাড়া শ্মশান কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই মতো আমরা কাজ করছি। সেই সমস্ত কাগজ না পেলে আমরা দাহ করার অনুমতি দিতে পারব না। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই”।

Share this article
click me!

Latest Videos

Nimtala Fire Incident: মধ্যরাতে ঘুম ভাঙলো এক হাড়হিম করা দৃশ্যে! শোকের ছায়া গোটা এলাকায়, দেখুন
'দুর্নীতি করবে বলেই এরা এই প্রকল্প চালু করেছে' ট্যাব দুর্নীতিতে সরব অধীর রঞ্জন চৌধুরী
ট্যাবের টাকা মুহূর্তে হাওয়া! কাদের অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে , এবার গোসাবায় | Bengal Tab Scam | Gosaba
Narendra Modi Live: আদিবাসী গর্ব দিবস পালনে মোদী, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘জনগণের কষ্টের টাকায় মুখ্যমন্ত্রী উৎসব করবেন!’ মমতাকে ধুয়ে দিলেন সুকান্ত, দেখুন কী বললেন | Sukanta M