স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, ভাঙন রোধে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে কাজ করুক। তা না হলে গঙ্গার তাণ্ডব বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
বুধবার গভীর রাত থেকে অঝোরে শুরু হওয়া দফায় দফায় বৃষ্টির জেরে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) একাধিক এলাকায় ভয়াবহ ভাঙ্গন (Terrible erosion) দেখা দিতে শুরু করেছে গঙ্গার পাড়ে(banks of the Ganges)। যার মধ্যে ধুলিয়ান পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড সহ শামসুর গঞ্জের এলাকায় একের পর এক বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কোথাও কোথাও আবার দোতলা বাড়ি ঝুলে রয়েছে। সেটি তলিয়ে যাওয়া সময়ের অপেক্ষামাত্র। পুরসভার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নদী থেকে কিছুটা দূরে রয়েছে। সেটিও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফলে পুর এলাকা জুড়ে ব্যাপক পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তারমধ্যে, ১৪,১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, ভাঙন রোধে কেন্দ্র ও রাজ্য যৌথভাবে কাজ করুক। তা না হলে গঙ্গার তাণ্ডব বন্ধ করা সম্ভব হবে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে ভাঙন শুরু হলেও তা রোধ করার জন্য কেউই উদ্যোগী হয়নি। বালির বস্তা ফেলে কয়েকটি এলাকায় পরিস্থিতি সাময়িকভাবে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা কোনও কাজেই আসেনি।
ফলে রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির জেরে পরিস্থিতি আরও বীভৎস আকার ধারণ করেছে।কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বস্তাগুলি জলে তলিয়ে গিয়েছে। ১৮নম্বর ওয়ার্ডের লালপুর এলাকার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। পুরো পাড়া বিপন্ন হওয়ার পথে।ধুলিয়ান শহরের তৃণমূল নেতা মেহেবুব আলম বলেন, মূল শহর থেকে গঙ্গা খুব বেশি দূরে নেই। এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে শহরের অবস্থা যেকোনো মুহূর্তে খারাপ হবে। আরও অনেক বাড়ি তলিয়ে যাবে। কোনওভাবেই ভাঙন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। যত দিন যাচ্ছে গঙ্গা তত ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
এলাকার বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন, সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন চলছে। শিবপুর, ধূসরীপাড়া, দুর্গাপুর এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধূলিয়ান শহরেও ভাঙন শুরু হয়েছে। এত বড় কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা দরকার রয়েছে"।
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি সুজিত দাস বলেন, রাজ্য সরকার ভাঙন রোধের জন্য উদ্যোগী হচ্ছে না। মাঝেমাঝে বালির বস্তা ফেলে নেতাদের পকেট ভরানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবনাচিন্তা করছে।
এদিন স্থানীয় বাসিন্দারা নিজাম শেখ বলেন, অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে রাস্তার পাশে দিন কাটাচ্ছে সবাই। বালির বস্তা না ফেলে ভালোভাবে পাথর দিয়ে পাড় বাঁধানো হোক"।