এবছরের পুজো মাটি করতে হাজির ডেঙ্গু? আক্রান্তের সংখ্যা পেরোল ১৫ হাজার

প্রথমে ২৬ শে সেপ্টেম্বর থেকে ১ লা অক্টোবর পর্যন্ত এই অভিযান চলবে এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১ই অক্টোবর থেকে ১৬ই অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলি সহ অন্যান্য এলাকাতেও চলবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার এই অভিযান। সম্পূর্ণ বিষয়টিতে নজরদারি রাখবেন পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসাররা।

Parna Sengupta | Published : Sep 22, 2022 3:49 PM IST

ডেঙ্গি সংক্রমণে লাগাম লাগাতে চাইছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরকেও । এক সপ্তাহে হাওড়া জেলা জুড়ে ৫১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গোটা রাজ্যে ১৫ হাজার পার করেছে আক্রান্তের সংখ্যা। নিম্নচাপের জেরে বর্ষা তার দাপট দেখাতেই বেড়েছে মশার উপদ্রব। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। তাই পুজোর আগেই রাজ্যের তরফ থেকে এই ডেঙ্গি রোধ করার জন্য একটি বড় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুজোর আগে এবং পুজোর পরে রাজ্যের সমস্ত পৌরসভার অধীনস্থ এলাকায় চলবে সাফাই অভিযান।

প্রথমে ২৬ শে সেপ্টেম্বর থেকে ১ লা অক্টোবর পর্যন্ত এই অভিযান চলবে এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১ই অক্টোবর থেকে ১৬ই অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলি সহ অন্যান্য এলাকাতেও চলবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার এই অভিযান। এই দু-দফার সাফাই অভিযানে রাজ্যের সমস্ত পৌরসভার অন্তর্গত থাকা এলাকার ফাঁকা জমি, ড্রেন এবং জলাজমি পরিষ্কার  করার দায়িত্ব দেওয়া হবে নির্দিষ্ট দলকে। সম্পূর্ণ বিষয়টিতে নজরদারি রাখবেন পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসাররা। পুজোর আগে এবং পুজোর পরে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে কন্ট্রোলিং মনিটরিং অফিসারদের প্রত্যেকটি পৌরসভার অন্তর্গত ওয়ার্ডগুলি পরিদর্শন করতে হবে।

এদিকে, সোমবার পশ্চিমবঙ্গে রেকর্ড গড়ল ডেঙ্গির দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্যে এই প্রথমবার আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল প্রায় ৯০০। মঙ্গলবার মোট ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ৯৬৫ জন। এর আগে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এত বেশি সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হননি। এবার প্রাণ কাড়ল ডেঙ্গু। সূত্রের খবর কলকাতায় আরও এক ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হল। মৃত ব্যক্তি বাঁশদ্রোণীর বিধানপল্লির বাসিন্দা। তবে তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে হৃদরোগ মৃত্যুর কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যে ১৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। 

পুরসভার যে সমস্ত ওয়ার্ড বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে সেখানে অতিরিক্ত সাফাইকর্মী নিযুক্ত করা হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে হাওড়া পুরসভা একসঙ্গে এই অভিযানে সামিল হয়েছে। বড় বড় রাস্তার মোড়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মীরা প্রতিনিয়ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষদের সচেতন করছেন। প্রতিটি অঞ্চলে ৪০৬ জন অতিরিক্ত স্প্রে ম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে। 

এদিকে, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টি ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ।  ই এম বাইপাস লাগোয়া অনেকগুলি ওয়ার্ডে ডেঙ্গি বেড়ে চলেছে হু হু করে। কলকাতার ২৫টি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে ‘ফিভার ক্যাম্প’। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কলকাতার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুর রোড, ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, বেলতলা বস্তি, আহিরীপুকুর ফার্স্ট লেন, ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের এ কে মহম্মদ সিদ্দিকি লেন, নবাব আবদুল রহমান স্ট্রিট, ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালীঘাট রোড, কালী টেম্পল রোড, মহিম হালদার স্ট্রিট, নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিটও ডেঙ্গিপ্রবণ। 

শহর বাদ দিলে জেলাগুলির মধ্যে উত্তর ২৪ পরগণা জেলাতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। সল্টলেক, দক্ষিণ দমদম, টিটাগড়ের পাশাপাশি দেগঙ্গা, বারাসত-১, স্বরূপনগরের মতো গ্রামীণ এলাকাতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা উর্ধ্বমুখী বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। উত্তর ২৪ পরগনার পর দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং দার্জিলিঙেও বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা।

Share this article
click me!