কেলেঘাইয়ের এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে 'জলের তলায় ৪০ হাজার পরিবার'। শিলাবতীর জলের তলায় গেল ঘাটাল থানা এলাকা, বন্যায় ভেসে বিদ্যুৎ দপ্তরের এক কর্মীর মৃত্যু।
নদীর জলের তোড়ে ভাসল দুই মেদিনীপুর। একদিকে পূর্ব মেদিনীপুরে কেলেঘাইয়ের এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে 'জলের তলায় ৪০ হাজার পরিবার'। অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরে শিলাবতীর জলে পুনরায় জলের তলায় গেল ঘাটাল থানা এলাকা।
আরও পড়ুন, আজ ঘূর্ণাবর্তের জেরে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বর্ষণ, রবিবারেও ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
পূর্ব মেদিনীপুর: কেলেঘাইতে ভাঙল নদী বাঁধ, জলের তলায় ৪০ হাজার পরিবার, নামল স্পিড বোর্ড
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর কেলেঘাই আমগেছিয়ার ডাকবাংলোর কাছে ছিটকিনি এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙেছে। চিশতী পুর ১ নম্বর, ২ নম্বর, গোপালপুর, অমর্ষি ১ -২ নম্বর, ব্রজলাল পুর, বরহাট, এইসব এলাকাগুলো প্রচন্ড ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রায় তিন হাজার পরিবারকে সরানো হয়েছে উঁচু স্থানে। জলের তোড়ে একজন গ্রামের মানুষ তলিয়ে তলিয়ে গেছে।পটাশপুরে উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে স্পিড বোর্ড। স্পিডবোটে করেই বিধায়ক উত্তম বারিক নিজেই এলাকায় এলাকায় যাচ্ছেন আর উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত জলের তলায়। বিধায়ক উত্তম বারিক জানালেন,' এলাকায় ৫৫ হাজার পরিবারের মধ্যে ৪০ হাজার পরিবার জলের তলায়। নৈপুর, বরহাট, গোকুলপুর, চিস্তিপুর এক দুই, বারচৌকা সহ বিভিন্ন অঞ্চল গুলি জলের তলায়। গর্ভবতী মায়েদের প্রথমে উদ্ধার করা চলছে। উদ্ধার করা হচ্ছে বাচ্চা ও মায়েদেরও। ইতিমধ্যেই গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে।'
পশ্চিম মেদিনীপুর: শিলাবতীর জলের তলায় গেল ঘাটাল থানা এলাকা, মৃত্যু ১
শিলাবতীর জলে পুনরায় জলের তলায় গিয়েছে ঘাটাল থানা এলাকা। রাজ্য সড়ক ও গ্রামীণ সড়কগুলিও জলে ডুবে রয়েছে। তাই ডিঙি নৌকায় চড়ে চলছে পারাপার। প্রসঙ্গত, গত তিন মাসে এই নিয়ে তৃতীয় বার বন্যার ভোগান্তির মুখে ঘাটাল। শিলাবতী ও ঝুমি নদীর জল বেড়ে প্লাবিত ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। গত দু'দিনে বন্যার জলে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এবং এক মহিলাও নিখোঁজ। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরে সতর্কবার্তা পেয়েই চরম দুশ্চিন্তায় ঘাটালবাসী। কারণ কয়েক দিনের বর্ষণের জল বেড়ে শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত ঘাটালের শহর ও গ্রামীণ ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা।
আরও পড়ুন, Malda: অজানা জ্বরে ফের আরও ১ শিশুর মৃত্যু, আজই মলদহে যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল
ঘাটাল মহকুমা: রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরে বিশ্বকর্মা পুজো সেরে ফেরার সময় বন্যার জলে ভেসে গিয়ে মৃত্যু ১ পুরোহিতের
ঘাটাল মহকুমার দাসপুরেও প্লাবিত বহু এলাকা। ইতিমধ্যেই বন্যার জলে তলিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যায় । বিদ্যুৎ দপ্তর এর অফিসে বিশ্বকর্মা পুজো দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে পরিবারের লোকজনের সামনে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর ষাটের দিলীপ হোড় নামে এক ব্যক্তির। মৃতের ছেলে রাজকুমার হড় জানিয়েছেন, 'বিদ্যুৎ দপ্তর অফিসে বিশ্বকর্মা পূজো সেরে বাবা-মাকে নিয়ে ফেরার সময় স্রোতে হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ ভেসে যায় বাবা। দ্রুত কোনভাবে উদ্ধার করে আনলেও পেটে জল ঢুকে গিয়ে সমস্যা হয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সমস্যার কারণে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। সেখানে মৃত্যু হয় বাবার।'
মৃতের ছেলে রাজকুমার হোড় বলেছেন, 'একইভাবে আরও এক মহিলা নিখোঁজ রয়েছে ঘাটালে। ঘাটাল পৌরসভার ১৩ টি ওয়ার্ড প্লাবিত সাথে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির প্রায় দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত। পরপর তিনবার বন্যায় বিপর্যস্ত ঘাটালের মানুষ। রাজ্য সড়কসহ গ্রামীণ সড়ক গুলি জলের তলায় থাকায় নৌকায় চড়ে চলছে পারাপার। আবারো ঘাটাল থানার সামনে জল উঠেছে।' ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানিয়েছেন,'আস্তে আস্তে ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ।এখনও পর্যন্ত বন্যার জলে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে, একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা