রেশন কার্ড পাওয়া বা ভুল সংশোধন করা তো বটেই, গ্রামীণ কৃষকদের ধান বিক্রি করার কাজও এবার সহজতর করে দিল রাজ্যের খাদ্য দফতর। জেনে নিন কীভাবে নিজেই তৈরি করতে পারবেন নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের রেশন কার্ড।
নিজের রেশন কার্ড বানিয়ে নিন নিজেই। রেশন কার্ড তৈরির বিশেষ সুবিধা পাবেন বাংলার মানুষ। সম্প্রতি এমনই ব্যবস্থা করল রাজ্যের খাদ্য দফতর। পুজোর আগেই এই সুবিধার জন্য একটি বিশেষ অ্যাপ তৈরি করেছে খাদ্য দফতর। নতুন অ্যাপটির নাম, ‘খাদ্যসাথী - আমার রেশন মোবাইলে অ্যাপ’। এই অ্যাপটির মাধ্যমে যে কোনও ব্যক্তি ঘরে বসে রেশন কার্ড সংক্রান্ত সমস্ত পরিষেবাগুলিও হাতের মুঠোয় পেতে পারবেন। এই উপায়ে নয়া রেশন কার্ডের জন্য যেমন আবেদনও করা যাবে, তেমনই কোনও মৃত ব্যক্তির রেশন কার্ড বাতিল করা, রেশন কার্ডের ভুল সংশোধন করা, ইত্যাদি কাজও এই অ্যাপটির মাধ্যমে সহজেই করা যাবে। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজ্যের সব দফতরকেই ই-গভর্ন্যান্স এর উপর জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই কারণে খাদ্য দফতর রেশন পরিষেবার ক্ষেত্রে ই-গভর্ন্যান্স আনার জন্য বহু দিন ধরে চেষ্টা চালিয়েছে। আধুনিক যুগে প্রায় প্রত্যেক মানুষই মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাই রেশন পরিষেবার সঙ্গে মোবাইলটিকেও যুক্ত করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের গুগ্ল প্লে স্টোর কিংবা আইফোনের অ্যাপ স্টোরে গেলে খাদ্য দফতরের এই অ্যাপটি সহজেই ডাউনলোড করা যাবে।
‘খাদ্যসাথী - আমার রেশন মোবাইলে’ অ্যাপটি শুধুমাত্র রেশন সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই সাধারণ মানুষকে সাহায্য করবে না, গ্রামীণ কৃষকদের জন্য ধান কেনাবেচার জায়গা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিক। কৃষকরা নিজেরাই নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ধান বেচার কেন্দ্র এবং তারিখ নির্ধারণ করতে পারবেন এই অ্যাপটির দ্বারা। রাজ্যের খাদ্য দফতর জানিয়েছে যে, কোনও কৃষক সরকারি স্তরে ধান বিক্রি করতে চাইলে তাঁকে খাদ্য দফতরের একটি বিশেষ পোর্টালে গিয়ে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। নাম নথিভুক্তিকরণের পর একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাবেন ওই কৃষক। সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি নিয়ে ‘খাদ্যসাথী’ অ্যাপটির ভেতরে নিয়ম মেনে আবেদন করলেই অ্যাপ জানিয়ে দেবে যে, কৃষক নিজের পছন্দ মতো জায়গার কোন কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে পারবেন এবং সেটা কত তারিখে। ধানের বিক্রয়কেন্দ্র নিয়ে গ্রামীণ কৃষকদের মধ্যে যে বিভ্রান্তিগুলি থাকে, এই সুবিধার ফলে সেগুলি সহজেই মিটিয়ে ফেলা যাবে বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দফতর।
নতুন চালু করা অ্যাপটির মাধ্যমে রাজ্যে রেশন কার্ড ও ধান বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারার সাফল্যকে একটি বড় ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বঙ্গের খাদ্য দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তারা। কারণ, এত দিন নতুন রেশন কার্ড পেতে, কার্ড বাতিল করতে, তথ্য বদল করতে অথবা কার্ডের কোনও ভুল সংশোধন করতে অনেক জটিল ও ঝঞ্ঝাটপূর্ণ পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হত বাংলার মানুষকে। একই সঙ্গে ধান বিক্রয় করা নিয়েও কৃষকদের অভিযোগের শেষ ছিল না। নতুন এই অনলাইন ব্যবস্থার ফলে যাবতীয় সমস্যা দূরীভূত হবে বলেই আশা করছেন খাদ্য দফতরের কর্তারা।
আরও পড়ুন-
নিশুতি রাতে দুলে উঠছে রাজবাড়ির দোলনা, কালীপুজোর অন্ধকারে বল্লভপুরে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের এ কেমন রূপকথা!
‘সৌরভের প্রতি এতই যখন আস্থা ও ভালোবাসা, তখন বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর শাহরুখ কেন’, মমতাকে কটাক্ষ শমিকের
ভারতে হিন্দুরাই সংখ্যায় কম? মোহন ভাগবতের পরামর্শে এবার জন্মনিয়ন্ত্রণ বিল আনতে উদ্যোগী সঙ্ঘের নেতারা