বাণিজ্যিক গাড়িগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য ভেহিক্ল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস বসানো বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এবার এই যন্ত্র বসানো নিয়েও শাসকদলের বিরুদ্ধে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু অধিকারী।
নির্দিষ্ট কোনও যানবাহন কোথায় রয়েছে, অর্থাৎ তার বর্তমান অবস্থান কী, তা জানিয়ে দেয় ‘ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস’ বা ভিএলটিডি। পশ্চিমবঙ্গে বাণিজ্যিক গাড়িগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য ভেহিক্ল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস বসানো বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এবার এই যন্ত্র বসানো নিয়েও শাসকদলের বিরুদ্ধে কাটমানি খাওয়ার অভিযোগ তুললেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার আলিপুরে নতুন এই প্রযুক্তি সংযোজন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, তার আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তিনটি টুইট করেন। সেই টুইটগুলিতে তাঁর অভিযোগ, ভিএলটিডি বসানো নিয়েও কাটমানি খাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। একেকটি গাড়িতে ওই প্রযুক্তি লাগাতে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে, রাজ্য পরিবহণ দফতর প্রতিটি গাড়ির জন্য ১২ হাজার টাকা খরচ হবে বলে স্থির করেছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ থেকে রাজ্যের শাসকদল কাটমানি খাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলাবাহুল্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী এবং শাসকদলের শীর্ষ নেতাদের দিকেই রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের তীর।
যদিও বিজেপি নেতার এই অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ রাজ্যের পরিবহণ দফতর। এই দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের বক্তব্য, দফতরের তরফে কোনও নির্দিষ্ট খরচের কথা উল্লেখ করা হয়নি। কারোর ওপর খরচের ভার চাপিয়েও দেওয়া হয়নি। ভিএলটিডি বসাতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হবে তা বাজার দরেই ঠিক হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত গাড়িতে ভিএলটিডি লাগাতে ১২টি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক সংস্থাকে এই কাজে অংশগ্রহণ করার আবেদন জানানো হবে, যাতে কম খরচে মালিকরা এই প্রযুক্তি গাড়িতে লাগাতে পারেন।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল বলেছেন, ‘‘বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে পরিবহণ পরিষেবা পরিচালনা করতে যা যা প্রয়োজন পরিবহণ দফতর ঠিক সেভাবেই কাজ করছে। আর, কে কী অভিযোগ করল, তাতে আমাদের কিছু এসে যায় না। কারণ, আমরা জানি আমরা সঠিক কাজই করছি, যা আগামী দিনে মানুষের কল্যাণে কাজে আসবে। বিরোধিতা করার জন্যই যদি বিরোধিতা করা হয়, তাহলে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাবে না।” তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীই তো ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বলছেন। আর বাংলার ওদের নেতারাই সেই ডিজিটাইজেশনের বিরোধিতা করছেন। এমন দ্বিচারিতা নিয়েও তো প্রশ্ন উঠতে পারে।’’
আরেকদিকে, বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা প্রদীপ নারায়ণ বসু বলেছেন, “ভিএলটিডি লাগানোর যে খরচ আমাদের করতে হবে, তা সত্যিই অনেকটা বেশি। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতর সেই খরচ কমানোর ব্যবস্থা করুক। কারণ আমরাও জানি যে, এই প্রযুক্তি বসাতে কতটা পরিমাণ খরচ হতে পারে।’’
আরও পড়ুন-
গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে চালু হচ্ছে বিশেষ ট্রেন, ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিনও থাকছে বিশেষ সুবিধা
হাইকোর্টে বিচারপতিদের মারামারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ‘সম্পন্ন’-র উদ্বোধন, কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ১০টি খবর
‘কোথায় কী বলতে হয় জানেন না’, জি২০ সম্মেলনে মমতার মুখে বামেদের তিরস্কার শুনে ক্ষুব্ধ বিকাশরঞ্জন