ডিয়ার পার্কে আগের থেকে অনেক বেড়েছে হরিণের সংখ্যা। আনা হয়েছে রং বেরঙের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
এক সময় পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বন্ধ হতে বসেছিল ডিয়ার পার্ক। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় নতুন ভাবে সেজে উঠেছে সেই পার্ক। প্রত্যেকদিন ভিড় হচ্ছে মানুষের। ডিয়ার পার্কে আগের থেকে অনেক বেড়েছে হরিণের সংখ্যা। আনা হয়েছে রং বেরঙের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। গ্রাম্য পরিবেশে শীতকালে এই ডিয়ার পার্কের মনোরম প্রকৃতি পর্যটকদের আরও আকর্ষণ করবে বলে মত কর্তৃপক্ষের। মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বারদুয়ারিতে ২০০৩ সালে তৈরি হয় শিশু উদ্যান এবং ডিয়ার পার্ক।
শুরুর সময় এই পার্কে ছিল ছয়টি হরিণ। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে এই পার্কটি তৈরি করা হয়। কিন্তু পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিনের পর দিন বেহাল হতে থাকে পার্কের অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় বাড়তে থাকে ঝোপঝাড় এবং জঙ্গল। এমন কি খাদ্যের অভাবে মারাও যায় হরিণ। সেই সময় বনদপ্তর থেকে হরিণগুলিকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় উত্তর দিনাজপুরের কুলিক ফরেস্টে। সকলেই ভাবে এবার হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে বারদুয়ারি ডিয়ার পার্ক। কিন্তু স্থানীয়দের চরম বাধার মুখে পার্কটিকে বন্ধ করতে পারেনি প্রশাসন। এলাকাবাসীর দাবি ছিল মনোরম পরিবেশের মধ্যে এই পার্ককে আবার নতুন ভাবে সাজিয়ে তুলতে হবে।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে হরিশ্চন্দ্রপুরের রাজনীতির চিত্র বদল হয়।দীর্ঘদিনের বাম এবং কংগ্রেসের গড় হরিশচন্দ্রপুরে ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতিও তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে যায়। তারপর থেকেই পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয় এই পার্ককে। সৌন্দর্যায়নের জন্য নেওয়া হয় বিভিন্ন পরিকল্পনা। নতুন করে আনা হয় অনেক গুলো হরিণ। চালু হয় বোটিং। তারপর থেকেই দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসতে শুরু করে ফের বারদুয়াররি ডিয়ার পার্কে। বর্তমানে পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের বিডিওর সহায়তায় নিয়ম মত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় বারোদুয়ারী ডিয়ার পার্ক।
আসছে শীতকাল। শীতের মৌসুমে পর্যটকদের আরও ভিড় বাড়বে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ২৭টি হরিণ রয়েছে এই পার্কে। খুব সুন্দর ভাবে তাদের পরিচর্যাও করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য জাকির হোসেন এবং পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম নিজেদের হাতে ঘাস পাতা খাইয়ে দেন হরিণগুলোকে। ক্যামেরাতে ধরা পড়ে সেই অপরূপ দৃশ্যও। এই পার্কে প্রবেশ করতে গেলে মূল্য লাগবে ১০ টাকা। শিশুদের জন্য বিনামূল্যে। প্রবেশ মূল্যের টাকা ব্যবহার হয় হরিণদের খাদ্য তথা পার্ক পরিচর্যার জন্য। এক কথায় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে নবজীবন পেয়েছে বারদুয়ারি ডিয়ার পার্ক এবং শিশু উদ্যান।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম বলেন, এক সময় পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বন্ধ হতে বসেছিল এই ডিয়ার পার্ক। ২০১৮ সালে আমরা পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের পর থেকেই পার্ক কে নব রূপে সাজাযই। আশা করছি শীতকালে মানুষের খুব ভিড় হবে। যেহেতু আমরা সরকার থেকে সহযোগিতা পাই না পঞ্চায়েত সমিতির তহবিল থেকেই পার্কের পরিচর্যা করি। হরিণদের খাদ্য তথা আরো অন্যান্য খরচের জন্য তাই সামান্য প্রবেশ মূল্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ডিম-পাঁউরুটি খাওয়ও কি বিলাসিতা হয়ে যাবে? ডিমের দাম বাড়ায় প্রশ্ন আম জনতার