পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবি নিয়ে আবার সরব হয়েছে কামতাপুর পিপল্স পার্টি। ১২ ঘণ্টা সম্পূর্ণ না হলে রেল অবরোধ থেকে সরা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসেবে পাওয়ার দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক সংগঠনের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আরেকদিকে রয়েছে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবি। সেই দাবি এগিয়ে নিয়ে যেতে ফের গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি শুরু করল ‘কামতাপুর পিপল্স পার্টি’ এবং ‘কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি’ (কেপিপি)। উত্তরবঙ্গের তিন জায়গায় ১২ ঘণ্টা ধরে এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেপিপি)। আর এই অবরোধ কর্মসূচির জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা বাংলার রেল পরিষেবা।
কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং মালদা জেলায় ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি নিয়েছে কেপিপি। মঙ্গলবার সকালে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি স্টেশনে থমকে গেছে শিয়ালদাগামী ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। দাঁড়িয়ে পড়ে মালগাড়িও। ট্রেন চলাচলে বিঘ্নের কারণে প্রবল অসুবিধায় পড়লেন যাত্রীরা। উত্তরবঙ্গের একাধিক স্টেশনে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। ৩ দিন ধরে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা ধরে ট্রেন অবরোধ করার ডাক দিয়েছে এই সংগঠন। এর জেরে কোচবিহারগামী ট্রেনগুলিকে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার কেপিপির আন্দোলনের জেরে আলতাগ্রাম স্টেশনে আটকে পড়ে মালগাড়ি। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি স্টেশনে ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি নিয়ে সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে দাঁড়িয়ে পড়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। রেল লাইনে বসে পড়ে অবস্থান বিক্ষোভে অনড় থাকেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্টেশনে স্টেশনে মোতায়েন করা হচ্ছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
সারা সকাল জুড়ে কেপিপি-র এই আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়েছে প্যাসেঞ্জার ট্রেন এবং মালগাড়ি। দিনের একেবারে শুরু থেকে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় প্রবল সমস্যার মধ্যে পড়েছেন যাত্রীরা। শীতের শুরু থেকেই উত্তরবঙ্গে পর্যটকদের ভিড় জমেছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আজ কলকাতায় ফিরছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। অনেক যাত্রী স্টেশনে এসে ঘুরে অন্য পথেও চলে যাচ্ছেন। অনেক যাত্রীরা আবার বাস ধরে গন্তব্যে পৌঁছনোর তোড়জোড় করছেন। বহু যাত্রী আবার ট্রেন থেকে নেমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে জানা গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শিশু থেকে বৃদ্ধ, সমস্ত বয়সের যাত্রীদের জন্য ট্রেন থেমে যাওয়ার যন্ত্রণা ধীরে ধীরে আরও মারাত্মক হয়ে উঠছে। কিন্তু, স্বয়ং যাত্রীদের অনুরোধ সত্ত্বেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ আন্দোলনকারীরা।
উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবিতে আগেও বহুবার আন্দোলন করেছে কেপিপি। ২০২৩ সালের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট। সেই নির্বাচনের আগে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবি নিয়ে আবার সরব হয়েছে কামতাপুর পিপল্স পার্টি। ১২ ঘণ্টা সম্পূর্ণ না হলে রেল অবরোধ থেকে সরা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন-
ভূপতিনগরের বিস্ফোরণস্থলে বিজেপি, বম্ব স্কোয়াডের কর্তাদের সামনেই হুড়মুড় করে তাড়া করলেন তৃণমূল সমর্থকরা
সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘তুইতোকারি’ সম্বোধন, কুরুচিকর পোস্ট করায় সাসপেন্ড উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার
দিল্লি পুর কর্পোরেশন কার দখলে, কী বলছে ইন্ডিয়া টুডে-টাইমস নাও-এনডিটিভি ও এবিপি নিউজের বুথ ফেরত সমীক্ষা