দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে ২৪ ঘণ্টা। তারপরেও দোষারোপের পালা অব্যহত। এবার সরাসরি সেই মালগাড়ির মৃত চালকের বিরুদ্ধেই দায়ের হল এফআইআর।
দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে ২৪ ঘণ্টা। তারপরেও দোষারোপের পালা অব্যহত। এবার সরাসরি সেই মালগাড়ির মৃত চালকের বিরুদ্ধেই দায়ের হল এফআইআর।
গত সোমবার সকালে, রাঙাপানি স্টেশন পেরোনোর ঠিক পরেই ফাঁসিদেওয়ায় দুর্ঘটনার (Kanchanjunga Express Accident) কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। একই লাইনে দুটি ট্রেন চলে আসার ফলেই এই দুর্ঘটনা। একটি মালগাড়ি পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। কার্যত, মালগাড়ির ইঞ্জিনের ধাক্কায় কাঞ্চনজঙ্ঘার বগি উঠে যায় ওপরে। তার নিচ দিয়ে সজোরে ঢুকে যায় মালগাড়ির ইঞ্জিন।
সূত্রের খবর, তুলনামূলক দ্রুতগতিতে চলছিল সেই মালগাড়িটি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের এক মহিলা যাত্রী নিউ জলপাইগুড়ির জিআরপির (GRP) কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, ঘণ্টায় মালগাড়িটির গতি থাকার কথা ছিল ১০ কিলোমিটার। কিন্তু বাস্তবে সেই মালগাড়িটি চলছিল প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৭৮ কিলোমিটার গতিতে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে যে চালকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তিনি সেই মালগাড়ির লোকো পাইলট অনিল কুমার। যার মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলেই। তবে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দুর্ঘটনা এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। নাহলে দুর্ঘটনার আগে মালগাড়ির ইঞ্জিন থেকে লাফিয়ে নেমে যেতে পারতেন অনিলবাবু। নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।
এই দুর্ঘটনা নিয়ে এক নয়, একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। মঙ্গলবার, সাতসকালে মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchanjunga Express)। রেলের তরফ থেকে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৫টা ৫০ মিনিট থেকে রাঙাপানি এবং আলুয়াবাড়ির মাঝে অটোমেটিক সিগন্যাল পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
ফলে, সকাল থেকেই ট্রেন চলাচল করছিল অত্যন্ত ধীর গতিতে। পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিটের (PLCT) মাধ্যমেই চলছিল সবকটি ট্রেন। ঠিক সকাল ৮টা ২৭ মিনিট নাগাদ পেপার মেমো অর্থাৎ, কাগুজে ছাড়পত্র পেয়েই রাঙাপানি স্টেশন ছেড়ে এগিয়ে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchanjunga Express)। জানা যাচ্ছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ‘টিএ৯১২’ ফর্ম দেন রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার।
যার ওপর ভিত্তি করেই সিগন্যাল না থাকলেও নির্দিষ্ট গতিতে ট্রেন নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন চালক। তার কিছুক্ষণ পর, সকাল ৮টা ৪২ মিনিট নাগাদ রাঙাপানি স্টেশন থেকে ছাড়ে ওই মালগাড়িটি। আর এখানেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। দুটি ট্রেনের মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল প্রায় ১৫ মিনিট। পেপার মেমোর ওপর ভিত্তি করে যদি কোনও ট্রেন চালানো হয়, তাহলে ট্রেনের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় কখনোই ১০ কিমির বেশি হতে পারে না।।
যদি তাই হয়, তাহলে কীভাবে পনেরো মিনিট ব্যবধানে চলা দুটি ট্রেন এত কাছাকাছি চলে এল? তাহলে কি কাগুজে ছাড়পত্রের নিয়ম সঠিকভাবে মানেননি চালক? সেই প্রেক্ষিতেই মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে এবার দায়ের হল অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ
কাঞ্চনজঙ্ঘার পিছনে সজোরে ধাক্কা মালগাড়ির! অকেজো ছিল স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল?
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।