রাজ্য় সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর। প্রশিক্ষণ শেষের আগেই রাজ্যে ৯ হাজার পুলিশ কর্মীর পোস্ট হবে।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে সরব হয়েছে রাজ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিশ, বিশষত বিজেপি। কিন্তু রাজ্য সরকার বা রাজ্য নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টের কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ রাজ্যে প্রয়োজনের তুলনা পুলিশ কর্মীর সংখ্যা কম। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। এবার এই দাবির স্বপক্ষেই ঘোরতর অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেছে, রাজ্য পুলিশ কর্মীর ঘাটতি ঢাকতে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার আগেই ৯ হাজার পুলিশ কর্মীকে কাজে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। এই নিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বলেও জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের দিকে। তিনি বলেন, তিনি তাঁর বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানতে পেরেছে, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষের আগেই , আগামী সাত দিনের মধ্যে রাজ্যের ৯ হাজার পুলিশ কর্মীকে জরুরিভাবে বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় চাদের মোতায়েন করতে চায়। সেই কারণেই ৯ হাজের কর্মীর প্রশিক্ষণের সময় কমানো হচ্ছে। নির্বাচনের সময় পুলিশ কর্মীর ঘাটটি মেটাতেই এই উদ্য়োগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। তিনি এই বিষয়ে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা কে অবহিত করেছেন। এই পদক্ষেপটি পুলিশ প্রশিক্ষণ আইন , বিধি ও নিয়ম লঙ্ঘন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেছেন, এটা একটা বেআইনি পদক্ষেপ। ভবিষ্যতের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
রাজ্যে নির্বাচনী কেন্দ্রের সংখ্যা ৬১ হাজার ৬৩৬টি। একেকটি কেন্দ্রে একাধিক বুথ থাকে সেক্ষেত্রে প্রতিটি বুথে যদি ২ জন করে সশস্ত্র পুলিশ ও লাইন ঠিক করার জন্য একজন করে লাঠিধারী পুলিশ দেওয়া হয় তাহলে প্রয়োজন প্রায় ১ লক্ষ ২৩ হাজার ২৭২ পুলিশ কর্মী। অন্যদিকে ভোটের আগের দিন থেকেই নাকা চেকিং, রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে থাকা ও নানাবিধ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ কর্মীদের প্রয়োজন। কিন্তু রাজ্যের হাতে অত পুলিশ কর্মী নেই। সূত্রের খবর রাজ্যে পুলিশ কর্মীর সংখ্যা ৮০ হাজার। তাই বুথপিছু পুলিশ কর্মীর সংখ্যা খুবই কম এই রাজ্যে। সেই কারণে বিজেপি -সহ একাধিক রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। যদিও তাতে এখনও পর্যন্ত সায় দেয়নি রাজ্য সরকার। হাইকোর্ট ২২টি জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই দুই পক্ষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।
যদিও শুভেন্দু অধিকারী আগেই অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যে পোশাক তৈরি হচ্ছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও পুলিশ কর্মীর পোশাকে ভোট ময়দানে নামানো হবে। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই নাবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ কর্মীদের ক্ষেপে ক্ষেপে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন কাজ করার পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাতে রাজ্যের পুলিশ কর্মীর ঘাটতি অনেকটাই কমবে।
আরও পড়ুনঃ
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী, হাইকোর্টকে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন
মালদায় ভোটের বলি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা, ভরদুপুরে মাঝরাস্তায় পিটিয়ে খুন পঞ্চায়েত প্রার্থীকে
মনোনয়নপত্র পরীক্ষা ঘিরে ধুন্ধুমার দিনহাটা, নীশিথের কনভয়ে তীর ছোঁড়ার অভিযোগ উদয়ন গুহর বিরুদ্ধে