শুভ্রাংশু, প্রকৃত অর্থেই অভাবী মেধাবী। কারণ তাঁর বাবা একটি সংস্থার হয় সবজির মিনি ট্রাক চালান। । মা বাড়তি রোজগারের জন্য একটি বুটিকে কাজ করেন।
উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম শুভ্রাংশু সর্দাদের জীবন কিন্তু রূপকথার গল্পের থেকে কোনও অংশে কম নয়। ছোটবেলা থেকেই অভাব নামক এক রাক্ষসের সঙ্গে তাঁকে আর তাঁর বাবা-মাকে লড়াই করতে হয়েছে। যদিও ছেলের পড়াশুনা নিয়ে কোনও রকম আপোশ করেননি তাঁর মা ও বাবা। কিন্তু ডোর দিয়ে বলা যায় না যে ছেলেকে অভাব থেকে দূরে রেখেছিলেন। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে সেই অভাবকে হারিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছেন শুভ্রাংশু সর্দার। আগামী দিনে তিনি গবেষক হতে চান।
শুভ্রাংশু, প্রকৃত অর্থেই অভাবী মেধাবী। কারণ তাঁর বাবা একটি সংস্থার হয় সবজির মিনি ট্রাক চালান। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মালপত্র পৌঁছে দেন। মা সংসার সামলে বাড়তি রোজগারের জন্য একটি বুটিকে কাজ করেন। ছোট থেকেই পড়াশুনায় ভাল শুভ্রাংশু। বাবা ও মা ছোট থেকেই ছেলের প্রতিভা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাই সন্তানের সঙ্গে তাঁরাও অভাবের সঙ্গে লড়াই করে গেছেন। হাল ছেড়ে দেননি। বাড়িতে ছেলের পড়াশুনা করার মত পরিবেশ নেই। সেই সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। তাই উচ্চমাধ্যমিকে ছেলেকে ভর্তি করেছিলেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে।
বজবজের বাসিন্দা শুভাংশু। উচ্চমাধ্যমিক পড়েছিলেন নরেন্দ্র রামকৃষ্ণ মিশন থেকে। করোনাকালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিকই ছিল তাঁর জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষা। শুভ্রাংশুরা দেখিয়ে দিয়েছে পরিচিত কম্বিনেশন ছাড়াও জীবনে সাফল্য পাওয়া যায়। কারণ চিরাচলিত ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি, ম্যাথামেটিক্স, বায়োলজি তাঁর ছিল না। পরিবর্তে তিনি পড়াশুনা করেছেন, অর্থনীতি, অঙ্ক, স্ট্যাটিক্স, আর কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে। আগামী দিনে গবেষক হতে চান শুভ্রাংশু। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬ অর্থাৎ ৯৯.২ শতাংশ। শুভ্রাংশুর কথায় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা আর লক্ষ্যে অবিচল থেকে পড়াশুনা করার জন্যই এই সাফল্য তিনি পেয়েছে। পাশাপাশি জানিয়েছে তাঁর বাবা ও মায়ের পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা তাঁকে সাহায্য করেছেন। তাতেই তাঁর কঠিন পথ চলা অনেকটাই সোজা হয়ে গেছে।
তবে শুভ্রাংশুর এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে তাঁর বাবা ও মায়ের হার না মামা মনোভাব। বাড়িতে পড়াশুনার তেমন পরিবেশ না থাকায় মাধ্যমিকের পরই ছেলেকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে। সেখানে স্বামীজিদের তৎপরতায় শুভ্রাংশু আরও কঠোর পরিশ্রম করেন। তাতেই এই চোখ ধাঁধানো সাফল্য পেয়েছেন বলেও মনে করছেন তিনি। তবে আগামী দিনেও কঠিন লড়াই করে নিজের একটি বিশেষ জায়গা যাতে তৈরি করতে পারেন তারই চেষ্টায় দিনরাত এক করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ
Weather Update: ঝড়বৃষ্টি হলেও অস্বস্তি অব্যাহত কলকাতা ও পাশ্ববর্তী এলাকায়, আজও বৃষ্টির পূর্বাভাস
নতুন সংসদভবন উদ্বোধন বিতর্ক: কেন কংগ্রেসের আপত্তিত মোদীকে নিয়ে রইল কতগুলি কারণ