Viral News: বিয়েবাড়ির বেঁচে যাওয়া খাবার হাতে রানাঘাট স্টেশনে, অভুক্তদের মুখে হাসি ফোটালেন পাপিয়া

শীত জাঁকিয়ে না পড়লেও রাজ্যে শীতের আমেজ বেশ ভালোই রয়েছে। আর কথায় বলে শীতের রাত একটু বড় হয়। কারণ সূর্য উঠতে অনেকটা দেরি হয়। ফলে এই শীতের রাতগুলিতে আধপেটা খেয়ে বা না খেয়ে থাকা খুবই কঠিন বিষয়। চোখের পাতায় যেন ঘুম কিছুতেই আসতে চায় না।

Web Desk - ANB | Published : Dec 8, 2021 6:01 PM IST / Updated: Dec 08 2021, 11:40 PM IST

শীতের রাতে কোনও রেল স্টেশনের (Station) ছবিটা প্রায় অনেকেরই জানা। ফাঁকা স্টেশনের এদিকে সেদিকে চাদর মুড়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায় বহু মানুষকে। তাঁদের মধ্যে কেউ আধপেটা খেয়ে থাকেন তো কেউ আবার কিছুই খান না। বাচ্চা থেকে বুড়ো এমন মুখ হামেশাই দেখতে পাওয়া যায়। তাঁদের প্রতিদিন চলে এভাবেই। রানাঘাট স্টেশনের (Ranaghat Station) ছবিটাও এর থেকে অন্য কিছু নয়। কিন্তু, শীতের রাতে (Winter Night) সেই স্টেশনের অসহায় মানুষের (Poor People) মুখে হাসি ফোটাতে যে কেউ আসবেন তা কল্পনাই করা যায় না। দিন কয়েক আগে স্বয়ং ভগবানের (Goddess) মতোই বিয়েবাড়ির (Wedding House) হরেকরকম খাবার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন পাপিয়া কর (Papiya Kar)।

শীত (Winter) জাঁকিয়ে না পড়লেও রাজ্যে শীতের আমেজ বেশ ভালোই রয়েছে। আর কথায় বলে শীতের রাত একটু বড় হয়। কারণ সূর্য উঠতে অনেকটা দেরি হয়। ফলে এই শীতের রাতগুলিতে আধপেটা খেয়ে বা না খেয়ে থাকা খুবই কঠিন বিষয়। চোখের পাতায় যেন ঘুম কিছুতেই আসতে চায় না। কিন্তু, তাঁদের কথা আর কতজন চিন্তা করেন? নিত্যযাত্রীদের কারও মনে দয়া হলে কখনও তাঁদের দিকে একটা কয়েন ছুড়ে দেন, আবার কেউ জঞ্জালের মতো পাশ কাটিয়ে চলে যান। স্টেশনে থাকা অসহায় মানুষের জীবন চলে এভাবেই। 

এদিকে শীতের মরসুমে একাধিক বিয়ে বাড়ি হয়ে থাকে। আর সেখানে কোনও না কোনও খাবার ঠিক বেঁচে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই সেই খাবার পরের দিনের জন্য রেখে দেওয়া হয়। আর পরদিন তা খারাপ হয়ে গেলে ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু, তা অসহায় মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করেন না অনেকেই। এবার সেটাই করে দেখালেন পাপিয়া। বিয়েবাড়ি থেকে বেঁচে যাওয়া হরেকরকম খাবার তুলে দিলেন অসহায় মুখগুলোয়। শীতের রাতে দু'হাত উজাড় করে স্টেশনের বাসিন্দাদের পেট ভরিয়ে খাওয়ালেন তিনি। 

৩ ডিসেম্বর রাতের ঘটনা। সেদিন ছিল পাপিয়ার ভাইয়ের বৌভাত ছিল। এলাহি আয়োজন করা হয়েছিল। ভুরিভোজের ব্যবস্থাও ছিল দেখার মতো। সকল আমন্ত্রিতদের খাওয়া দাওয়া শেষে দেখা যায়, প্রচুর খাবার বেঁচে গিয়েছে। সাধারণত সেই খাবার আত্মীয়দের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয় বা পরদিনের জন্য রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু, পাপিয়ার চিন্তাভাবনা ছিল একেবারে অন্যরকম। সমস্ত বাড়তি খাবার নিয়ে তিনি পৌঁছে যান রানাঘাট স্টেশনে। ঘড়িতে তখন রাত প্রায় ১টা। চারিদিক নিস্তব্ধ। স্টেশনের বাসিন্দাদের অনেকেই তখন না খেয়ে ঘুম দিয়েছেন। আর তাঁদের জন্যই ভাত, ডাল, সবজি, তরকারি, মাছ, মাংস, চাটনি, পাঁপড় সব নিয়ে উপস্থিত হন পাপিয়া কর। তাঁর পরনে তখনও বিয়েবাড়ির শাড়ি, মেকআপ ছিল। সবাইকে পেট ভরে সেই খাবার খাওয়ান তিনি। 

তবে শুধুমাত্র ৩ ডিসেম্বরই নয়। প্রায়ই এই ধরনের কাজ করে থাকেন পাপিয়া। সপ্তাহে ছয়দিন টোটো করে, খাবার নিয়ে বেরিয়ে অভুক্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দেন তিনি। ১৩ বছর ধরে এই কাজ করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এমন কাজে শান্তি অনেক’। অবশ্য কোনও প্রচারের আলোয় আসা তাঁরা উদ্দেশ্য ছিল না। শুধুমাত্র অভুক্তদের মুখে খাবার তুলে দেওয়াই নয় কলকাতার রাস্তায় পথশিশুদের পড়াশোনা এবং হাতের কাজের নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন তিনি। রবিবার করে এই কাজ তিনি করেন। আর এই কাজে তাঁকে সব সময় সাহায্য করে থাকেন তাঁর স্বামী। পাপিয়ার এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন বহু মানুষ। 

Share this article
click me!