মায়ের মৃত্যুতেও কর্তব্যে স্থির, শেষ দেখা না দেখে অভাবীদের খাওয়াতে ছুটলেন এই লকডাউন হিরো

সকাল সকাল খবর এসেছিল মা মারা গিয়েছেন

কিন্তু তারপরেও বাড়ি ফেরার চেষ্টাই করেননি ছেলে

কারণ, লকডাউনে দরীদ্রদের খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি

সারাদিন অবাবীদের মুখে অন্ন তুলে দিয়েই মাকে শ্রদ্ধা জানাললেন তিনি

গত ডিসেম্বরে শেষবার বিহারের সমস্তিপুর জেলায় গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখনই মা খুব অসুস্থ। তারপর থেকে আর যাওয়া হয়নি। মাঝে এসে জুটেছে করোনাভাইরাসের জ্বালা। আর তা ঠেকাতে দেশে জারি করা হয়েছে ২১ দিনের লকডাউন। ভেবেছিলেন, লকডাউন উঠলেই প্রথমে যাবেন মা-কে দেখতে। কিন্তু, তা আর হয়নি। গত রবিবারই দেহ রেখেছেন তাঁর মা। এই ক্ষেত্রে পুলিশ তাঁকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতিও দিত, কিন্তু যাননি দিল্লির ব্যবসায়ী শাকিল-উর-রহমান। কারণ, তাঁর উপর নির্ভর করছে ৮০০ পরিবারের খাওয়া।

দিল্লিতে একটি ট্র্যাভেল এজেন্সি চালান শাকিল। বেশ লকডাউনের মধ্যেই অসুস্থ মায়ের শরীরে বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছিল। আর তারপর গত রবিবার সকালে তাঁর বাড়ি থেকে ফোন করে মায়ের মৃত্য়ুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বন্ধুরা অনেকবার তাঁকে বলেছিলেন শেষবারের মতো মাকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার জন্য। এমনকী দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে বিশেষ। অনুমতিও করিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু, শাকিল জানিয়ে দেন, তাঁর এই মুহূর্তে দিল্লিতে থাকাটা দরকার। নিজের মা চলে গিয়েছেন, কিন্তু আর কারও মা যাতে খিদেয় না মারা যান, সেটা তাঁকে দেখতে হবে। এই সংকটে অভাবীদের সাহায্য করতে পারলে সেটাই মায়ের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো হবে।

Latest Videos

করোনা ঝড়ে বিধ্বস্ত অম্বানি থেকে কোটাক, একমাত্র হাসছেন এই ভারতীয় ধনকুবের

৭ ডাক্তার ও ৩ নার্সের বিরুদ্ধে এফআইআর, তিন বছরের জেল হতে পারে এই করোনা-যোদ্ধাদের

২০ জনের জন্য একটি বালতি ও একটি সাবান, করোনাভাইরাস না খিদে - কে ডেকে আনবে মৃত্যু

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে দিল্লিতে কাজ করতে আসেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। লকডাউনের জেরে যেমন অনেকেই পায়ে হেঁটে নিজ নিজ রাজ্যে ফিরেছেন, তেমনই বিভিন্ন জায়গায় আটকেও পড়েছেন অনেকে। লকডাউনের একেবারে শুরু থেকে শাকিল ও তাঁর ব্যবসায়ীরা বন্ধুরা মিলে মালব্য নগর, আশ্রম, জায়েদপুর, ইসমাইলপুর, তুঘলক রোড, ওখলা ইত্যাদি এলাকায় ঘুরে ঘুরে গৃহহীনদের ও এই আটকে পড়া পরিযায়ী  শ্রমিকদের খাবার সরবরাহ করছেন। রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৮০০ পরিবারকে তাঁরা সাহায্য পৌঁছে দিয়েছেন।

শাকিল জানিয়েছেন, তাঁদের বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন এবং পরিচিতজনরা, তাঁদের সমর্থন জোগাচ্ছেন। হোয়াটসঅ্যাপ-এ একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে, সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে অভাবীদের খবর আসে। আর সেই অনুযায়ী শাকিল ও তাঁর বন্ধুদের গ্রুপ সাহায্য নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন। লকডাউনের জেরে প্রায় দশ লক্ষাধিক লোককে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে দিল্লি সরকার। তার পাশাপাশি সাকিলদের মতো বিভিন্ন নাগরিক গোষ্ঠীও এগিয়ে এসেছে।

কিন্তু, মায়ের সঙ্গে শেষ দেখা না হওয়া নিয়ে আক্ষেপ নেই? শাকিল বলছেন, মায়ের শরীরটা অনেকদিন ধরেই ভালো ছিল না। অবশ্যই মায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু, যা চাওয়া হয়, তার সব কিছুই তো পূর্ণ হয় না। তাই মায়ের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরই তিনি গৃহহীন মানুষদের জন্য গাড়ি ভর্তি করে শুকনো এবং রান্না করা খাবার নিয়ে গিয়েছিলেন। দিল্লি জুড়ে দরিদ্র, গৃহহীন মানুষ এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সেই খাবারের প্যাকেট বিতরণ করে মা-কে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury