লোকের বাড়ি কাজ করে আর ক'টাকাই বা রোজগার করেন! সামান্য যেটুকু সঞ্চয় ছিল, তা দিয়েই সংকটের সময়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ালেন এক মহিলা। বিলি করলেন খাদ্যসামগ্রী। মানবিকতা সাক্ষী থাকল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় বিধায়কই 'স্বাস্থ্যকর্মী', এলাকায় ঘুরছেন থার্মোমিটার হাতে
বালুরঘাট শহরের আখিপাড়া হাসপাতাল এলাকায় থাকেন প্রতিমা মির্ধা। বছর দেড়েক আগে স্বামীকে হারিয়েছে তিনি। মা-ছেলের রোজগারে কোনওমতে সংসার চলে। প্রতিমা নিজে লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। আর তাঁর ছেলের রঙের মিস্ত্রি। বাড়িটাকে সারিয়ে নিয়ে যদি একটু ভালো ভাবে থাকা যায়, তাহলে মন্দ হয় না। সেই আশাতে একটু একটু করে ব্যাঙ্কে টাকা জমাচ্ছিলেন প্রতিমা। কিন্তু করোনা ভাইরাস আতঙ্ক রাতারাতি সবকিছু বদলে গেল! লকডাউনের জেরে গরিব মানুষের অসহায়তা দেখে আর স্থির থাকতে পারলেন না। সিদ্ধান্ত ফেললেন, বাড়ি তৈরি নয়, বরং ব্যাঙ্কে জমানো টাকায় 'মানুষগুলি আগে খেয়ে পরে বাঁচুক'। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে এলাকায় দু'কেজি করে চাল ও ৫০০ গ্রাম আলু বিলি করলেন প্রতিমা।
আরও পড়ুন: করোনা ত্রাণে অর্থ সাহায্য়, সরকারি তহবিলে ৫০ হাজার টাকা দিলেন প্রৌঢ়া
আরও পড়ুন: লকডাউনে ঘরবন্দি বৃদ্ধ, বাড়িতে পেনশনের টাকা পৌঁছে দিল ডাকবিভাগ
সত্যি কথা বলতে, করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে ঘরবন্দি থাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই। কিন্তু প্রতিদিনের রোজগারে যাঁদের সংসার চলে, লকডাউনের জেরে বিপাকে তাঁরা। সমাজের প্রান্তিক এই মানুষগুলির কাছে কাজকর্ম শিকেয় তুলে বাড়িতে বসে থাকা বিলাসিতা বই আর কিছুই নেই। সামান্য পরিচারিকার কাজ করে প্রতিমা যা করলেন, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই।