ঘরে ফেরা অভিবাসীরাই বিপদের কারণ হয়ে উঠবে না তো? অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়েই আশঙ্কার কালো মেঘে ঢেকেছে ভারতের আকাশ। ২১ দিনের লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। এই পরিস্থিতিতে আনেক অভিবাসী বাড়ি ফিরতে মরিয়া। কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় কাজ হারিয়ে সমান্য কিছু পয়সা হাতে নিয়ে বাড়ির অভিমুখেই যাত্রা শুরু করেছে অভিবাসী শ্রমিকরা। আর তাতেই চিন্তার কালো মেঘ। কারণ বাড়ি ফিরতে মরিয়া অভিবাসীরা নূন্যতম গুরুত্বই দেননি সামাজিক দূরত্বের। গা ঘেঁসাঘেঁসি করে ঠাসাঠাসি করেই ট্রাকে অথবা বাসে করেই বাড়ি ফিরতে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।
উত্তর প্রদেশ ও বিহার থেকেই বড় সংখ্যার মানুষ পেটের টানে অন্যত্র চলে যান। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই উত্তর প্রদেশ ও বিহারে নিজের বাড়িতে ফিরতে চাইছেন অভিবাসীরা। এই পরিস্থিতিতে উত্তর প্রদেশ সরকার জানিয়েছে ঘরে ফেরা অভিবাসীদের ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই নির্দেশ বিহার সরকারের।
উত্তর প্রদেশ সরকারে পক্ষ থেকে জানান হয়েছে ঘরে ফেরা অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমত উদ্বেগে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অভিবাসীদের ঘরে ফেরা ও স্বেচ্ছা গৃহবন্দির বিষয়টা সম্পূর্ণ নিজে হাতেই তদারকি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৬০ হাজার গ্রাম প্রধানকে ঘরে ফেরা অভিবাসীদের স্বেচ্ছাবন্দি ও পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফ থেকে ঘরে ফেরা অভিবাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। অভিবাসীদের শরীরের তাপমাত্রাও নথিভুক্ত করে চিহ্নিত করেই তবে রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। অনেক জায়গায় আবার সরকারের পক্ষ থেকে ক্যাম্প তৈরি করে অভিবাসী শ্রমিকদের ১৪ দিনের জন্য সাধারণ নাগরিকদের থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অনেকটা একই ছবি বিহারেও। সেখানেও মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার নিজেই দায়িত্ব নিয়েছেন অভিবাসীদের দেখভালের। পাশাপাশি ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন মানলে তবেই অভিবাসী শ্রমিকদের ঘরে ফিরতে দেওয়া হবে বলেও শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে ভয় পেয়ে রান্নার গ্যাস পেট্রোল ডিজেল মজুত করবেন না, আবেদন ইন্ডিয়ান ওয়েলের
আরও পড়ুনঃ যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ আপ বিধায়ক রাঘবের, পাল্টা এফআইআর দায়ের তাঁর নামে
দিনে দিনে ভারতে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রবিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। তবে এখনও দ্বিতীয় ধাপেই রয়েছে ভারত। এখনও গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়নি বলেই দাবি সরকারের। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২১ দিনের লকডাউনের কথাও ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু লকডাউন শুরু হতেই সামনে এসেছে দেশে অভিবাসী শ্রমিকদের ভয়ঙ্কর ছবিটা। কাজ হারিয়ে আশ্রয় হারিয়ে বাড়ি ফিরতে মরিয়া তাঁরা।