আদানি ইস্যুতে কিছুটা হলেও সমস্যা বাড়ল সুপ্রিম কোর্টের। কারণ কেন্দ্রের মুখ বন্ধ খামে দেওয়া পরামর্শ গ্রহণ করল না সুপ্রিম কোর্ট।
আদানিকাণ্ডে কেন্দ্রীয় সরকার মোদী সরকারে দেওয়া মুখবন্ধ খাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ, এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় 'বিনিয়োগকারীদেরর স্বার্থ সুরক্ষার জন্য পূর্ণ স্বচ্ছতা চায়।' আর সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারে মুখ বন্ধ খাম প্রত্যাহার করা হয়েছে। আদানিকাণ্ডে শেয়ারবাজারে নিয়মকানুন নিয়ে কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। তাতেই সুপ্রিম কোর্ট শেয়ারমার্কেটে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। বিশেষজ্ঞ কমিটিতে কাদের রাখা হবে তারই তার কেন্দ্রীয় সরকার মুখবন্ধ খামে সুপারিশ করেছিল। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট এদিন প্যানেলের কার্যকারিতা তত্ত্বাবধানে কোনও বর্তমান বিচারকের সম্ভাবনার সুপারিশও বাতিল করে দিয়েছে।
সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, তিনি গালা দিয়ে সিল করা খামে কমিটির সদস্যদের নাম ও রেমিট নিয়ে একটি নোট দিয়েছেন। দুটি উদ্দেশ্যের কথা মাথায় রেখেই নোট দিয়েছেন। প্রথমটি হলে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া ও সত্যে উদঘাটক করা। দ্বিতীয়টি হলে বাজারের নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলে এমন কোনও অনিচ্ছাকৃত বার্তা যাতে বের না হয়ে যায় তারজন্য তিনি আরও বলেন শেয়ার বাজার আবেগের ওপরে চলে।
পাল্টা সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, 'আমরা সিল করা কভার খামে পরামর্শ গ্রহণ করব না। আমরা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চাই। যদি সিল করা কভার খামে পরামর্শ গ্রহণ করি তাহলে অন্য পক্ষ জানতে পারবে না কি হচ্ছে। ' তিনি আরও বলেন সুপ্রিম কোর্টের কোনও সিটিং জাজ কমিটিতে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ অর্থ মন্ত্রক ও অন্যান্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে ইনপুট চেয়েছিল। যারমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, যেখানে আধুনিক পুঁজি প্রবাহ নিরবিচ্ছিন্ন থাকবে।
বিচারপতি পিএস নরসিমা ও জেবি পারদিওয়ালার সমন্বয় গঠিত বেঞ্চ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছে। সলিসিটার জেনারেল, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে উপস্থিত হয়ে বলেছিলেন বাজার নিয়ন্ত্রক ও অন্যান্য সংস্থাগুলি প্রয়োজনীয় কাজ করছে। এদিন আদালত হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট সংক্রান্ত যে দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে তা তালিকাভুক্ত করে জানিয়েছে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি আর্থাৎ সোমবার এই মামলার শুনানি হবে।
আইনজীবী বিশাল তিওয়ারির দায়ের করা মামলাটি হল জনস্বার্থ মামলাগুলির মধ্যে একটি। হিন্ডেনবার্গ গবেষণা প্রতিবেদনের তদন্ত ও তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা একটি কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশনা চেয়েছে যা ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃত্বে একাধিক অভিযোগ করেছে। শিল্পপতি গৌতম আদানি দ্বারা। অ্যাডভোকেট এম এল শর্মার দায়ের করা আরেকটি জনস্বার্থ মামলা মার্কিন ভিত্তিক হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের শর্ট-বিক্রেতা নাথান অ্যান্ডারসন এবং ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নিরীহ বিনিয়োগকারীদের শোষণ এবং আদানি গ্রুপের স্টক মূল্যের "কৃত্রিম বিপর্যয়" করার অভিযোগে বিচার চেয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
'ডিসপ্রিন দিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসা', পাক সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল ইমরান খান
স্ত্রীকে পিঠিয়ে খুন, দেহ লোপাট করতে কাঠ দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিল 'খুনি' স্বামী
আদানি ইস্যুতে মোদীকে জবাব দিতে হবে, ধনকুবের জর্জ সোরোসের মন্তব্যে পাল্টা আক্রমণ স্মৃতি ইরানির