জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে। দিল্লি বিধানসভায় আগামী পাঁচ বছর রাজত্ব করতে চলেছেন অরবিন্দ কেজিরওয়াল। রাজধানী দখলের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল নরেন্দ্র মোদী - অমিত শাহদের।
৭০ আসনের দিল্লি বিধানসভায় ফল গণনার প্রথম থেকেই দৌঁড়তে শুরু করে কেজরির দল। সময় যত এগিয়েছে ততই অন্যান্য বিরোধী দলের তুলনায় আম আদমি পার্টির দূরত্ব বেড়েছে। একক সংখ্যা গরিষ্ঠতার থেকে অনেক বেশি আসন নিয়েই ফের ক্ষমতায় ফিরছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে গতবারের তুলনায় কিছুটা হলেও আসন সংখ্যা কমেছে আপের।
অন্যদিকে প্রয়াত সুষমা স্বরাজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর কেটে গিয়েছে ২০ বছর। এবারও দিল্লি বিধানসভার স্বাপ্ন অধরাই থেকে গেল ভারতীয় জনতা পার্টির। প্রচারের ময়দানে প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেমেও হল না বাজিমাত। যদিও একটাই স্বান্তনা পদ্ম শিবিরের। গতবারের তুলনায় কিছুটা হলেও আসন বেড়েছে বিজেপির।
আরও পড়ুন: জয়-পরাজয় নিয়ে দার্শনিক ব্যাখ্যা, নতুন পোস্টারে মান বাঁচাচ্ছে গেরুয়া শিবির
লোকসভা ভোটে দেশজুড়ে প্রচার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয়তাবাদের আবহে লোকসভা ভোটে দেশজুড়ে উড়েছিল বিজেপির জয়রথ। কিন্তু লোকসভা ভোটের পরবর্তী সময়ে ক্রমেই পাল্টাচ্ছে চিত্রটা। মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গড়তে পারেনি বিজেপি। হাতছাড়া হয়েছে ঝাড়খণ্ড। পঞ্জাবে কংগ্রেসের কাছে পরাজিত হতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। এই অবস্থায় নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভের পরিস্থিতিতে দিল্লি নির্বাচন বিজেপির কাছে অ্যাসিড টেস্ট ছিল। তবে জাতীয়তাবাদের হিড়িক তুলেও সিদ্ধি লাভ হল না গেরুয়া শিবিরের।
আরও পড়ুন: এবারও খুলল না খাতা, রাজধানী শূন্য হাতেই ফেরাল কংগ্রেসকে
সরকার গড়তে না পারলেও দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ভোট বেড়েছে গেরুয়া শিবিরের। গতবার যেখানে শতাংশের হিসাবে বিজেপির ভোট ছিল ৩২ শতাংশ, এবার তা ৬ শতাংশের বেশি বেড়ে হয়েছে ৩৮.৮ শতাংশ। ২০১৫ সালের বিধানসভা ভোটে ৫৪ শতাংশ ভোট গিয়েছিল আপের ঝুলিতে। এবারও ভোটের শতাংশের হিসেবে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি কেজরির দলের। ২০২০ বিধানসভায় আম আদমি পেয়েছে ৫৩.৫ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে ভোট কমেছে কংগ্রেসের। গতবারও যেখানে ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস এবার সেখানে তাদের ঝুলিতে গেছে ৪.৩ শতাংশ ভোট। এবারও ২০১৫ সালের মতই রাজধানীতে কোনও খাতা খুলতে পারেনি হাত শিবির।
এদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বচনে দিল্লির ৭টি লোকসভা কেন্দ্রেই জয় পেয়েছিল বিজেপি। মোট ভোটের ৫৬ শতাংশ গিয়েছিল বিজেপির দিকে। কিন্তু এক বছর ঘুরতে না ঘুরতে বিধানসভা ভোটে সেই ম্যাজিক দেখাতে পারল না নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের দল।