এবারও ভক্তশূন্য থাকছে পুরীর রথযাত্রা। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে সেখানে। এবার রথ টানবেন সেবায়েতরা। যাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকবে তাঁরাই একমাত্র অংশ নিয়ে পারবেন।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এমনিতেই এবার রথযাত্রা একেবারেই জৌলুসহীন। গত বছরের মতো এবারও ভক্তশূন্য থাকছে পুরীর রথযাত্রা। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে সেখানে। এবার রথ টানবেন সেবায়েতরা। যাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ থাকবে তাঁরাই একমাত্র অংশ নিয়ে পারবেন।
আরও পড়ুন- রথে নয়, গাড়িতে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন জগন্নাথদেব, অভিনব সিদ্ধান্ত ইসকনের
সোমবার রথযাত্রা। গতকাল থেকেই জগন্নাথদেবের দর্শন পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। স্নানযাত্রার পর ওই দিনই প্রথম ভক্তদের দেখা দেন জগন্নাথদেব। আর ওই দিন থেকেই পরীতে ভক্তদের সমাগত শুরু হয়ে যায়। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির মধ্য়ে এবার আর তা সম্ভব হচ্ছে না। ভক্তদের ছাড়াই গতকাল দর্শন পর্বের আয়োজন করা হয়েছিল। আজ মহাপ্রভুর নব যৌবন দর্শন। আর রবিবার আচার মেনে মহাপ্রভুর উবা দর্শন। সবই এবার ভক্তদের উপস্থিতি ছাড়াই আয়োজন করা হবে। এমনকী, রথযাত্রার দিনও পুরীতে ভিড় করতে পারবেন না ভক্তরা।
আরও পড়ুন- গুপ্ত পুজো শেষ, জগন্নাথ দেবের দর্শন পর্ব শুরু
রথযাত্রা সম্পন্ন করতে এবার বেশি সতর্ক ওড়িশা সরকার। গতবারের মতো এবারও পুরীতে রথ টানবেন শুধু সেবায়েত ও পূজারিরা। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই রথ টানতে পারবেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার থেকে পুরীর মন্দিরের সেবায়েতদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত সেবায়েতদের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া তাঁদের জন্য করোনা টিকার শংসাপত্রও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রথযাত্রায় অংশ নেবেন ৩ হাজার সেবায়েত ও ১ হাজার কর্মী।
পুরী জগন্নাথ মন্দিরের প্রশাসক অজয় জেনা বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুসারে এবং ওড়িশা সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, গত বছরের মতো এবছরও ভক্তহীন থাকছে পুরীর রথযাত্রা। সেবায়েতদের সবার করোনা টিকার দুটি করে ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় যাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে তাঁরাই একমাত্র রথযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন।"
রথযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীতে নিরাপত্তা অত্যন্ত কড়াকড়ি করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার কর্মী নিরাপত্তার জন্য় মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও মোতায়েন থাকবে পুলিশ। ১১ জুলাই রাত আটটা থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে পুরীতে। মন্দির চত্বরে জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। মন্দির লাগোয়া সব হোটেল, বাড়ি সিল করে দেওয়া হবে প্রশাসনের তরফে। এমনকী, বাড়ির ছাদ বা বারান্দা থেকেও এবার কেউ রথযাত্রা দেখতে পারবেন না।
আরও পড়ুন- নতুন আতঙ্কের নাম কাপ্পা, যোগীরাজ্যে ২ জনের শরীরে মিলল এই প্রজাতি
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বদলেছে অনেক কিছুই। পুজোর আচার-নিয়মেও এসেছে বদল। সবটাই মানুষের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে। বহু বছর ধরে যে সব নিয়ম নিষ্ঠাভরে পালন করা হচ্ছিল তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসেছে বদল। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক রথযাত্রা স্থগিত হয়ে গিয়েছে। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে জনসমুদ্র দেখা যায় পুরীতে। জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি যাত্রার সময় সেখানে উপস্থিত থাকেন বহু ভক্ত। দড়িতে টান দেওয়ার জন্য রীতিমতো হুড়োহড়ি পড়ে যায়। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতিতে এবার সেসবই অতীত। প্রথমে পুরীর রথযাত্রা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পরে শর্তসাপেক্ষে তার অনুমতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই কড়া বিধিনিষেধের মধ্যে গতবছরের মতো এবারও পুরীতে রথের দড়িতে টান পড়বে।