আগামী বছরই ভারত মহাসাগরে ডুব দেবে ভারতের সাবমেরিন। এর মধ্যেই এই বিপর্যয় দোটানায় ফেলেছে ভারতকেও। তবে কি আশঙ্কামুক্ত হতে পিছতে পারে সমুদ্র অভিযান?
টাইটানিক দেখতে যাওয়াই কাল হল পাঁচ অভিযাত্রীর। শতবর্ষ আগের স্মৃতি ফিরিয়ে রাক্ষুসে জাহাজের কোলেই চিরতরে হারিয়ে গেল পর্যটন সাবমেরিন 'টাইটান'। বিশেষজ্ঞরা বলছেন জলের তলায় গিয়ে বিস্ফোরণের কারণেই এই দুর্ঘটনা। বেঁচে ফিরতে পারেননি একজন অভিযাত্রীও। এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ভারতের কপালে। 'টাইটান'-এর আদলে পর্যটন সাবমেরিন তৈরির কাজ চলছে ভারতেও। ইতিমধ্যেই শেষের পথে সেই কাজ। আগামী বছরই ভারত মহাসাগরে ডুব দেবে ভারতের সাবমেরিন। এর মধ্যেই এই বিপর্যয় দোটানায় ফেলেছে ভারতকেও। তবে কি আশঙ্কামুক্ত হতে পিছতে পারে সমুদ্র অভিযান?
চেন্নাইয়ের ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ওসান টেকনোলজি বা NIOT-র-এর তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে ভারতীয় সাবমেরিন 'মৎস্য ৬০০০'। তবে টাইটান দুর্ঘটনার জেরে অনেকটাই দমে গিয়েছে বিজ্ঞানীদের আত্মবিশ্বাস। এই প্রসঙ্গে সংস্থার অধিকর্তা জি রামাদাস জানিয়েছেন,'টাইটান দুর্ঘটনা আমাদের নাড়িয়ে দিয়েছে। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করছি। টাইটানের মতো ভুল যাতে না হয় সেদিকেই নজর রাখা হচ্ছে।' পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন সমুদ্রে নামানোর আগে কিছু বিশেষ বদলও করা হবে। তিনি বলেছেন,'মৎস্য ৬০০০-এ কার্বন ফাইবার এবং টাইটানিয়ামের শিট ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু টাইটান সাবমেরিনেও এই দু'টি পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও বিস্ফোরণ হয়। তাই আমরা বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছি। প্রয়োজনে নির্মাণকাজ পিছিয়ে দেওয়া হবে।'
প্রসঙ্গত, গত রবিবার কানাডার নিউ সাউথহ্যাম্পটনের সেন্ট জন্স থেকে আটলান্টিকে ডুব দেয় সাবমেরিন টাইটান। পাঁচ অভিযাত্রী নিয়ে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ চাক্ষুস করতে রওনা হয় সাবমেরিনটি। ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেনের রসদ নিয়ে সাগরে ডুব দিয়েছিল জলযানটি। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই ঘটে যায় বিপত্তি। পৌনে দু'ঘন্টার মাথায় দিক নির্দেশকারী জাহাজ বা কমান্ড শিপ 'পোলার প্রিন্স'-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সাবমেরিনটির। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি টাইটানের। পাঁচ অভিযাত্রী-সহ সাবমেরিনের খোঁজে চারদিন ধরে আটলান্টিকে তল্লাশি চালায় মার্কিন কোস্ট গার্ড। বুধবার কানাডার P-3 বিমান সমুদ্রের তলদেশ থেকে কিছু ভেসে আসা শব্দ চিহ্নিত করে। পরে C-130 হারকিউলিস বিমানও একই ধরনের সংকেত শব্দ চিহ্নিত করে। সেই মতো নামানো হয় রোবটও। কিন্তু বৃহস্পতিবারই ওই সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় অনুসন্ধানকারীরা।
আরও পড়ুন -
শেষ মুহূর্তে নাম বাতিল 'টাইটান অভিযান' থেকে, বরাত জোরেই রক্ষা পেলেন বাবা-ছেলে
বিমান ছাড়ার আগেই 'হাইজ্যাক' বলে চিৎকার যাত্রীর, ৪ ঘণ্টার চিরুনি তল্লাশির পর পরিস্থিতিত স্বাভাবিক হয়