ইতিমধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনে (Ukraine) সেনা অভিযান শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে তিরুমূর্তি বলেন, "রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সামরিক সংঘাত বাড়লে ধাক্কা খাবে শান্তি ও নিরাপত্তা। দেশের মধ্যে বড়সড় সঙ্কট তৈরি করতে চলেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পরিস্থিতি।"
যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাশিয়া (Russia) ও ইউক্রেনের (Ukraine) মধ্যে। আর এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত (India)। যদি এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনার চেষ্টা করা হয়, তাহলে অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হতে পারে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে (United Nations) এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টিএস তিরুমূর্তি (TS Tirumurti)। ইতিমধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনে (Ukraine) সেনা অভিযান শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া। একাধিক জায়গায় বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে তিরুমূর্তি বলেন, "রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সামরিক সংঘাত বাড়লে ধাক্কা খাবে শান্তি ও নিরাপত্তা। দেশের মধ্যে বড়সড় সঙ্কট তৈরি করতে চলেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পরিস্থিতি।"
রাষ্ট্রসঙ্ঘে ত্রিমূর্তি বলেন, "পরিস্থিতি বিপজ্জনক। তৈরি হতে পারে বড়সড় সঙ্কট। বিঘ্নিত হতে পারে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তি।" সেই কারণে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আর এই পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপ দিকে না এগোয় সেই বিষয়েও বার্তা দিয়েছেন। তিরুমূর্তি আরও বলেন, "দু’দিন আগে নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠক করেছিল এবং পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছিল। আমরা দ্রুত উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছিলাম এবং পরিস্থিতি সম্পর্কিত সমস্ত সমস্যা মোকাবিলায় কার্যকরী এবং যুক্তিগ্রাহ্য কূটনীতির উপর জোর দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সাম্প্রতিক উদ্যোগে সাড়া মেলেনি। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি সেই আহ্বানে কর্ণপাত করা হয়নি। পরিস্থিতি একটি বড় সঙ্কটে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।"
আরও পড়ুন- যুদ্ধের দামামা, পূর্ব ইউক্রেনে সেনা অভিযানের ঘোষণা করলেন পুতিন
উল্লেখ্য, যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে এবার পূর্ব ইউক্রেনে (Ukraine) সেনা অভিযানের কথা ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার (Russia) প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। স্থানীয় সময় অনুসারে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার কিছুটা আগে টেলিভিশন বার্তায় পুতিন বলেন, "আমি সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" ইউক্রেনের বাহিনীকে অস্ত্র ছাড়ার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়াকে পুতিন হুঁশিয়ারি দেন, যে দেশ সেই ‘সামরিক অভিযানে’ হস্তক্ষেপ করবে, তাদের ফল ভুগতে হবে। তাঁর অভিযোগ, ইউক্রেনকে ন্যাটোয় (NATO) যোগদান থেকে বিরত করার যে দাবি করছিল ক্রেমলিন, তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ করেনি আমেরিকা এবং বন্ধু রাষ্ট্রগুলি। সেই পরিস্থিতিতে ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষণা করলে ইউক্রেনকে দখল করার কোনও ইচ্ছা নেই বলে দাবি করেছেন পুতিন। আর তাঁর একথা ঘোষণার পরই যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেনে। এর জন্য অবিলম্বে ইউক্রেন সীমান্তে ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র আবেদন জানিয়েছেন তিরুমূর্তি।
শান্তি বজায় রাখা কতটা জরুরি সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিরুমূর্তি উল্লেখ করেছেন, কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেন থেকে অবিলম্বে দেশে ফেরাতে সাহায্য করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দুটি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ভারতে ফিরেছে নাগরিকদের নিয়ে। তবে এখনও কয়েক হাজার ভারতীয় ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। নাগরিকদের দেশে ফেরাতে তৎপর হয়ে রয়েছে ভারত। তিরুমূর্তির বলেন, "গঠনমূলক কূটনীতিই এখন একমাত্র পথ।"