Taliban: আফগানিস্তানের মসনদে বসেই ব্যাক্ট্রিয়ান সোনার খোঁজ তালিবানদের, যোগ রয়েছে ভারতেরও

এই সম্পদের প্রথম সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৮-৭৯ সালে। সেই সময় ছয় জন ধনী যায়াবরের কবর খনন করা হয়েছিল। উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর সম্পত্তি।

Asianet News Bangla | Published : Sep 20, 2021 12:48 PM IST

তালিবানরা জানিয়েছে তারা ২ হাজার বছর পুরনো ব্যাক্ট্রিয়ান ধনভাণ্ডারে সন্ধান করবে। এই ব্যাক্ট্রিয়ান ধনসম্পদ অনেকের কাছে ব্যাক্ট্রিয়ান গোল্ড নামেও পরিচিত। একটি সঙ্গে তালিবানরা হুঁশিয়ারিও দিয়েছে এই সব সম্পক্তি যদি দেশের বাইরে কেউ পাচাল করে দেয় তাহলে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে গণ্য করা হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কঠোর সাজাও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা। তালিবানদের অন্তবর্তীকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য তথা সাংস্কৃতিক কমিশনের উপ প্রধাম আহমদুল্লাহ ওয়াসিক এই কথা বলেছেন। সঙ্গে তিনি বলেছেন আগের আফগান সরকার যদি এই সম্পত্তি দেশের বাইরে পাচার করে দেয় তবে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই ব্যাক্ট্রিয়ান গুপ্তধনের সঙ্গে একটি গভীর যোগ রয়েছে ভারতেও। 

ব্যাক্ট্রিয়ান সম্পদের সন্ধানঃ 
এই সম্পদের প্রথম সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল ১৯৭৮-৭৯ সালে। সেই সময় ছয় জন ধনী যায়াবরের কবর খনন করা হয়েছিল। উদ্ধার হয়েছিল প্রচুর সম্পত্তি।  ঐতিহাসিকদের কথায় এটি ছিল মূলত মধ্যএশিয়া থেকে আসা যাযাবরদের কবর। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতক থেকে প্রথম শতক পর্যন্ত এই যাযাবর শ্রেণীর যাতায়াত ছিল আফগানিস্তানের ওপর দিয়ে। করবগুলি পাওয়া গিয়েছিল উত্তর আফগানিস্তানের শেরবার্গান জেলার তপা বা হিল অব গোল্ড এলাকায়। 

করবগুলি খননের পর উদ্ধার হয়েছিল চিন থেকে ইউয়েজি, সোনার কামরা, ডলফিন, দেবতা, ড্রাগন। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছিল চূনি, পান্না, পলা, হীরের মত দামি দামি পাথর। সেই সময় খনের ফলে প্রায় ২০ হাজার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছিল। পাওয়া গিয়েছিল সোনার আংটি, কয়েম, অস্ত্র, কানের দুল, চুড়ি, হার, মূল্যবান অস্ত্র, মুকুট। 

Weather Update: ঘূর্ণাবর্ত সরছে, কিন্তু এখনও বৃষ্টি থামার কোনও পূর্বাভাস দেয়নি আলিপুর হাওয়া অফিস

চন্নি-সিধুকে নিয়ে বিভ্রাট কংগ্রেস নেতৃত্বের, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সাফল্যে অন্তরায় হতে পারে দলের কোন্দল

Viral Video: রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকবাজের হামলা, প্রাণ বাঁচাতে অডিটোরিয়াম থেকে ঝাঁপ পড়ুয়াদের

মস্কোর প্রত্নতাত্ত্বিক ভিক্টর সারিয়ানিদির নেতৃত্বেই খনকার্য চালান হয়েছিল। তিনি এই সমাধিগুলিকে ১৯২২ সালে উদ্ধার হওয়া তুলেনখামামেনের সমাধির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন তুতেনখামেনের সমাধি যেমন গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল এগুলিও তেমনই। সেই সময়ই তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রাচীন কালে এই যাযাবর শ্রেণির মানুষেরা কী করে নানান জায়গার সামগ্রী একত্রিত করেছিল। কারণ তিনি দাবি করেছিলেন সামগ্রীগুলি চিন, রোম, সাইবেরিয়া-সহ একাধিক এলাকা থেকে আনা হয়েছিল। তার বেশ কিছু প্রমাণও দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর কথায় রোমান মুদ্রা ছিল, সাইবেরিয়ান তলোয়ানও পেয়েছিলেন। চিনাদের মত জুতোওয় পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর কথায় ২ হাজার বছর পুরনো নিদর্শনগুলি নান্দনিক প্রভাব যথেষ্ট। তিনি আরও বলেছিলেন শেষ যে সমাধিক্ষেত্রটি খোঁড়া হয়েছিল সেখানে একটি একটু মুকুট পাওয়া গিয়েছিল- তা রীতিমত দর্শনীয়। এছাড়াও ছিল প্রচুর মূল্যবান সামগ্রী। 

ধনসম্পত্তির ভারতীয় যোগ-
সারিয়ানিদি বিশ্বাস করচেন এই গুপ্তধনের সঙ্গে চিনের ইউয়েজি সম্ভ্রান্তদের যোগা ছিল। সেখান থেকেই এসেছিল বিপুল সম্ভার। এঁরা খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ে ব্যাক্ট্রিয়া অঞ্চল থেকে এসেছিল। পরবর্তীকালে ভারতে কুশান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। অনেক পণ্ডিত আবার ইরানের সঙ্গে এই ব্যাক্ট্রিয়ানদের যোগ দেখতে পান। কিন্তু এখানে একটি বিশাল মুকুল পাওয়া গিয়েছিল যেটিতে সম্রাট টাইবেরিয়াসের মুখের আদল রয়েছে। চিনের রুপোর আয়না রয়েছে। পাশাপাশি গ্রীক লেখাও উদ্ধার হয়েছে। একটি বুদ্ধের ছবিও উদ্ধার হয়েছিল। আর পাওয়া গিয়েছিল প্রচুর রোমান মুদ্রা। 

তবে সেই সময় খননকার্ষে একটি কবর থেকে ৩০ বছরের মহিলার দেবাবশেষ উদ্ধার হয়েছিল। সেই মহিলার মাথায় পরানো ছিল সোনার মুকুট। ঐতিহাসির সারিয়ানিদি মনে করছেন এই মহিলা কোনও রাজকুমারি। তাঁর কবরে গ্রিসের দেবী এথেনার ছবি আর একটি সোনার তৈরি ড্রাগন পাওয়া গিয়েছিল। যার চিনের সঙ্গে রোমার সাম্রাজ্যের ঐতিহ্য বহন করে। সেই কারণেই তিনি বলেছিলেন চিনা আর রোমান সাম্রাজ্যের যৌথ ছায়া রয়েছে ব্র্যাক্ট্রিয়ান সম্পদে।

Share this article
click me!