রাশিয়ার কাছে ৬ হাজারের বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে, যার কারণে রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। তবে একটা সময় ছিল যখন ইউক্রেনেরও বড় সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্র ছিল।
গোটা বিশ্বের আশঙ্কা সত্যি করে অবশেষে ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ধ্বংস করতেও উদ্ধত হয়েছে পুতিনের দেশ। ভারতীয় সময় বৃহঃষ্পতিবার ভোর থেকেই চলছে লাগাতার গোলাবর্ষণ। একই সঙ্গে ইউক্রেনও বলেছে, রাশিয়ার অনেক বিমান ও হেলিকপ্টার তারা গুলি করে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে। এদিকেই এই রাস্তাতেই ক্রমেই জোরালো হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বের সম্ভাবনা। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে এই যুদ্ধ দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে রাশিয়ার সামনে বেশিদিন টিকতে পারবে না ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। এর কারণ হচ্ছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনের চেয়ে অনেক বড়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাশিয়ার কাছে ৬ হাজারের বেশি পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে, যার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে একটা সময় ছিল যখন ইউক্রেনেরও বড় সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্র ছিল। এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির সাথে সাথেই আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ঠাণ্ডা যুদ্ধ শুরু হয়। এই সময়কালে ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) অংশ ছিল। ওই সময়ের পর থেকে আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রতিযোগিতা বাড়তে থাকে। ছিল। যখন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা বাঁধ ভাঙতে শুরু করে, তখন রাশিয়া ইউক্রেনে হাজার হাজার পারমাণবিক অস্ত্র মার্কিন ও ন্যাটো মিত্রদের বিরুদ্ধে মোতায়েন করে।
পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি চিহ্নিত করে। এর সাথে ইউক্রেনও সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘোষণা করলেও হাজার হাজার পারমাণবিক অস্ত্র ইউক্রেনের কাছেই থেকে যায়। এদিকে সেই সময় রাশিয়া ও তার সহযোগী দেশগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এই কারণেই পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল। এখান থেকেই ইউক্রেনের পারমাণবিক অস্ত্র বিক্রির গল্প শুরু হয়। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ এবং মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয় ইউক্রেনে পারমাণবিক বোমার সংখ্যা ছিল ১৮০০ থেকে ২০০০ এর কাছাকাছি। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পর কোন দেশের কাছে থাকা পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যার নিরিখে ইউক্রেন ছিল সেই সময় তৃতীয় স্থানে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আমেরিকা ও রাশিয়া ছাড়া আর কোনো দেশেই এত বেশি পরিমাণ পারমাণবিক বোমা নেই। এমতাবস্থায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তাতে যে মানব সভ্যতার ইতিহাসে আরও একটা কালো দাগ লাগতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।