মৃত ব্যক্তিদের নামে অর্পিতার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, প্ল্যানে ছিল ফিল্ম সিটি?

লক্ষ লক্ষ বেআইনি অর্থ লেনদেন করার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে খোলা হয়েছে প্রায় ২৫-৩০টি জাল অ্যাকাউন্ট। সেই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে অনেক মৃত ব্যক্তির ভোটার কার্ড। ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলিতে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে লেনদেন হয়েছে সবথেকে বেশি। 
 

বাংলার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির টাকা যতখানি উদ্ধার হয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একাধিক ফ্ল্যাট থেকে, তার চেয়েও অনেকটা বেশি টাকা কি ইতিমধ্যেই কাজে লাগানো হয়ে গিয়েছে ফিল্ম সিটি তৈরির জন্য? ইডির তদন্ত আর জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা তথ্য কিন্তু সেই সম্ভাবনারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে মজুত কোটি কোটি কালো টাকা ‘সাদা’ করাই হয়তো মূল উদ্দেশ্য ছিল। সম্ভবত সেজন্যই পার্থর বান্ধবী অর্পিতার পরিকল্পনায় ছিল এই ফিল্ম সিটির অভিপ্রায়। প্ল্যান ছিল ছবি প্রযোজনা করারও। ওড়িয়া ও তামিল ফিল্ম দুনিয়ার ভেতর শুরু হয়ে গিয়েছিল তাঁর হাত পাকানোর কাজ। অর্পিতা নিজে ভুবনেশ্বরে গিয়ে টাকা পৌঁছে দিয়ে আসতেন বলেও খবর রয়েছে তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে। 

Latest Videos

ইডি আধিকারিকদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় অর্পিতা নিজে জানিয়েছেন, বিশ্ব মানের ফিল্ম সিটি তৈরির পরিকল্পনা ছিল নদিয়ার কল্যাণীতে। তার জন্য সেখানে গিয়ে কয়েক একর জমি বাছাইও করে রেখেছিলেন তিনি। বায়না দেওয়া হয়েছিল জমির মালিকদেরও। কেবলমাত্র এটাই নয়, প্রয়োজনীয় অনুমতি চেয়ে আগস্ট মাসে একটি সংস্থা খুলে ফিল্ম সিটি তৈরির জন্য আবেদন করার অভিসন্ধিও করেছিলেন অর্পিতা। কিন্তু, পুরো প্ল্যান বাস্তবায়নের আগেই তাঁর টালিগঞ্জ আর বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে ধরা পড়ে যায় টাকার স্তূপ। ফলে, ভেস্তে যায় সম্পূর্ণ পরিকল্পনা।
 
ইডি এও দাবি করছে যে, এই টাকার সাথে যুক্ত রয়েছে এসএসসিতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি। নিজের ফ্ল্যাটে অতখানি নগদ টাকা জমে যাচ্ছিল বলে অর্পিতা কিছুটা ভয়েই ছিলেন বলে খবর। পুরো টাকাটাকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখিয়ে হাতবদল করে দেওয়ার উদ্দেশেই এত পরিকল্পনা ছিল বলে অনুমান। দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির যে সমস্ত প্রযোজক ও পরিচালকদের ঘরে পশ্চিমবঙ্গের নিয়োগ দুর্নীতির টাকা গিয়ে পৌঁছেছে, তাঁরা সকলেই এখন ইডির নজরে। তাঁদের সঙ্গে, ফিল্ম সিটি তৈরি করার লক্ষ্যে কল্যাণীতে জমির বায়না নেওয়া মালিকদেরও ডেকে পাঠানো হতে পারে তদন্তকারী সংস্থার অফিসে।
 
ইডির সিনিয়র অফিসারদের মতে, এই লক্ষ লক্ষ বেআইনি অর্থ লেনদেন করার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে খোলা হয়েছে প্রায় ২৫-৩০টি জাল অ্যাকাউন্ট। সেই কাজে ব্যবহার করা হয়েছে অনেক মৃত ব্যক্তির ভোটার কার্ড। ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলিতে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে লেনদেন হয়েছে সবথেকে বেশি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট শনিবারই সিজ করে দিয়েছে ইডি। তালিকায় আছে অর্পিতার সিঙ্গল অ্যাকাউন্ট এবং তাঁর একাধিক সংস্থার ব্যাংক অ্যাকাউন্টও। এই ৩ ধরনের অ্যাকাউন্টে প্রায় ৮ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছে ইডি। 


কিন্তু এই কোটি কোটি টাকা আসলে কার? এই উত্তরই খুঁজছেন ইডি আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, ফিল্ম সিটি তৈরি করার পথের যাবতীয় বাধা বিপত্তি দূর করার সহযোগী ছিলেন পার্থ এবং নিজের মন্ত্রিত্বের পদের কর্তৃত্ব ফলিয়েই নাকি অর্পিতার ব্যাপক উন্নতিসাধনে রত ছিলেন তিনি। 

আরও পড়ুন- 
‘আমার কোনও টাকা নেই, সময় এলেই বুঝবেন কে ষড়যন্ত্র করছে’, বিস্ফোরক দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের
এবার হাওড়ায় গাড়ি থেকে উদ্ধার রাশি রাশি টাকা, তৃণমূলের প্রশ্ন EDকে
অর্পিতার নামে ৬টি সংস্থার খোঁজ, ৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করল ইডি

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

Malda-র রাস্তায় সেফ ড্রাইভ সেফ লাইফ কর্মসূচি! সচেতনার বার্তা র‍্যালির মাধ্যমে
RG Kar Case Update Today : চাইলেন না চরম শাস্তি! মোক্ষম চাল দিলো অভয়ার পরিবার | Calcutta High Court
এবার আগুনের গ্রাসে অন্য এলাকা! পুড়ছে স্যান দিয়েগো কাউন্টির একাধিক অংশ San Diego fire | Wildfires
Suvendu on Kartik Maharaj : কেন পদ্মশ্রী পাচ্ছেন কার্তিক মহারাজ? খোলসা করে সবটাই বললেন শুভেন্দু
Suvendu on Trump : ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ শুভেন্দু অধিকারী, কারন জানলে অবাক হবেন