টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপে ইউনেস্কো কর্তা থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবেশের আগেই প্রবেশ করে ফেলল ডেঙ্গির মশা। চিত্র সাংবাদিকদের ছবিতে দুশ্চিন্তায় চিকিৎসকরা।
মণ্ডপ উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী তখনও প্রবেশ করেননি, আসেননি ইউনেস্কোর কর্তারাও। অতিথিদের জন্য অধীর অপেক্ষায় স্থানীয় বাসিন্দা, কর্মকর্তা, পুলিশ, সংবাদমাধ্যম, প্রত্যেকে। নিরাপত্তার ছোট্ট ছিদ্র ভেদ করে ঘটে গেল অতর্কিত ‘হামলা’। মণ্ডপের ভিতর মশার কামড় খেয়ে গেলেন চিত্র সাংবাদিকেরা। কারোর হাতে মার খেয়ে যাওয়া একটি মশার ছবিও ক্যামেবন্দি হয়ে যায়। শুক্রবার সেই ছবি যখন সংক্রামক রোগের চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী দেখলেন, তখনই তিনি শোনালেন ভয়ানক আশংকার বার্তা, ‘‘এটা ডেঙ্গিরই মশা! মশার গায়ে সাদা-সাদা ছোপ থাকলে তা ডেঙ্গির মশা-ই হয়।’’
পশ্চিমবঙ্গে হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গি। রাজ্যে ইতিমধ্যে প্রাণও হারিয়েছেন বহু মানুষ। অতি সংক্রামক জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে শহর কলকাতাও। তারই মধ্যে উত্তর কলকাতার নামী পুজোর প্রাঙ্গণে ডেঙ্গির মশার আনাগোনা প্রত্যেকের কাছেই বেশ উদ্বেগজনক।
স্থানীয় পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলছেন, ‘‘মনে হচ্ছে ডেঙ্গির মশা বাইরে থেকে উড়ে এসেছে। এখানে ডেঙ্গির মশার লার্ভা কই! তবে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। সংক্রমণ রোধে যা যা করণীয়, পুরসভা সবই করে চলেছে।’’ টালা প্রত্যয় মণ্ডপ লাগোয়া মাঠে রয়েছে প্রচুর ঝোপজঙ্গল, আনাচেকানাচে রয়েছে জমা জলও। সে সম্পর্কে তরুণ সাহা অবশ্য বলেছেন, ‘‘এই তল্লাটে কোথাও জমা জল নেই।’’ মণ্ডপের প্রতিমার সামনে জল রাখা থাকলেও কাউন্সিলরের বক্তব্য, ‘‘ওই জলে ওষুধ দেওয়া।"
কিন্তু টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপেই মশার কামড়ে নাজেহাল হয়েছেন উপস্থিত বহু সাংবাদিক। সেখানে শতাধিক কর্মীও বহাল থাকছেন সারাদিন ধরেই। মণ্ডপের পিছনে ঝোপজঙ্গলে মণ্ডপের কারিগরদের বসবাসের তাঁবুও খাটানো রয়েছে। মশার কামড় থেকে বাদ যাচ্ছেন না তাঁরাও। পুরসভার তরফে সদা সতর্ক করা হচ্ছে, কোথাও জল বা জঞ্জাল জমতে দেবেন না। স্থানীয় কাউন্সিলর ওই তল্লাটে জমা জল নেই বলে দাবি করলেও ফেলে দেওয়া চায়ের ভাঁড় বা বোতলের জলেও ডেঙ্গির মশা ডিম পাড়তে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। জল, কাদাও এই এলাকায় কম নেই। এলাকার বাসিন্দারাও মণ্ডপের পিছনের মাঠ অপরিষ্কার থাকার কারণে বেশ ভয়েই রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, টালা সেতু তৈরির কাজ শুরু হওয়ার আগে ওই মাঠ ছিল ঘাসে ভরা। ২০২০-র মাঝামাঝি সময় থেকে সেই চিত্র পাল্টে গিয়ে সেখানে লার্সন অ্যান্ড টুব্রো-র নিযুক্ত শ্রমিকেরা বসবাস করছেন। সেতু তৈরির লোহালক্কড়ে মাঠে ভর্তি। কাউন্সিলর তরুণ সাহা বলেন, ‘‘নির্মাণকারী সংস্থা বলেছে, কাজ শেষ করে যাওয়ার আগে তারা মাঠ পুরনো চেহারায় ফিরিয়ে দেবে।” তাঁর আশ্বাস সত্ত্বেও কবে মাঠ পুরনো চেহারায় ফিরবে এবং মানুষজন কবে ডেঙ্গির আশঙ্কামুক্ত হবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন-
নরেন্দ্র মোদীর জমানায় বিরোধী দলের হেভিওয়েট নেতাদের দিকেই ইডির বিশেষ নিশানা? প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
ত্রিপুরায় তৃণমূলে বড়সড় যোগদান পর্ব, একসঙ্গে ঘাসফুলে যোগ দিলেন দু’শো জনেরও বেশি মানুষ
সম্পূর্ণ উত্তর ভারত জুড়ে কুর্মি আন্দোলনের আঁচ! বাতিল হয়ে যাচ্ছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন