উৎকৃষ্ট ওয়্যারলেস ইয়ারফোন এখন পাওয়া খুব একটা দুষ্কর নয়। প্রত্যেক সপ্তাহেই নতুন নতুন অপশন লঞ্চ হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে ইয়ারফোনের জগতে নতুন নতুন উন্নতি সাধিত হয়েছে যেমন, অ্যাকটিভ নয়েস ক্যান্সেলেশন, উন্নতমানের ব্যাটারি এবং অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তিগত উন্নতি যথা ব্লুটুথ কোডেক সাপোর্ট এবং ড্রাইভার ইত্যাদি সংযুক্ত করা হয়েছে।
কিছুমাস আগেও ভালো ইয়ারফোনের দাম ১০,০০০ টাকার নীচে ভাবা যেত না কিন্তু এখন ৬,০০০ টাকাতেও ভালো ইয়ারফোন পাওয়া যায়। আবার অন্যদিকে ২০১৯ সালের শেষের দিকে অ্যাপেল এয়ারপডস প্রো -এর আগমনে বদলে গেছে ইয়ারফোনের দুনিয়া।
সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস ইয়ারফোন কাজ করে কীভাবে?
সম্পূর্ণ ওয়্যারলেস ইয়ারফোন একেবারেই ওয়্যার/ তার বিহীন, ওর মধ্যেই ব্যাটারি, ডিএসি, অ্যামপ্লিফায়ার এবং ব্লুটুথ চিপ আছে। ইয়ারবাড সংযুক্ত হচ্ছে মূল ডিভাইসের সঙ্গে, অথবা ডমিন্যান্ট ইয়ারবাড যা সংযুক্ত থাকছে সোর্সের সঙ্গে তারপর দ্বিতীয় ইয়ারবাডের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এবং ডিজিটাল সিগ্ন্যাল পাচ্ছে সেইসঙ্গে। এইভাবে প্রত্যেকটি ইয়ারবাড স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে কাজ করছে এবং যৌথভাবে স্টিরিও সাউন্ড উৎপন্ন করছে । তারের ব্যবহার না থাকায় ব্যবহারকারীর কাছে স্বাচ্ছন্দ্য অনেকগুণ বেশি। ভিড়ে, জিমে, কাজে, যানবাহনে, বসে, শুয়ে যেকোনও অবস্থায় এই ইয়ারফোনগুলো ক্রেতাদের পক্ষে অনেকটাই আরামপ্রদ।
অনেক ওয়্যারলেস ইয়ারবাডেই বিল্ট-ইন মাইক্রোফোন থাকে, যদি মাইক্রোনের মান উৎকৃষ্ট হয়, একটু দূর থেকেও কথা ভালোভাবে শোনা যায় তাহলে টেলিফোনিক কথাবার্তার জন্য এর থেকে ভালো আর কিছুই হতে পারে না। তবে অতিরিক্ত কিছু যুক্ত হওয়ার কারণে সাধারণ ইয়্যারফোনের থেকে এই ইয়্যারফোনের ওজন কিছুটা ভারী হয়।
ভালো কিছু ইয়ারফোনের নমুনা-
অ্যাপল এয়ারপডস প্রো -এর দাম ২৪,৯০০। অন্যান্য ইয়ারফোনের তুলনায় অনেকটাই দাম বেশি। তবে এর সাউন্ড কোয়ালিটির সঙ্গে অন্য কারো কোনও তুলনাই হবে না। অ্যাক্টিভ নয়েস ক্যানসেলেশনের জন্য এর গুণমান অনেকখানি বেড়ে গেছে। শব্দের স্বচ্ছতা, পরিপূর্ণতাও বেশি।
প্রত্যাশিতভাবেই এয়ারপডের উৎকর্ষতা প্রকাশ পায় আইফোন বা আইপ্যাডে সবচেয়ে ভালোভাবে, তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোন বা কম্পিউটারেও এটি ব্যবহার করা যায়। সমস্ত ফিচারের মান যাচাই করতে হলে অ্যাপেল ডিভাইসে ব্যবহার করা উচিত।
সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে অ্যাপল ডিভাইস পড়ে না। তাই মধ্যবিত্ত ক্রেতার কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু কম দামি ডিভাইস এসেছে এখন বাজারে। ওই ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ১ মোর স্টাইলিশ ট্রু ওয়্যারলেস ইন-এয়ার হেডফোন -এ অ্যাপ্ট এক্স ব্লুটুথ কোডেক আছে, এখনকার উন্নত অ্যান্ড্রোয়েড ফোন এই কোডেক সিস্টেম সাপোর্ট করে। ব্লুটুথ ৫, ভালো ব্যাটারি, ্ন্যাচারাল, রিফাইণ্ড বাস সবই পাওয়া যাবে এই ইয়ারফোনে।
ওয়ান মোর ইয়ারফোনের দাম ১০,০০০ টাকার নীচে।
সেনহেইসার মোমেন্টাম ট্রু ওয়্যারলেস হেডসেট সবচেয়ে ভালো অ্যান্ড্রোয়েড ফোনের জন্য। অ্যাপট এক্স, অ্যাপ্টেক্স লো লেটেন্সি এবং এ এ সি কোডেকস এইসব সাপোর্ট আছে এই ইয়ারফোনে। আর এর ফলেই অসাধারণ সাউন্ড কোয়ালিটি তৈরি হয়।
একবার সিঙ্গেল চার্জে সেনহেইসার মোমেন্টাম ট্রু ওয়্যারলেস হেডসেট ৪ ঘন্টা ৩০ মিনিটে ব্যাবহার করা যায়। এই ইয়ারবাডসগুলো দেখতে সুন্দর, দেখতে বড়ো হলেও ওজনে হালকা।
সেনহেইসার মোমেন্টাম ট্রু ওয়্যারলেস হেডসেট -এর দাম ২৪,৯৯০ টাকা।
স্যামসাং গ্যালাক্সি বাডস স্যামসাং-এর নতুন স্মার্টফোনগুলোর কথা ভেবেই তৈরি। গ্যালাক্সি বাডস সবচেয়ে বেশি ভালো সাউন্ড উৎপন্ন করে গ্যালাক্সি ডিভাইসে। দাম-৯ ,৯৯৯ টাকা। কম্প্যাক্ট কেস -এর মাধ্যমে চার্জ দিতে হয় এবং তার ফলে ১০ ঘন্টা ব্যবহার করা যায়।
লিফ পডস ইয়ারবাডের সাউন্ড কোয়ালিটি, বাটারি লাইফ, কোডেক সাপোর্ট খুব ভালো। একবার চার্জ দেওয়ার পর ৬ ঘন্টা ব্যবহার করা যায়, তবে চার্জিং কেস একটুখানি জটিল প্রকৃতির। সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো। দাম- ৩,৯৯৯ টাকা।
অন্যান্য আরও ওয়্যারলেস ইয়ারফোনের দাম-
সোনি ওব্লু এফ- এস পি ৭০০ এন- দাম ১১, ২৯০ টাকা। অ্যাক্টিভ নয়েস ক্যান্সেলেশন থাকলেও ব্যাটারি লাইফ এবং ডিজাইন মাঝারি মানের।
ব্রাগি ড্যাশ প্রো- দাম- ২৯,৯৯৯ টাকা। উন্নতমানের সাউন্ড, আকর্ষণীয় গড়ন, নতুন আরো ভার্সান এসেছে।
আর এইচ এ ট্রু কানেক্ট- দাম- ১৪,৯৯৯ টাকা। উন্নতমানের সাউন্ড, আকর্ষণীয় ডিজাইন।
জাবরা এলিট অ্যাক্টিভ ৬৫টি- দাম- ১৪,৯৯৯ টাকা । একটু ভারী, পুরনো ধরণের দেখতে। নতুন ভার্সানগুলো আরও একটু আকর্ষণীয়।
এছাড়াও রিয়ালমি বাডস এয়ার , স্কালক্যান্ডি ইন্ডি, ব্লপাঙ্কট বিটিডব্লু প্রো কোম্পানির ইয়ারবাডসও এসে গেছে বাজারে।