
আমলকি বা আমলা খেতে টক হলেও এর পুষ্টিগুন শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। গ্যাসের সমস্যা থেকে শুরু করে চুল পড়া বন্ধে দারুণ উপকারি এই ফল। তাহলে আর দেরি কেন জানুন কোন কোন বিশেষ গুণ রয়েছে এই ফলের ভিতরে।
দীর্ঘদিন ধরে চুল পড়ার সমস্য়ায় ভুগছেন? কোনও কিছুতেই চুল পড়া ঠেকাতে পারছেন না! তাহলে চোখ বন্ধ করে ভরসা রাখুন আমলকিতে। আমলকি তেল বা আমলা হেয়ার মাস্ক যদি ব্যবহার করা যায়, তাহলে চুলের সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সমপরিমাণে রিঠা ও আমলকি নিয়ে বানিয়ে ফেলতে হবে একটি প্যাক। যা চুলের স্ক্যাল্প-এ লাগালে শক্ত হবে চুলের গোড়া। ফলে বন্ধ হবে চুল ওঠার সমস্যা।
সুস্থ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে আমরা কে না চাই বলুন তো? কিন্তু বাইরের কসমেটিক সামগ্রি ব্যবহার করে অনেক সময় তা হিতে বিপরীত হয়। বরং ভিতর থেকে ত্বক পরিস্কার করতে চাইলে ভরসা রাখুন আমলকিতে। কারণ, আমলকি রক্ত বিশুদ্ধ করে ও ত্বকে পুষ্টি জোগায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি উপস্থিত থাকায় এটি ত্বকের জন্য উপকারী। আমলকি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে যা ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখে। আমলকিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পরিবেশের দূষণ থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করততে সক্ষম।
আমলকি শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল, ১০০ গ্রাম আমলকিতে ভিটামিন ‘সি’-র (Vitamin C) পরিমাণ প্রায় ৬০০-৭০০ মিলিগ্রাম, যা পেয়ারা বা আভোকাডোর থেকে অনেকটাই বেশি। ভিটামিন সি (Vitamin C), ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, পটাসিয়ামের ভান্ডার আমলকি। যাদের শরীরে ভিটামিন সি-এর অভাব রয়েছে তাঁদের জন্য় আমলকি হল একটি সস্তায় পুষ্টিকর ফল।
শারীরিক কসরত, জিমে গিয়েও ঝরাতে পারছেন না অতিরিক্ত ওজন? তাহলে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে আমলকি। আমলকিতে থাকে উচ্চ ফাইবার উপাদান, যা খিদে কমাতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।হজমের গোলমাল থেকে দূরে রাখে ফাইবার। হজম প্রক্রিয়া ঠিক করে হলে রোগা হওয়া বিশেষ কঠিন কোনও ব্যাপার নয়।
আমলকিতে রয়েছে ক্যারোটিন, যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সহায়ক। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আমলকি থাকলে তা চোখের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়াও ছানি, চোখ লাল হওয়া, চুলকানি এবং চোখে জল পড়া রোধেও আমলকি বিশেষ উপকারী। তাহলে আর দেরি কেন? চোখ ভালো রাখতে আজ থেকেই শুরু করুন প্রতিদিন একটা করে আমলকি খাওয়া।
আমলকি মধুমেহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ক্রোমিয়াম সমৃদ্ধ, যা আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বজায় রাখে।আমলকিতে থাকা পলিফেনলগুলি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে এবং গ্লুকোজ বিপাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে৷ যারফলে আমলকি খেলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা থাকে নিয়ন্ত্রণে।
হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার গ্যাস্ট্রিক বা বদ হজমের মতো রোগ থেকে মুক্তি দেয় ৷ আমলকির ক্ষারীয় প্রকৃতি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার এবং শক্তিশালী করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। ফলে পাকস্থলিকে ভালো রাখতে আমলকির অবদান অনেক।
আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি (Vitamin C) এবং ভিটামিন এ । তাই নিয়মিত আমলকি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। শুধু তাই নয়, এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidant) আপনাকে যে কোন রোগের হাত রক্ষা করে।
আমলকি খেলে কমবে হৃদরোগের ঝুঁকি। কারণ আমলকিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তবে সবার আবার আমলকি খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। যারা সুগার , লিভার এবং কিডনি সম্পর্কিত যে কোনও ধরণের সমস্যায় ভুগছেন তাদেরও আমলকি এড়িয়ে চলা উচিত।