ধরাধামকে সংকটমুক্ত করতে কিভাবে আর্বিভাব মায়ের, জানুন সেই কাহিনি

  • যিনি আদ্যাশক্তি, তিনিই মহামায়া
  • বিশ্বের জীবকুলকে সংকটময় অবস্হা থেকে উদ্ধারের জন্য এসেছিলেন তিনি
  • দুর্গাপূজা মূলত শক্তির আরাধনা
  • শুভ-অশুভের মাঝে মা দুর্গার আগমনী বার্তা শান্তির বানী নিয়ে আসে 

একাধারে তিনি ব্রহ্ম, অন্যদিকে আবার তিনি মহামায়া, তিনিই আবার আদ্যাশক্তি। অসুরদলনী দেবী দুর্গা তিনি। বিশ্বব্রহ্মান্ডের জীবকুল যখন নির্যাতিত, নিপীড়িত সেই সংকটময় অবস্হা থেকে সমগ্র ব্রহ্মান্ড-কে রক্ষা করতে ধরাধামে অবর্তীণ হন জগৎজ্জননী মা দুর্গা। দেবতাদের সম্মিলিত শক্তি, তপস্যা এবং জ্যোতি দ্বারা সৃষ্ট হন দুর্গা। এছাড়া তিনি সমগ্র নারী তথা মাতৃজাতির প্রতীক। সনাতন ধর্মানুসারে যিনিই ব্রহ্ম, তিনিই শক্তি। দুর্গাপূজা মূলত শক্তির আরাধনা।

'দুর্গা' নামের অর্থ হল- 'দ' অক্ষরটি দৈত্য বিনাশ করে, উ-কার বিঘ্ননাশ করে, 'রেফ' রোগ নাশ করে, 'গ' অক্ষরটি পাপনাশক এবং 'অ'-কার ভয় শত্রু নাশক। দৈত্য, পাপ, বিঘ্ন, ভয় ও শত্রু বিনাশ করেন যিনি। যিনি দেবী অগম্যা বা বা যাকে পাওয়া যায় না, তিনিই দুর্গা। আবার চন্ডীর বর্ণনা অনুযায়ী দুর্গম নামের অসুর-কে বধ করার জন্য মায়ের নাম হয়েছে দুর্গা। বিভিন্ন নামে ও বিভিন্ন রুপে পুজিত হন মা দুর্গা। মহিষাসুরমর্দিণী, পার্বতী, উমা, কালিকা, গিরিজা, লক্ষী, চন্ডী, হৈমবতী, কমলা, শিবানী, কৌমারী, অম্বিকা, নামেও পরিচিত তিনি। 

Latest Videos

আরও পড়ুন- দুর্গাপূজাকে কেন বলা হয় অকালবোধন, জেনে নিন এর আসল কারণ

পুরাণ অনুযায়ী, মহিষাসুর নামের অসুর স্বর্গ থেকে দেবতাদের বিতাড়িত করে স্বর্গের অধিকার দাবী করলে দেবতারা ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন। ব্রহ্মা এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিষ্ণুর কাছে উপস্হিত হন। মহিষাসুর-কে একমাত্র নারী শক্তি দ্বারা বিনাশ করা সম্ভব ছিল তাই দেবতারা নিজেদের শক্তি দিয়ে তৈরি করলেন নারীমুর্তি। এরপর মহাদেবের তেজে মুখ, যমের তেজে চুল, বিষ্ণুর তেজে বাহু, ইন্দ্রের তেজে কটিদেশ, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল, সূর্যের তেজে পায়ের আঙুল, বসুদের তেজে হাতের আঙুল, কুবেরের তেজে নাসিকা, প্রজাপতির তেজে দাঁত, অগ্নির ত্রিনয়ন, সন্ধ্যার তেজে, ভুরু, ইত্যাদি অন্যান্য দেবতার তেজে সৃষ্টি হল দুর্গার। এছাড়া একে একে দেবতারা তাঁকে অস্ত্র ও বস্ত্র দান করলেন। মহাদেব দিলেন শূল, বিষ্ণু দিলেন চক্র, অগ্নি দিলেন শক্তি, বায়ু দিলেন ধনু, ইন্দ্র দিলেন বজ্র, যম দিলেন কালদন্ড, ব্রহ্মা দিলেন কমণ্ডলু, বিশ্বকর্মা দিলেন পরশু সহ বিভিন্ন অস্ত্র, হিমালয় দিলেন সিংহ, এইভাবে দেবতারা তাঁদের সাধ্যমত জিনিস দিয়ে সাজিয়ে দিলেন মা দুর্গা-কে। আর্বিভূত হলেন মা দুর্গা। 

আশ্বিন মাসের শুক্লাষষ্ঠী থেকে শুক্লাশুক্লানবমী পর্যন্ত দেবী দুর্গার পূজা হয়ে থাকে। দেবী দুর্গার সঙ্গে মর্ত্যে আসেন বিদ্যার দেবী সরস্বতী, ধন ও ঐশ্বর্য প্রদায়িনী দেবী লক্ষী, সিদ্ধিদাতা গনেশ, ও কার্তিক। ঊর্ধ্বে অবস্হান করেন দেবাদিদেব মহাদেব। শাস্ত্রমতে মহাষষ্ঠীর এই দিনটিতেই মা দূর্গার তাঁর সন্তানদের নিয়ে মর্তে আগমণ ঘটে। মহাসপ্তমীতে কলাবউ স্নানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় পুজোর। এরপর মহাষ্টমীতে মহাষ্টমীকল্পারম্ভের পূজা, সন্ধিপূজা শুরু হয়। নবমীতে মহানবমী বিহিত পূজা। বিজয়া দশমীতে বির্সজনের পূজা দিয়ে দশমীর পালা শেষ হয়। 

পৃথিবীতে আজ প্রতি নিয়ত শুভ-অশুভের লড়াই চলছে। তারই মধ্যে মা দুর্গার আগমনী বার্তা যেন শান্তির বানী নিয়ে আসে। মঙ্গলময়ী মা-এর কাছে আমাদের এই প্রার্থনা তিনি যেন ধরাধামে শান্তির বানী ছড়িয়ে দেন।

Share this article
click me!

Latest Videos

পুলিশি অভিযানে বড়সড় সাফল্য! উত্তেজনা রানাঘাটে, দেখুন | Ranaghat News Today
ইসকনের পাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কড়া বার্তা দিলেন বাংলাদেশকে? Narendra Modi
অসাধ্য সাধন! যথেষ্ট পরিকাঠামো না থাকার সত্ত্বেও ৮০০ গ্রামের শিশুকে বড় করে তুলল বারাসাত মেডিক্যাল
ফের ইডির ভয়াল থাবা! মধ্যমগ্রাম কাঁপলো ইডির দুঃসাহসিক অভিযানে, দেখুন | North 24 Parganas | ED Raid
'রোহিঙ্গারা মমতার ভোট ব্যাঙ্ক তাই তিনি বিএসএফকে জমি দিচ্ছে না' বিস্ফোরক মন্তব্য অগ্নিমিত্রার